নারিয়া গ্রামে ২৬ জনকে হত্যা
লুৎফুর রহমান
মে মাসের পাঁচ তারিখে কামিনীদের বাড়ি
নারিয়া গ্রামে আসে তখন হানাদারের গাড়ি
গাঁয়ের মানুষ চারিদিকে পালিয়ে যাবার কালে
ফিরে আসে বাঁচার আশায় রাজাকারের চালে
আলফু,তোরাব,বাদশা,আছির,ইছব ও আক্তারে
মিছে কথায় করলো জড়ো ঘৃণা জানাই লাখ তারে
সবাই জড়ো হবার পরে আওয়াজ উঠে "ফায়ার''
ছাব্বিশজনা হলেন শহিদ দুঃখ বুঝো ভায়ার?
শহিদ হলেন কামিনী দেব, প্রসন, যোগেন, রাণী
শ্রীধর, উমেশ, দয়াল, গৌর, পেচন, রাকেশ জানি
আরো হলেন গঙ্গা, সোনা, নকুল, স্বদেশ, অধর
দশাই, সোনাই, পচাই, হরি করছি তাঁদের কদর?
যতীন, উমেশ, নিখিল আরো নাম জানা নেই চার
মারলো যাঁরা নির্বিচারে কেমনে পাবে পার?
_________________________________
** মৌলভীবাজারের নারিয়া গ্রাম এক্কেবারে অঝোাপাড়া গাঁ। এখানে হিন্দু লোকের বসতি ছিল বেশি। শেরপুরের মদরিছ আলী এসে বলে গ্রামের হিন্দুরা মুসলমান হলে আর তাদের মেয়েকে মুসলমান ছেলে তথা রাজাকারের পছন্দের ছেলের কাছে বিয়ে দিলে জুলুম করা হবেনা। তারা মানেনি। পরে তাদের গরু নিয়ে যাবে বলা হয়। ২শতাধিক গরুও নিয়ে যাওয়া হয়। ৫ মে দুপুরের পাকিস্তানি এসে নারিয়া গ্রামের কামিনী দেবের বাড়িতে সবাইকে জড়ো হতে বলে। রাজাকার আলফু, তোরাব, বাদশা, আছির, আক্তারে সবাইকে বাঁচার আশা দিয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু এক কাতারে সবাই দাঁড়ানোর পরই "ফায়ার" শব্দ উচ্চারণের সাথে সাথে ২৬ টি নির্দোষ প্রাণ গুলির আঘাতে পড়ে যায়। তাঁরা হলেন-কামিনী কুমার দেব, প্রসন্নকুমার দেব, যোগেন্দ্রকুমার দেব, শ্রীধরকুমার দেব, উমেশচন্দ্র দেব, মূখ্যরাণী দেব, গঙ্গাচরণ দেব, নকুলচরণ দেব, স্বদেশচরণ দেব, অধরচন্দ্র দেব, দশাইচন্দ্র দেব, সোনাইচন্দ্র বৈদ্য, পচাই বৈদ্য, হরিণ বৈদ্য, যতীন্দ্র বৈদ্য, উমেশ বৈদ্য ও নিকিল চন্দ্র বৈদ্য। বাকি চার জনের নাম উদ্ধার করা যায়নি।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২