***রাত ২টা। নুহাশ এসে দাঁড়িয়েছিল কিছুক্ষণ। ৭০০ টাকা নামে একটা শর্টফিল্ম বেড়িয়েছে শুনলাম। এরপর থেকে নুহাশ আলোচনার শীর্ষে চলে এসেছে। আমি তাকে একটু মজা করে বললাম-"আমার জন্য নাম যেন না হয়, নুহাশ যেন বাচে নুহাশের পরিচয়ে।" কি জানি রাগই করেছে নাকি! চোখ মুছতে মুছতে চলে গেল। আমি জানি নুহাশ অনেক বেশি মেধাবী। ও আরো বড় কিছু করবে আমি বিশ্বাস করি।
***পাশ দিয়ে কেও হাটছে। চাঁদের আলোয় দেখলাম হিমু। "এই হিমু দাঁড়াও।"
হিমু আমাকে চিনেছে। ওর পায়ে এখনো স্যান্ডেল নেই, পরনে একই পোশাক। যেভাবে রেখে গিয়েছিলাম সেভাবেই আছে একদম।
- কোথায় যাচ্ছিস?
- হাঁটছি স্যার। কাজই তো এটা।
- পায়ে বাবলার কাটা ফুটবে। এখন তো স্যান্ডেল পড়।
- কি করে পড়ি! আপনি যে শিখান নি।
- কেও আর শিখায় নি?
- হিমু কারো কাছে শিখতে যায় না আপনাকে ছাড়া। সেদিন মেরে ফেলতেন জাহাজটা ডুবিয়ে। কেন বাঁচিয়ে রাখলেন স্যার! কেন আনমনা দর্শকের হাতে তুলে দিয়ে চলে গেলেন!
আমি চুপ করে থাকলাম। হিমু চলে গেল। তাকিয়ে দেখলাম সে হাঁটছেই।
*** -স্যার, আমি রুপা। চিনতে পেরেছেন?
তাকাতেই দেখলাম রূপা। আমি রূপার চোখের দিকে তাকাতে পারি নি। তাকে খুব বেশি সুন্দর লাগছিল। আমি কি এত সুন্দর রেখে এসেছিলাম! নাকি কেও সমৃদ্ধ করেছে মেয়েটাকে
- হ্যাঁ চিনতে পেরেছি। তুমিও এখনও একা।
- না স্যার, আমি তো একা না। আমার অনেক মানুষ জানেন না আপনি? সবাই এসে এসে দেখে। কিভাবে একা থাকব বলবেন?
বুঝতে পারলাম সে অভিমান করেছে। কথা না বলতে পারাতে রূপা চলে যায়। নীল মিশে যায় রাতের আঁধারে।
*** -আমার চশমা টা দেখেছেন?
- আপনি এখনও চশমা পান নি?
- না পাই নি।
- কেন!
- দেবী নিয়ে গেছে। আর দিচ্ছে না।
- আপনার আনসলভড প্রব্লেম গুলা সলভ হয়েছে?
- আপনিই তো সলভ করে যান নি। আমি কিভাবে করব! যাই থাকেন। পিএইচডি হোল্ডার আসবে দেখা করতে।
মিসির আলীও চলে যায়। কিন্তু তাকে আমি যেতে দেখি নি। হুট করে সে কই যেন হাওয়া হয়ে গেল!
*** -গান শুনবে? যদিও অনেকদিন গাই না। গলাটাও ভাল নাই আর।
- শাওন, আমার প্রিয় গানটা ধরো।
শাওন গান গায়-"যদি মন কাঁদে তুমি ফিরে আসো......."
আমি কাঁদছি। অনেকদিন পর কাঁদছি। লীলাবতীর মৃত্যু না লিখে হুমায়ূন এর মৃত্যু লিখতে হত। কেও কি লিখবে না!........
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১১