


গতকাল সচিবালয়ে আগুন লেগেছে। বিভিন্ন পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছেন। বাংলাদেশের যারা মোটামুটি শিক্ষিত এবং ছাত্র তাদের সকলের অভিযোগের তীর আমলাদের দিকে! আওয়ামী লীগের আমলারা স্যাবোটাজ করে দুর্নীতির সকল গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট করেছেন। তাছাড়া বিগত এক সপ্তাহ ধরে চলমান প্রশাসন ক্যাডার দের জনপ্রশাসন সংস্কারের বিরুদ্ধে ক্ষোভকে দায়ী করছেন অনেকে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতার দায়িত্ব নেন ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। যেহেতু এটি কোন রাজনৈতিক সরকার নয় সেহেতু তাদের পক্ষে প্রশাসনিক কাজে সহায়তা পাওয়ার জন্য আমলাদের সাথে সুসম্পর্ক করার প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদে সিনিয়র সচিব আলী ইমাম মজুমদার কে নেয়া হয়। কিন্তু বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের সময় আলী ইমাম মজুমদারের ভূমিকা নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। আলী ইমাম কে নিয়োগ দেয়ার পর রাজনৈতিক দল হতে সচেতন মহল তীব্র সমালোচনা করেন। সমস্যা আরো জটিল হয় যখন সারাদেশে নতুন ডিসি নিয়োগ নিয়ে পত্রিকায় বিরাট লেনদেনের খবর প্রকাশিত হয়। রহস্যজনক ব্যাপার হলো সরকারের পক্ষ হতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও আজও এর কোন রিপোর্ট প্রকাশ হতে দেখা যায় নি। এসব লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ডিসিরা আবার সরকারের সংস্কার কমিটির বিরুদ্ধে সভা-সেমিনার আয়োজন করে সরকার কে আল্টিমেটাম দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে কি হয়েছে প্রক্সি হিসাবে সরকারকে বিপদে ফেলতে আওয়ামী লীগের আমলারাই যথেষ্ট ।
দীর্ঘদিন বিএনপি- জামাত ক্ষমতার বাইরে। বিএনপির হাজারো নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বর্তমান অরাজনৈতিক সরকারের সময় অধিকাংশ এসব ভুয়া মামলা থেকে অব্যহতি পাওয়ার জন্য , তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার ২১শে আগস্ট গ্রেনেড মামলা সহ আরো মামলা থেকে মুক্ত করার জন্য সরকারের উপর প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি এটর্নী জেনারেল নিয়োগ দেন তাদের সমর্থিত আসাদুজ্জামান মিয়া কে। এছাড়া আদালতে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রভাব খাটানো হয়েছে। যার ফলশ্রতিতে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকে সবাই অব্যহিত পায় যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ন্যায় বিচারের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার দলের সদস্যদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার সঠিক বিচার না হওয়া মূলত দেশের বিচার ব্যবস্থার দূর্বলতা। বিরোধী দলগুলো দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার চেয়ে নিজেদের আখের গোছাতে বেশি ব্যস্ত বলে আবারো প্রমাণিত।
আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালের চীফ প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয়া হয়েছে জামাত সমর্থিত তাজুল ইসলাম কে। জামাত মূলত তাদের শীর্ষ নেতাদের বিচারের প্রতিশোধ নিতে তাজুল ইসলাম কে নিয়োগে সুপারিশ করে। উদ্দেশ্য শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চয়তা করা। তাজুল ইসলাম ইতিপূর্বে জামাতের শীর্ষ নেতাদের পক্ষে লড়ছিলেন আদালতে। এখনো বিচারাধীন অনেক মামলা তাজুল ইসলাম ডিল করছেন। এতে ন্যায় বিচার আবার ভুলুন্ঠিত হওয়ার পথে। যে ট্রাইবুনালে জামাতের নেতাদের পক্ষে তাজুল ইসলাম লড়েছেন সে একই আদালতে এখন তিনি চীফ প্রসিকিউটর। আওয়ামী লীগেরা নেতারা ন্যায় বিচার পাবেন কি না এই আশঙ্কা সারাবিশ্বব্যাপী আলোচিত হবে । অথচ আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের জন্য নয় সাধারণ মানুষের জন্য অনেক জরুরি। সেখানেও বিরোধী পক্ষ দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে আমলাদের কাজে লাগাচ্ছে।
যখন রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় থাকে না তখন তাদের হয়ে কাজ করেন আমলারা। সাধারণ মানুষ আমলাদের ঘৃণা করে কিন্তু সরকারি চাকুরি পছন্দ করেন। তাই যখন নিজেরা আমলা হয়ে যান তখন সব কিছু ভুলে যান। এভাবে দেশ চলছে মূলত ছায়া সরকার তথা আমলাদের দ্বারা। জনগণের জন্য কোথাও কেউ নেই।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

