
এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা নাহিদ ইসলাম। ইহা তো বাঙালির প্রাণের কথা ! ভারত ও পাকিস্তান আমাদের কে ছোট ভাই মনে করে কুবুদ্ধি দিয়ে বিপথগামী করতে চায়। ভারতের প্রেস্ক্রিপশনে বাঙালির একমাত্র দেশীয় দল আওয়ামী লীগ আজ মৃতপ্রায়।আরেকদল আছে যারা পাকি প্রেমী হওয়ায় আজো ক্ষমতায় যেতে পারেনি। দেশের সনাতনী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তারা দেশে এখনো তাদের পাক প্রেমের কথা মানুষ কে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয়। ভারতের দাদারা বাংলাদেশের উন্নতি দেখলে তাদের বুকে ব্যথা হয়। একটি স্বাধীন দেশের মানুষ তার নিজের ভাষা সংস্কৃতি স্বাধীনভাবে চর্চা করছে কিন্তু দাদারা পারছে না। এই ব্যথা ভুলে যাওয়ার নয়। অন্যদিকে পাকিস্তান চায় বাংলাদেশ কে ব্যবহার করে ভারতের ডাউনফল! তাদের এমন চাওয়ায় আখেরে ক্ষতি হবে বাংলাদেশের। দেশের যেসব রাজনৈতিক দল ভারত-পাকিস্তানের দালালী করে তাদের কে লাল কার্ড দেখাতে হবে। আমাদের মাতৃভূমি আমরা নিজের মতো গড়িয়া লইবো।
জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ পদগুলোতে বাংলাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার সম্ভব হয় নি। মোটা দাগে সবাই ঢাবির ও একই ধর্মের অনুসারী। অর্থাৎ দলে বৈচিত্র্য কম। জুলাই আহতদের প্রতিনিধিত্ব নেই । তারা আবার ইন্টেরিম সরকার থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পাচ্ছে। কিন্তু উপদেষ্টা রেজোয়ানা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো কিংস পার্টি নয়। অন্যদিকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম এখনো নাগরিক জাতীয় পার্টির সাথে জড়িত হয়েও এখনো পদত্যাগ করে নাই। ইন্টেরিম সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সব রাজনৈতিক দলগুলো সন্দেহ করছে । এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় কিনা তা নিয়েও জনমনে আশঙ্কা রয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ পদগুলো নিয়ে বেশ কয়দিন গ্রুপিং চলছিল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিলো মূলত বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের মিলনস্থল। এখানে এক্স শিবির যেমন রয়েছে তেমনি বামপন্থী ও পালনবাদে বিশ্বাসী মানুষজন রয়েছে। সবাই নাগরিক জাতীয় পার্টির শীর্ষ পদগুলোতে আধিপত্য ধরে রাখতে চেয়েছিলো। বেশি ঝামেলা করেছিলো এক্স শিবির বর্গ ! বনিবনা না হওয়ায় অন্তত দুইজন নাগরিক জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন না এক্স শিবির বর্গের ! ঢাবির সাবেক শিবিরের দুইজন সভাপতি জুনায়েদ ও রিফাত অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা ছিলেন বৈবিছা ও নাগরিক কমিটিতে। তাদের আকস্মিক পদত্যাগ সবাই কে অবাক করেছে। কারণ নতুন গঠিত রাজনৈতিক দলটির শীর্ষ পদে থাকার জন্য এক্স শিবির বর্গ এই দুইজনের নাম প্রস্তাব করেছিলো। আরো অবাক করার বিষয় হচ্ছে জুনায়েদ ও রিফাত বিএনপি জোটের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে চীন সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে তাদের নাগরিক কমিটির নেতা হিসাবে সম্মোধন করা হয়েছে। কিন্তু নাগরিক কমিটি দাবী করেছে তাদের দলের কেউ চীন সফরের জন্য আমন্ত্রণ পায়নি। জুনায়েদ ও রিফাতের আমন্ত্রণ পাওয়ার ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না। তাহলে চায়না জুনায়েদ ও রিফাতের সাথে কার মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিলো?
