সরকারি টিকাদান কর্মসূচি তে বক্তৃতা শেষে 'জয় বাংলা ' স্লোগান দেয়ায় বাগেরহাটের সিভিল সার্জন জালাল উদ্দীন আহমেদ কে ওএসডি করা হয়েছে।বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিক্ষোভের মুখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৷ শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের পতনের জন্য যারা রাস্তায় নেমেছিল তাদের অনেকের মুখে স্লোগান ছিলো ' ইনকিলাব জিন্দাবাদ'। বিভিন্ন ধরণের স্লোগান আমাদের মধ্যে টনিকের মতো কাজ করে, জোশ বাড়িয়ে দেয়। ঠিক একই ভাবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিকামী মানুষ কে অনুপ্রেরণা দিতে বাম পন্থী ছাত্র সংগঠন স্লোগান দেয় ' জয় বাংলা '। ধীরে ধীরে এই স্লোগান বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় স্লোগানে পরিণত হয়।
৷৷ বাংলাদেশের যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে তার পিছনে ছাত্রলীগের অবদান অপরিসীম। দুঃখের বিষয় ছাত্রলীগ এবং তার মাদার সংগঠন আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নামতে হয়। 'জয় বাংলা' স্লোগানটি জনমানুষের স্লোগান হিসাবে শুরুর দিকে উচ্চারিত হলেও সুচতুর ভাবে আওয়ামী লীগ এই স্লোগানটিকে দলীয় স্লোগানে রুপ দেয়।তারা স্লোগান দিতে শুরু করে ' জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু '। এতে বিরোধী দলের অনুসারীদের নিকট ' জয় বাংলা ' স্লোগান টি দলীয় স্লোগান হিসাবে অধিক পরিচিতি পায়। ক্ষমতার পালা বদলের সাথে স্লোগান ও পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ' জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ' শোনা যায় এবং বিএনপি ক্ষমতায় আসলে ' বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ' স্লোগানে চারদিক মুখরিত হয়ে উঠে।
৷ সাধারণ মানুষের মধ্যে স্লোগান নিয়ে আলোচনা এবং তর্ক -বিতর্ক তেমন হতে দেখা যায় নি। কারণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলেও মানুষের ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন হয় নি। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে যেখানে হিমশিম খেতে হয় সেখানে স্লোগান নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই।
৷ সময়ের পরিক্রমায় 'জয় বাংলা' স্লোগান টি এখন ভিন্ন অর্থ ধারণ করেছে। একজন সোশ্যাল ইনফ্লয়েন্সার খুব সম্ভবত ' জয় বাংলা' স্লোগান টি সবকিছু ধ্বংস করে দেয়া অর্থ বুঝাতে ব্যবহার করেছেন। মূলত আওয়ামী দুঃশাসনের আমলে ' জয় বাংলা ' স্লোগানকে নেগেটিভ অর্থ এ জনগণের কাছে উপস্থাপন করেছেন। সাধারণ মানুষ এখন ' জয় বাংলা ' স্লোগান দিলেই আপনাকে কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের দালাল হিসাবে ধরে নিতে পারে।
'জয় বাংলা ' স্লোগানের এমন করুণ পরিণতি তে চিল্লায়া কন - ইন্না-লিল্লাহ।