সন্ধ্যার আকাশে তখন চন্দ্রিমার অস্পষ্ট ছোয়া । ব্যস্ত জনপথ, অব্যস্ত আমি। ঠান্ডা বাতাস বইছে; মেঘ হাসছে চাঁদের আলোয়। বাতাসে বৃষ্টির আভাস। আমি হাঁটছি; একা। হঠাৎ একটা মেয়ে ডাক দিল। সে দাঁড়িয়ে ছিল মন্দিরের পাশের ল্যাম্পপোস্ট এর নিচে। এগিয়ে গেলাম; কাছে যেতেই চেনা মনে হল। মনের ভুলও হতে পারে। কিছুটা উত্তেজনার সুরে বলে উঠল-"আপনার সাথে কিছু কথা আছে। যদি কিছু মনে না করেন তাহলে হাঁটতে হাঁটতে বলি?" মেয়েটার চোখে নীল চশমা, পড়নে নীল শাড়ি; দেখে মনে হচ্ছে কোনো ফাংশন শেষে বাড়ি ফিরছে। আবেদন রাখতে হল। সুন্দরী মেয়েদের প্রতি ছেলেদের আলাদা একটা আকর্ষণ থাকে; জন্মগত এই স্বভাব আমারও আছে। মৃদু স্বরে তবুও আত্মসম্মানবোধ থেকে জবাব দিলাম-"খুব জরুরী?" রাগ না করে হাসতে হাসতে বলল-"খুব না; কিছুটা" বুঝলাম মেয়েটাকে আর প্রশ্ন করলে হয়ত আজ আর কথা বলতে চাইবে না। কিন্তু নির্জনতা কাটাতে একটা সুন্দরী মেয়েকে নিয়ে হাঁটার ভাগ্য সবার কি হয়! তাই বেশি প্রশ্ন না করে বাধ্য ছেলের মত বললাম-"চল তাহলে।" হাতের ইশারায় তখন মেয়েটি পথ দেখিয়ে দিল।
তার নীল কাঁচের চুড়িগুলো বাজতে থাকে। আমি হাঁটতে থাকি তার পাশে। সময় ঘনিয়ে যায়, সন্ধ্যা শেষে রাত হয়; শেষ হয় না পথ। শেষ নেই তার কথার; যার শুরুই হয় নি তার আবার শেষ! মাঝপথে আমি দু-তিনবার জিজ্ঞেস করি-"কিছু বলতে চাচ্ছিলেন!" উত্তরে শুধু আসে হতাশার শব্দ; কিছু না বলতে পারার হতাশার শব্দ। সেদিন আমি হেঁটেছিলাম ততক্ষণ, যতক্ষণ সে আশ্বাস দিয়েছে-"ভেবে বলি?"
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২২