রমজানের পবিত্রতা উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে, যা যুদ্ধবিরতি চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। এই হামলায় গাজার ডি-ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী ইসাম দা'আলিসসহ চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ শতাধিক মানুষ। গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ আটকে আছেন, যাদের উদ্ধার কার্যক্রম চলমান।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দাবি অনুযায়ী, এই হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা। মঙ্গলবার ভোরের এই হামলায় গাজার 'প্রধানমন্ত্রী' ইসাম দা'আলিসসহ আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিহত হন। ইসাম দা'আলিস গাজার সরকারি কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, যা প্রধানমন্ত্রীর সমপর্যায়ের পদ। তার দায়িত্ব ছিল হামাস শাসনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা এবং সংগঠনটির বিভিন্ন শাখার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।
ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দা কুড়ালেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দেখা গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানালেও যুক্তরাষ্ট্র কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকেও তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
ইসরায়েলের বর্বরোচিত এই হামলায় গাজার বহু ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। শিশুরা তাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়ছে। আহতদের সঠিক চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। মানবিক সহায়তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
রমজানের মতো পবিত্র মাসে গাজা উপত্যকায় এমন হামলা মুসলিম বিশ্বের জন্য গভীর বেদনার কারণ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরবতা এবং মুসলিম বিশ্বের উদাসীনতা এক গভীর সংকটের ইঙ্গিত দেয়। প্রশ্ন থেকে যায়—গাজার এই আর্তনাদ কি কেউ শুনবে, নাকি এই রক্তক্ষয়ী ঘটনা কেবল ইতিহাসের পাতায় আরেকটি কলঙ্ক হয়ে থাকবে?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৫৯