somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রাভেলগ ০৪ঃ মেঘ ও পাহাড়ের কোলে- সাজেক ও খাগড়াছড়ি ভ্রমন

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে সময় পাওয়া গেল সাজেক ও খাগড়াছড়ি ভ্রমনের। যদিও গত বছর যাবার কথা ছিল কিন্তু নানা ব্যাস্ততায় আর সময় হয়ে উঠেনি। তাই ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ঃ০০ টার বাসে এই ক্যাকোফনি আর কনক্রিটের জঙ্গল থেকে রওনা দেই রাঙামাটির ছাদ সাজেক ভ্যালি এর উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত একটি পর্যটন স্থল হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ি সদর থেকে।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি ভোর ৬ টায় পৌঁছলাম খাগড়াছড়ি চেঙ্গি ব্রিজ এর নিকটস্থ পর্যটন কর্পোরেশন মোটেলে। খাগড়াছড়িতে তখন স্বর্গীয় নীরবতা। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় দুজন ভোর এর সৌন্দর্য উপভোগ করলাম কিছুক্ষণ। সকাল ৯ঃ০০ টার মধ্যে নাস্তা সেরে আমাদের ১৩ জনের গ্রুপ রিজার্ভ মাহিন্দ্রা জিপ এ রওয়ানা দিলাম সাজেক ভ্যালি এর উদ্দেশ্য। তখনও কেউ কাউকে তেমন ভাবে চিনি না। যাবার পথে এবং এই ২ দিনে (১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি) গ্রুপ এর সবার সাথেই সবার একটা ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়। আমরা সকাল ১০ঃ৩০ এ আর্মি এস্কর্ট নিয়ে সাজেক এ রওনা দেই। দিনের দুইটি নির্দিষ্ট সময় (সকাল ১০:৩০ এবং বিকাল ৩:৩০) ব্যতীত আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ হতে সাজেক যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয় না । পর্যটকদের সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়।

সাজেক যাবার উচু নিচু পাহাড়ি পথ আর চারপাশের সবুজ যে কোন পর্যটককে মুগ্ধ করবার জন্য যথেষ্ট। দুপুর ১:৩০ এ আমরা সাজেক এ প্রবেশ করি। আমারা ছিলাম মেঘলা আকাশ কটেজ এ। দুপুরে সাজেক এর সিগনেচার খাবার ব্যামবো চিকেন দিয়ে ভাত খেয়ে বিকেল ৪:০০ টায় রওনা দেই সাজেক ভ্যালির সর্বোচ্চ চূড়া কংলাক পাহাড় এর উদ্দেশ্য সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা প্রায় ১৮০০ ফুট। আমাদের প্রায় ১:০০ ঘণ্টা লাগে পাহাড়ে উঠতে। তবে এই কষ্ট সার্থক হল কংলাক এর চুড়ায় গোধূলির স্বর্গীয় আলো দেখে। পাহাড় থেকে নেমে সোজা কটেজে। রাতে সবার সাথে একসাথে বসে বার বি কিউ আর আড্ডা বেশ উপভোগ্য ছিল। আমরা পরদিন যাবো হেলিপ্যাড সূর্যোদয় দেখতে তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি।



















১৬ ই ফেব্রুয়ারি সকাল। ভোর ৫:৩০ এ কটেজ এর ব্যালকনি থেকে ভোর এর নীরব সাজেক আর বিশুদ্ধ বাতাস সাথে পাহাড়ের বিশালতা- শহরের জঞ্জাল থেকে পালিয়ে এটা একটা বড় পাওয়া ছিল। কিছুক্ষণ পর হেটে সবাই চলে যাই হেলি প্যাড। সূর্যোদয় দেখতে হলে ভোর ৬:৩০ এর আগেই পৌছাতে হবে। এখানে সূর্যোদয় দেখাটাও একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা। প্রায় ১ ঘণ্টা ওখানে থেকে সোজা নাস্তা করতে স্থানীয় একটা হোটেলে চলে আসলাম। শীতের সকালে গরম ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি আর সাথে ডিমের তরকারি বেশ মজার ছিল। নাস্তা করে কিছুক্ষণ সাজেক স্টোন পার্ক এ ঘোরাঘুরি করি। বেশ ছোট হলেও খুব সুন্দর দেখতে।

আজ শেষ দিন তাই সাজেককে বিদায় জানিয়ে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্য সবাই জীপ এ রওনা হলাম সকাল ৯:৪০ এ। দুপুর ১:৩০ এর মধ্যে খাগড়াছড়ি তে পৌছাই। দুপুরের খাবার খাই ব্যাম্বশুট রেস্টুরেন্ট এ। বেশ সাজান গোছান আর পরিচ্ছন্ন একটা জায়গা। খাবারও মোটামুটি ভালো। এরপর একে একে ঘুরি তারেং (পুরো শহরটার বার্ডস আই ভিউ পাওয়া যায় এখান থেকে আর বেশ সুন্দর), আলুটিলা গুহা, হাজাছড়া ঝর্না (যদিও পানি ছিল না), খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক।




















রাতে ৮:০০ টার মধ্যে খাবার শেষ করে, ৮:৩০ এর বাসে ঢাকার উদ্দেশ্য সবাই রওনা হই।

খাগড়াছড়ি বেশ পরিচ্ছন্ন একটা শহর। তাই ঘুরতে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না। পর্যটনস্থানটি আমাদের দেশের তাই পরিচ্ছন্ন রাখবার দায়িত্বও আমাদের।

সবার ভ্রমন সুন্দর হোক। হ্যাপি ট্রাভেলিং।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×