
ইন্টেরিম সরকার ছয়মাস পার হয়ে সপ্তম মাসে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। সরকারের দেশ চালানোর ক্রিয়াকর্মে যেমন ভালো দিক রয়েছে ঠিক মন্দ ঘটনা ঘটেছে প্রচুর। দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ইন্টেরিম সরকার যেহেতু নির্বাচিত সরকার নয় তাই তাদের দেশ পরিচালনার সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে কম আলোকপাত করা হবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান স্বজনপ্রীতি এবং করাপশন করে ধ্বংস করা হয়েছে সেগুলো পুনরূদ্ধার করার প্রধান দায়িত্ব সরকারের। দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা যাতে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে তার জন্য সরকার বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এছাড়া সংস্কার কমিশন হতে প্রাপ্ত সুপারিশে যাতে সবাই একমত হয় তার জন্য ঐক্যমত্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে।
সংস্কার কমিশনগুলোকে ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সুপারিশ প্রস্তাব জমা দেয়ার কথা থাকলেও পুনরায় সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে যাতে ধীরে সুস্থে হেলে দুলে কমিশন গুলো তাদের কাজ করে। যেসব সংস্কার কমিশন সুপারিশ প্রস্তাব জমা দিয়েছে সেগুলো নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠকের নাম নিশানা দেখা যাচ্ছে না। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের একটি সর্বদলীয় বৈঠকের পর আর কোনো খবর নেই। শোনা যাচ্ছে মার্চ মাসে আবার বৈঠক ডাকা হবে। সরকারের সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম গতিশীল করতে তেমন আগ্রহ না দেখা গেলেও 'কিংস পার্টি' গঠনে তাদের অতিশয় ব্যস্ত দেখা যাচ্ছে।
ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ইন্টেরিম সরকার দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। প্রথম তিনমাসে যত অভিযান সরকার পরিচালনা করেছে সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। এ বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন দেয়ার ব্যাপারে ক্রমশ চাপ বাড়ছে। সেজন্য আইনশৃংখলা পরিস্থিতি সরকার কে অতি সত্ত্বর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। সরকার আসলে সংস্কারের প্রতি তেমন কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে যে সময়টিতে সরকারের বৈঠক করার কথাবার্তা চলছিল তখনই দেশের আইন পরিস্থিতি অবনতি ঘটায় সরকার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সংস্কার ও নির্বাচন কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। জাতীয় নির্বাচন না স্থানীয় নির্বাচন আগে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের সাথে দ্রুত বৈঠক করার কথা থাকলেও তা সম্ভবপর হয় নাই। সরকারি চাকুরি থেকে অসংখ্য লোক ওএসডি ও বদলী করার ফলে একরকম ঝিমিয়ে পড়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
ইন্টেরিম সরকার মূলত ২/৪/৫ বছর ক্ষমতায় থাকার প্লান থাকলেও দেশি- বিদেশি চাপে এখন দ্রুত নির্বাচন করার কথা বলছে। মাঝে আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ করার জন্য তোড়জোড় শুরু করা হলেও জাতিসংঘের সুপারিশ ও সেনাপ্রধানের ইনক্লুসিভ ইলেকশনের উপর জোর দেয়ার প্রেক্ষিতে বিরোধী পক্ষকে আর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবী তুলতে দেখা যাচ্ছে না। সরকার আসলে নিজে রান করছে না ; কারো প্রেসক্রিপশন ফলো করছে। তাই সিগন্যাল বা বার্তা ব্যতীত সরকার এক পা সামনে এগুতে পারছে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২৫ ভোর ৬:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


