
জুলাই অভ্যুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্বে দেয়া অরাজনৈতিক সংগঠন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা বর্তমানে রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। কিন্তু সেজন্য একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম গঠন জরুরি ছিলো। তাই নাগরিক কমিটি নামে নতুন একটি সংগঠন আত্নপ্রকাশ করে। ধারণা করা হয়েছিলো ইহাই নতুন রাজনৈতিক দল হবে। কিন্তু পরবর্তীতে ঘোষণা আসে বৈষম্য বিরোধী ও নাগরিক কমিটির মধ্যে থেকে যারা রাজনীতি করতে আগ্রহী তাদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হবে। ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি বা শেষের দিকে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দলটি আত্নপ্রকাশ করবে।
ইন্টেরিম সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তারুণ্য নির্ভর রাজনৈতিক দলটি গঠিত হচ্ছে। সরকারে থাকা তিনজন সমন্বয়ক উপদেষ্টারা যোগ দিতে পারেন নতুন রাজনৈতিক সংগঠনে। এছাড়া তরুণেরা রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। আমার বাংলাদেশ (AB) পার্টি নামে জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করা সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক দল তরুণদের দল গড়তে সহায়তা করছে। তরুনদের রাজনৈতিক দলটি কেমন মতাদর্শের হবে তার জন্য বিদেশি কয়েকটি দেশের কতিপয় রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
তরুণেরা মধ্যম-ডানপন্থী মতাদর্শের রাজনৈতিক দল গঠনের প্রতি আগ্রহ জানিয়েছেন। তারা পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ, তিউনিসিয়ার আন-নাহদা( এন্নাহেদা), তুরস্কের একেপি( এরদোয়ান), মালয়শিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ১/২ টি রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করছে। আবার ভারতের আম-আদমি পার্টির গঠনতন্ত্র নিয়েও আলোচনা চলছে । রক্ষণশীল গণতন্ত্র, ইসলামিক গণতন্ত্র ও মধ্যম- ডানপন্থার মিশেলে তরুণেরা নতুন রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র তৈরি করতে পারেন। নারী ও পুরুষ সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব রাখার ব্যাপারে তরুণদের রাজনৈতিক দলটি কাজ করে যাচ্ছে।
নাগরিক কমিটি ও বৈবিছা হতে পদত্যাগ করা সদস্যরা নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারবেন। সারজিস আলম, হান্নান মাসউদ, আসিফ মাহমুদ নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে যাচ্ছেন মোটামুটি নিশ্চিত। তবে নাগরিক কমিটির নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ না দেওয়া উত্তম। কারণ ইতিমধ্যে সে বাংলাদেশের প্রচলিত সব রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে যে হারে বিষোদগার করেছে তাতে উহার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে । এমনকি টিভি চ্যানেল গুলো তাকে সাক্ষাৎকারে আমন্ত্রণ জানাতে ইতস্ততবোধ করছে।
জামায়াতে ইসলামীর সাথে তরুণদের রাজনৈতিক দলটি ভবিষ্যতে জোট গঠন করে কিনা তাই দেখবার বিষয় । তবে জামায়াত নিবন্ধন হারানোর পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রতি সচেষ্ট ছিলো । বিডিপি( বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি) নামে জামায়াতের একটি গণতান্ত্রিক প্লাটফর্ম কয়েকদিন আগে নিবন্ধন পেয়েছে । এসব ছোট ছোট ক্লাস্টার রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্দেশ্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মতো ১২/১৩ টি রাজনৈতিক দলের সাথে জোট গঠন করে নিজেদের রাজনৈতিক মাঠে শক্তিমত্তা প্রদর্শন করা।
দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা আটান্নটি। নির্বাচনের পূর্বে আরো কিছু কিংস পার্টি আত্নপ্রকাশ করতে পারে। কিন্তু দেশের রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন কি সাধিত হবে ? নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে । হয়তো মানুষ শেষ পর্যন্ত উপায়ন্তর না দেখে পুরাতন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতি আস্থা রাখবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


