ভাইয়া প্রথম যেবার মানসিক ভারসাম্য হারালো সেবার কেন জানি আমার মনে হলো ঊনি ‘বড় মাপের’ দার্শনিক! সেই ৯৫-৯৬’র কথা। সারা রাত জেগে বিড়বিড় করে কথা বলেন। একদিন আমাকে ডেকে একটা লাঠি আঙুলের মাথায় নিয়ে বললো- ‘দেখ দেখ সাম্যাবস্থা নেই। কখনো ডানে হেলে পড়ছে, কখনো বামে। এই হলো ধরিত্রি। লাঠির মতোই একদিন ধরিত্রি হেলে পড়বে, আর সেদিন ধ্বংস হবে সব। তুই, আমি, আমরা।’
ওর কথা শুনে মনে মনে ভাবতাম ‘ইস’ আমিও যদি ওর মতো চিন্তা করতে পারতাম।
আচ্ছা আমরা যাকে পাগল বলি তারা আমাদের দৃষ্টিতে পাগল, তাদের দৃষ্টিতে আমরা কী! জানতে খুব ইচ্ছে হতো। সেই বয়ঃসন্ধি থেকে কতোবার যে এই ‘ইস’ উচ্চারণ করেছি কে জানে।
আমার সব কিছুতেই ভাইয়ার ছাপ। বাম রাজনীতি- ‘গড়ে তোলো ব্যারিকেড, কমরেড কমরেড’। ছয় বছর বয়সে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে জাসদের মিছিলে যাওয়া। কিচ্ছু বুঝি না, মার্কসবাদ-লেনিনবাদ অথচ মুষ্টিবদ্ধ হাতে ভাইয়ার শিখিয়ে দেওয়া স্লোগান ঠিকই আওড়াই! মিছিল শেষে গরিব সংগঠনের গরিব পুরস্কার ‘দুইটা সিঙ্গারা’ (অমৃত) খেয়ে ছোটো ছোটো পায়ে রোদ মাথায় বাড়ি ফিরছি আর ফন্দি আাঁটছি মায়ের বকুনি থেকে বাঁচার উপায়।
মায়ের বকাঝকা সেই থেকে খাওয়া শুরু। বাবা কাছে ছিলেন না। সরকারি চাকরির সুবাদে পরিবারের বন্ধন থেকে অনেকটা মুক্ত দুরত্বে তার থাকা। তখন মনে হতো ‘ইস’ আমিও যদি বাবা হতে পারতাম! তাহলে বাবার মতো প্রতি তিন বছর পরপর নতুন জায়গায় যাওয়া হতো।
প্রতি সপ্তাহান্তে বা পনেরদিন পরপর বাসায় আসেন বাবা। এই দিনটার জন্য আমার মায়ের সে যে কতো আগ্রহ, অপো তা বাবা আসার পরই বোঝা যেত। এটা করেন, ওটা করেন কি যে অস্থিরতা। বাবার পছন্দের খাবার, পরিপাটি বিছানা, সব সব যেন বাবার জন্যই অপো করছে। আমার অর্ধশিতি মায়ের ঠোঁটে লেগে থাকতো ম্যারাথন হাসি। মিটিমিটি হাসি, গুণগুণ গান। আর ওই দু’টা দিনে আমাদের ভাইবোনদের সাত খুনও যেন মাফ অবস্থা।
অনেকের মতোই প্রথম প্রেমে পড়ি স্কুলের এক ম্যাডামের। তার গোলাপী ঠোঁট, নিখুত মুখাবয়ব, লম্বা চুল সব কিছুতেই যেন স্রষ্টার নিখুঁত কারুকাজ। তাকে একবার দেখার জন্য সে কী যে অপো! কুমিল্লা জিলা স্কুলে কাস সেভেনে পড়ি তখন। বয়স আর কতো হবে ১২’র মতো। তখন ভাবতাম ‘ইস’ আমার বয়সটা যদি আরেকটু বেশি হতো।
‘ইস’-র চক্রে পড়ে রেইসকোর্সের রিয়াদটা চলে গেল। কাস এইটে পড়ি তখন। একদিন স্কুলে এসে শুনি রিয়াদ মারা গেছে। মারা গেছে বললে ভুল হবে মেরে ফেলা হয়েছে। মৃত মানুষকে জীবিত করার এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে ওর বাবা তাকে ওয়াড্রপের ড্রয়ার দিয়ে চেপে ধরে মেরে ফেলে। রিয়াদের আর বেঁচে ওঠা হয়নি। এ কথা শুনে আমরা সেদিন সবাই অনেক কেঁদেছি। ঘটনার মাত্র দুদিন আগেও আমরা একসঙ্গে স্কুল পালিয়েছিলাম। পরদিন এজন্য অ্যাসেম্বলিতে আধঘণ্টা দাঁড়িয়েও রাখা হয়েছিলো শাস্তি হিসেবে। কাসের সবচেয়ে নাদুস-নুদুস সুন্দর মেয়েলি ছেলেটাকে হারিয়ে শিকদেরও সেদিন বলতে শুনেছি- ‘ইস’ ও যদি আমার ছেলে হতো।
এসএসসিতে অল্পের জন্য প্লেস করতে না পেরে বুকের মধ্যে যেন ‘ইস’ কথাটা সুপার গ্লু দিয়ে লেগে গিয়েছিল। এরপর কলেজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়েছি অর্ধযুগের বেশি হয়ে গেল।
তবুও আমার ‘ইস’ কাটে না। হতাশা গ্রাস করে যায়।
‘পথের জ্যোৎস্নাকে ঘরে তুলে আনি
অন্ধকার তবুও কাটে না
বিষণ্ন এক একটা রাত
আর্তনাদ করে আলোর খোঁজে
চারদিক আলোকিত
আমার মনের আলো কই’
কুমিল্লার কান্দিরপাড়, ঝাউতলা, পুলিশ লাইন, রেইসকোর্স, জিলা স্কুলের সামনে টঙ দোকানের আড্ডার সেই দিনগুলো আজো ভুলতে পারিনি। ভোলা কি যায়? এই যেমন ভুলতে পারছি না.... না থাক আরেকদিন বলবো।
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।