ইন্টেরিম সরকার গত ছয়মাসে পাকিস্তানের প্রতি বেশি ঝুকে পড়েছে। বিষয়টি শুধু ব্যবসা বাণিজ্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি। সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে সরকার বেশি মনোযোগ দিয়েছে। পাকিস্তানের শিল্পীরা একে একে বিনা বাধায় কনসার্ট করে যাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশের শিল্পীরা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত কনসার্ট স্থগিত করা হয়েছে। ইহা ভালো লক্ষণ নয়। দেশের পরিস্থিতি খারাপ এই অজুহাতে দেখালে তো দেশি বিদেশি সকল কনসার্ট বন্ধ থাকার কথা ছিলো। শুধু বাংলাদেশি শিল্পীদের কনসার্ট বন্ধ কেন ? পাকিস্তানি অনেক শিল্পী বাংলাদেশে এসে ভারতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। তাহলে ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে আর দেশ কই মুক্ত হইলো ?
সম্প্রতি ভারতের সেনাপ্রধান একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে দাবী করেছেন পাকিস্তানের আইএসআই কর্মকর্তারা বাংলাদেশের চিকেন নেক অংশে সফর করেছেন । আইএসআই কর্মকর্তাদের নাকি ঘন ঘন রংপুর ও দিনাজপুর যেতে দেখা গিয়েছে। ভারতের এমন দাবী এই প্রথম নয়। গত ২১ শে জানুয়ারি ভারতের গোদি মিডিয়া দাবী করেছিলো পাকিস্তানের আইএসআই প্রধান বাংলাদেশ সফরে এসেছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতের এই বক্তব্যকে অসত্য বলে খারিজ করে দেয়া হয়। ভারতের গোদি মিডিয়া শেখ হাসিনার পালানোর পর থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আদা জল খেয়ে প্রোপাগাণ্ডা চালাতে মাঠে নেমেছে। তাই মিডিয়ার প্রচারিত ডিজইনফোরমেশন নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
ভারতের সেনাপ্রধান যখন একই দাবী করেছেন তখন ইহাকে স্রেফ প্রোপাগাণ্ডা হিসাবে উড়িয়ে দেয়া ঠিক হবে না। ভারতের সেনাপ্রধানের বক্তব্যের প্রতিবাদ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কাউকে করতে দেখলাম না। সবচেয়ে ভালো সুযোগ ছিলো বাংলাদেশ সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামানের রাওয়া ক্লাবের বক্তব্যের সময় এই বিষয় নিয়ে কথা বলার । ওয়াকার উজ জামান বরং সবাইকে দেশের সাবভৌমত্ব বিপন্ন যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেছেন। অনেকেই সেনাপ্রধানের এমন বক্তব্যের পিছনে কি কারণ থাকতে পারে তা বুঝতে পারছেন না ।
পাকিস্তানের হাইকমিশনার বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হরহামেশাই যাচ্ছেন। সর্বশেষ তাকে রংপুরে একটি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিলো। একই সময়ে আবার ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল পশ্চিম বঙ্গে এসেছিলেন দিনাজপুর ও রংপুর সীমান্তের নিকটে । অজিত দোভাল অথবা অন্য কোনো ভারতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা যখন বাংলাদেশে আসেন তখন সেগুলো দেশি-বিদেশি ইনফ্লুয়েঞ্জাদের ভিউ কামানোর ব্যবসায় রসদ যোগায়। জুলাই অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ানোর ঘটনায় তারা কেন নিরব ?
শুধু মুখে মুখে নয় অন্তর থেকে বিশ্বাস করতে হবে ভারত-পাকিস্তান প্রভাব মুক্ত বাংলাদেশ চাই। আরো ভালো হবে আমেরিকা, চীন ও রাশিয়ার প্রভাবমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলায় মনোযোগ দিলে । বিদেশি প্রেস্ক্রিপশনে আর কতদিন দেশের মানুষ পুতুল নাচ দেখবে ?
নতুন দলের জন্য শুভকামনা !
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


