somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমলাদের হাতেই শুরু হয় শেখ হাসিনার প্রশাসনের পচন!

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সরকারি চাকুরির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। শেখ হাসিনার সরকার ৮ম পে স্কেল ঘোষণা করলে ইউনিভার্সিটি পাশ তরুণেরা উচ্চ বেতনের বেসরকারি চাকুরি ছেড়ে সরকারি চাকুরির পরীক্ষায় বসে। বিশেষ করে বিসিএসের প্রতি ক্রেজ পৌছায় অন্য লেভেলে। সরকারি চাকুরির সুযোগ সুবিধা ও সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করে ছাত্ররা সরকারি চাকুরি পাওয়ার জন্য রাতদিন পড়ার টেবিলে সময় ব্যয় করে। কিন্তু হাসিনা সরকার মেধাবী তরুণদের সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখানোর পিছনে ঘৃণ্য উদ্দেশ্য ছিলো। মেধাবীদের অঢেল সুযোগ সুবিধা ও দুর্নীতি করার সুযোগ করে দিলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে যাবে না এমন মনে করে সরকার তার পরিকল্পনা সাজায়। এই ভাবে প্রশাসনের তরুণ আমলারা দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তবে আমলাদের হাত ধরে প্রশাসন পঁচে যাওয়ার ঘটনা আরম্ভ হয় ১৯৯৬ সালের শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে।

১৯৯৬ সালে বিএনপির শাসনামলের শেষ দিকে আমলারাদের নিয়ে 'জনতার মঞ্চ ' গঠন করে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন সাবেক পরিকল্পনা সচিব ম খা আলমগীর। তার হাত ধরেই আমলারা রাজনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত হয়ে পড়েন। ম খা আলমগীর তার কাজের পুরস্কার স্বরুপ শেখ হাসিনা তাকে প্রতিমন্ত্রী বানান। এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় শেখ হাসিনা পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর মখা আলমগীর স্বরাস্ট্র মন্ত্রী হন। অন্যদিকে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও সিনিয়র সচিব এইচ টি ইমাম প্রশাসন কে পুরোপুরি রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা শুরু করেন। নীতিহীন এই আমলার অনুমোদন ছাড়া কোন পদন্নোতি, নতুন নিয়োগ ও বদলি হতো না। বিতর্কিত একাধিক বিসিএস পরীক্ষায় কট্টর ছাত্রলীগ করা প্রার্থীদের নিয়োগে জালিয়াতি ও প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি ছিল অনেকটা ওপেন সিক্রেট। তার ইশারা ছাড়া কোনো দপ্তরই নড়ত না। একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার ও প্রশাসনকে পুরোপুরি আওয়ামীকরণে তার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। এইচ টি ইমামের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তার অনুসারীরা নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি বাণিজ্যকে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে পরিণত করেছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের একচ্ছত্র আধিপত্য আর ক্ষমতার অপব্যবহার দেখে অন্য আমলারাও রাজনীতিতে জড়িয়ে নিজেদের আখের গোছাতে থাকেন। ভোটবিহীন হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর দাবিদার আমলারা নিজেদের মতো করেই প্রশাসনে দাপট দেখাতে থাকেন। কর্মকর্তারা নিজেদের ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী কিংবা আওয়ামী পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য দাবি করে অবৈধভাবে নানা সুযোগ-সুবিধা নিতে থাকেন।

২০১৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্তির পর হাসিনাকে ক্ষমতায় বসাতে যে কজন আমলা ষড়যন্ত্র করেন, তাদের গুরু ছিলেন এইচ টি ইমাম। মূলত তার পরামর্শেই আমলারা পরপর তিনটি ভোটারবিহীন একপক্ষীয় নির্বাচন করেন। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া হাসিনাকে বারবার ক্ষমতায় বসানোর দাবিদার কর্মকর্তারা ব্যাপক বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তাদের কেউ কেউ নৌকার মনোনয়নে ভোটবিহীন নির্বাচনে এমপি হওয়ার বাসনা জানান। শেখ হাসিনা তাদের সে বাসনা অপূর্ণ রাখেননি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে সাবেক সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন বুলবুলকে এমপি বানান হাসিনা। ২০২৩ সালে নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান। সাজ্জাদুল হাসানের বড় ভাই ওবায়দুল হাসানকে দেশের প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

আমলাদের একটি অংশ যদি একচেটিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন, তখন স্বাভাবিকভাবেই অন্যরা আর বসে থাকেন না। যে যার মতো করেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এভাবে মূলত প্রশাসন নষ্ট হয়েছে। কারণ প্রশাসনের শীর্ষ পদের আমলারা সৎ থাকতে পারলে তারা শুদ্ধতার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। আর নিজেরাই যদি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিতে জড়ান তাহলে অন্যদের সৎ থাকা, এটা বলার নৈতিক শক্তি থাকে না।

কার্টেসী : কালবেলা নিউজ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×