somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারত চায় জাকির নায়েককে, বাংলাদেশ চায় শেখ হাসিনাকে: উভয়েই ওয়ান্টেড !

০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় একটি দাতব্য অনুষ্ঠান হবে। সেখানে মালয়েশিয়া থেকে আসবেন ডা. জাকির নায়েক নামে একজন ধর্মীয় বক্তা। তিনি দুই দিনের সফরে আসছেন। খবরটা শোনার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একটি সংবাদ সম্মেলনে বললেন, জাকির নায়েক "পলাতক" এবং ভারতে "ওয়ান্টেড"। তার বিরুদ্ধে ভারতে মানি লন্ডারিং, ঘৃণা ছড়ানো এবং সন্ত্রাসবাদে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালের ঢাকা হলি আর্টিজান হামলার পর তার সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাজ্য ও কানাডাও তাকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। জয়সওয়াল জানালেন, তিনি যেখানেই যান, সংশ্লিষ্ট দেশ যেন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয় এবং ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ দূর করে।

এদিকে জুলাই মাসে বাংলাদেশে একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। গুলিতে শত শত মানুষ মারা গেল। অবশেষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে চলে যান। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা রয়েছে বাংলাদেশে। পনেরো বছরের শাসনামলে হাজার হাজার মানুষ হত্যা, গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ সরকার তাকে ফেরত চাইছে। কিন্তু ভারত এই বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব। একজন ধর্মপ্রচারকের বিষয়ে যে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, একজন গণহত্যার অভিযুক্ত সাবেক সরকার প্রধানের বিষয়ে সেই উদ্বেগ একেবারেই অনুপস্থিত।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত ২৮ অক্টোবর জানালেন, জাকির নায়েকের সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত নয়। তিনি বললেন, "জাকির নায়েককে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে বলে আমি জানি না। আমি এরকম কিছু শুনিনি।" একটি দেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানেন না যে একজন আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত ব্যক্তি তার দেশে আসছেন কিনা : এটা বেশ চমকপ্রদ তথ্য। হয়তো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় কিছু ফাঁক রয়ে গেছে। অথবা এটি একটি কৌশলী "না জানার" ভান হতে পারে, যা কূটনীতিতে বেশ কার্যকর একটি পদ্ধতি।

তবে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম একটি বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে জাকির নায়েক নিয়ে যা বলা হয়েছে তা তাদের নজরে এসেছে। তিনি আরও বলেন, "আমরাও বিশ্বাস করি যে, কোনো দেশের অন্য দেশের অভিযুক্ত বা পলাতক ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।" মন্তব্যটি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত, কিন্তু এর মধ্যে একটি তীক্ষ্ণ পরোক্ষ ইঙ্গিত রয়েছে। এটি বুঝতে হলে খুব বেশি বুদ্ধির প্রয়োজন নেই : শুধু একটু মনোযোগ দিলেই চলে।

জাকির নায়েক একজন ধর্মীয় বক্তা, যিনি মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি নিয়ে থাকেন। তার বিরুদ্ধে ভারত, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় কিছু অভিযোগ আছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনা পনেরো বছরেরও বেশি সময় একটি দেশ শাসন করেছেন এবং তার শাসনামলে হাজার হাজার মানুষের হত্যা, গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি জনগণের বিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে গেছেন। একজনের বিরুদ্ধে কথায় উস্কানির অভিযোগ, অন্যজনের বিরুদ্ধে হাজার মানুষ হত্যার অভিযোগ।

একটি দেশ অন্য দেশের কাছে "পলাতক" ব্যক্তির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে, অথচ নিজে আরেকটি "পলাতক" ব্যক্তিকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। এই দৃশ্যপটে কে "পলাতক" আর কে "অতিথি" : সেটা নির্ভর করে কার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন তার উপর। ভারত জাকির নায়েককে "পলাতক" বলছে, বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে "পলাতক" বলছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শব্দের অর্থ পরিবর্তনশীল : এটা নির্ভর করে কার মুখ থেকে বের হচ্ছে তার উপর।

মুল সংবাদ : ভারত চায় জাকির নায়েককে, বাংলাদেশ চায় হাসিনাকে: উভয়েই ওয়ান্টেড- বার্তাবাজার/এমএইচ
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯
১৮টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×