

গতবছরের জুন মাস ছিলো অতি ঘটনাবহুল। একের পর চমকপ্রদ ঘটনা ঘটছিলো দেশের ভিতর। সামুর সবচাইতে বিতর্কিত ব্লগার তখন সোনাগাজী নিকে লিখতেন। এখন তিনি অন্য নামে লিখেন। যাই হোক, গতবছরের জুন মাসের তুলনায় এই বছরের জুন মাস খুবই সাদামাটা ও বোরিং ভাবে কাটছে। ড. ইউনূস ও দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সাপ-লুডু খেলা চলছে। আল্লাহর নামে একদল রগ কাটা শুরু করেছে। উহাদের আবার কসাই হিসাবে অনেকে অনলাইন থেকে হায়ার করতে চাইছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে কোনো গোরুর মালিক গিফট করতে পারছেন না কারণ তিনি ভারতে পলাতক আছেন। উহার শূণ্যস্থান পূরণ করতে এগিয়ে এসেছেন খালেদা জিয়া। এক গোরু ব্যবসায়ী খালেদা জিয়াকে 'কালা মানিক' নামে ষাড় গিফট করতে চান। খালেদা জিয়া উনাকে মানা করে দিয়েছেন। এবারের কোনো ঘটনাই গতবছরের ঘটনার তুলনায় এতটা আপিল সৃষ্টি করতে পারছে না। গতবছর আসলে কি ঘটেছিলো পুরো জুন মাস ধরে?
এনবিআরের কর্মকর্তা মতিউরের ছাগল কান্ড : কোনো এক সন্ধ্যায় টিভি দেখছিলাম বাসায় বসে। হটাৎ দেখি সাদেক এগ্রোতে এক ছেলে বিশাল ছাগল সাথে নিয়ে ছবি তুলছে। ছাগলের দাম ছিলো প্রায় পনেরো লক্ষ টাকা। এই ছাগলের কি এমন গুণাগুণ তা জানতে অধীর অয়াগ্রহে পুরো সংবাদ দেখার চেষ্টা করলাম। ছাগলটি উচ্চ বংশীয় ছাগল। উহা আপেল, দুধ ও কলা ছাড়া কিছুই গ্রহণ করে না। যে ছেলে ছাগলের সাথে ছবি তুলেছে সে এগারো লাখ পর্যন্ত দাম করেছে ছাগলটির। যখন টিভি দেখি তখন হাতে আমার মোবাইলও থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্চবংশীয় ছাগল নিয়ে কোনো এক্সট্রা ইনফো পাই কিনা দেখার চেষ্টা করলাম। ঢাবি ছাত্র সায়েদ আব্দুল্লাহ নাকি খুজে বের করেছে যে ছেলে এই ছাগলের সাথে সেলফি তুলেছে উহার বাপ এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর। কিভাবে তিনি এত বড়ো ছাগল কিনতে পারেন, আয়ের উৎস কোথায় এসব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সায়েদ আব্দুল্লাহ । এই ঘটনা থেকে ইতিহাস বদলানো শুরু !
রাসেল ভাইপার: এই সাপের হটাৎ করে আনাগোনা বেড়ে যায়। গ্রামে গঞ্জে কৃষকেরা সমানে রাসেল ভাইপার মারা শুরু করে। যারা সব কিছুতে ভারতের ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুজে পান উহারা দাবী করে ভারত নাকি বর্ডারে ছেড়ে দিয়েছে রাসেল ভাইপার। যারা সচেতন ব্যক্তি তারা বরাবর বলে আসছিলেন মিডিয়ার ডাইভারশন টেকনিক মনোযোগ সরানোর। কারণ সে সময় আম্লিক সরকার বিভিন্ন ঘটনার কারণে বেকায়দায় পড়েছিলো।
আবেদ আলীর গ্যাং : সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে এপ্রিল মাসে থেকেই তুষের আগুন জ্বলছিল। কারণ ৪৬ তম বিসিএস প্রিলি প্রশ্ন অত্যন্ত নিম্নমানের ও ভুলে ভরা ছিলো। তার জন্য অনেকের রেজাল্ট আসেনি। এদিকে চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের সাংবাদিক ইমরান তার অনুসন্ধানে দেখিয়েছে ৪৬ তম বিসিএস প্রিলি, রেলের সহকারি প্রকৌশলী সহ প্রায় শতাধিক প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে যার নেতৃত্বে ছিলো আবেদ আলী সহ আরো নয়জন। ২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত সমানে তারা প্রশ্ন ফাঁস করেছে। অন্তত শতাধিক ব্যক্তি ফাঁস হওয়া প্রশ্ন মুখস্ত করে ছক্কা মেরেছে। যারা রাতদিন পড়ার টেবিলে বসে থাকে তাদের হাতে হ্যারিকেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে যা সবশেষ সরকার পতনের আন্দোলনে বিরাট ফুয়েল হিসাবে কাজ করে। আবেদ আলীর ছেলে আবার ছাত্রলীগের নেতা। মানুষের মধ্যে দেদারসে কুরবানির মাংস বিলান। এসব ভিডিও ভাইরাল হলে সাধারণ মানুষও ক্ষেপে যায়।
উপরের ঘটনাগুলো শেখ হাসিনা ও আম্লিক সাম্রাজ্যের পতনের ইন্ডিকেটর ছিলো। সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তখন বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছিল। একদিকে মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়েই যাচ্ছিলো অন্যদিকে আম্লিক সরকার ও উহার ল্যাস্পেন্সারদের অসৎ উপায়ে বিলাসী জীবনযাপন দেখে সবাই মন মনে পতন কামনা করেছিলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



