
জুলাই অভ্যুত্থানের সূত্রপাত হয়েছিলো মূলত সরকারি চাকুরিতে কোটা প্রথা বাতিলের উদ্দেশ্যে। একটি বিশাল অংশের ছাত্রসমাজের অন্য কোনো এজেন্ডা ছিলো না। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বারবার মেধাবী ছাত্ররা সরকারি চাকুরি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলো। ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনের সূচনা হয়। ছাত্রলীগের দানবদের লেলিয়ে দেয়া হয় সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতন করার জন্য। একই ঘটনা ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ও ঘটে। অত্যাচারের মাত্রা যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি হওয়ায় সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে এসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটায়।
সম্প্রতি নতুন করে কোটা প্রথা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়েছে। দুঃখের বিষয় যে সরকার দুই হাজার মানুষের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে তারাই জুলাই কোটা নামে নতুন কোটা চালুর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে খুব সম্ভবত 'জুলাই কোটা' নামে নতুন কোটা চালুর চিন্তা ভাবনা চলছে। কোটা আন্দোলনকারীরা যেসব সুযোগ পেতে পারেন :
১- এককালীন ত্রিশ লাখ টাকা।
২- মাসিক ভাতা বিশ হাজার টাকা।
৩- সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫ শতাংশ কোটা।
৪- সরকারি চাকুরিতে অগ্রাধিকার।
জুলাই কোটা এদেশের মানুষের দেশপ্রেমকে টাকায় কিংবা সুবিধায় বিক্রি করার সামিল হবে। যারা নিহত হয়েছেন কিংবা আহত হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে পারেন। সেই ক্ষতিপূরণ মাসিক মুনাফা হিসেবেও দিতে পারেন। কোটায় না। কিন্তু কোটা যদি দেনই তাহলে আগের কোটাগুলো কী ক্ষতি করেছিল ? জনতা থেকে বিচ্ছিন্ন হইয়া যাইয়েন না মহাশয় ! কোটা নামক প্রহসন থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। শুধু ৩-৪ হাজার মানুষকে জুলাই কোটা দিচ্ছেন কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানে লক্ষ লক্ষ মানুষের অংশগ্রহণ ছিলো। তারা এক সময় এই কোটার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চুক্তির মাধ্যমে ছয়মাসের জন্য প্রথম শ্রেণীর একটি জবে নিয়োগ পেয়েছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় সমন্বয়কদের পৃষ্ঠপোষক একজন ব্যক্তি। তথ্য অফিসার হিসাবে রাবির উপাচার্য কতৃক এডহক হিসাবে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনি। প্রথম শ্রেণীর একটি চাকুরিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়াই ' সমন্বয়ক কোটায়' নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । শিক্ষার্থীরা দাবী করেছে এই নিয়োগ তদন্ত করে দেখা উচিত। এই দাবীর সাথে একাত্মতা জানাই কারণ বিগত সাতমাসে সরকারি চাকুরির পরীক্ষা হচ্ছে না বললেই চলে। পূর্বে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেত বিগত সরকারের মদদপুষ্ট লোকজন। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছিলো। কিন্তু একই ঘটনা যদি জনগণের সরকারের সময় ঘটে থাকে তবে দেশে ভবিষ্যতে আর কোন দিন ছাত্র-জনতা কারো ডাকে রাস্তায় নামবে না।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


