somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম জলে ডোবার সুত্র !!

১০ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ কয়েক দিন হলো বৃষ্টি বন্দি হয়ে মাথা খারাপ অবস্থা তমার। দূর, কেন যে আষাঢ়ের বৃষ্টির জন্য মনটা এমন হাহাকার করেছিল তখন। এতটা ন্যাকামোর কোনো ইচ্ছাই তার ছিল না। ফাহিমের পাল্লায় পড়ে বৃষ্টিভেজা কদমের জন্য রোমান্টিকতায় পেয়ে বসেছিলতাকে। বাংলা ছিঃনেমার কট্টর ভক্ত বলে প্রেমের সবক’টা সবক যেন জানা ছিল ফাহিমের।
অনেক দিন তমার প্রেমে হাবুডুবুখেতে খেতে হঠাত্ ওর মনে হয় ও তো চাইলেই তমাকে পটাতে পারে। নায়কদের মতো একটার পর একটা প্রেমের সূত্র খাটাতে থাকে।
এদিকে কাঠফাটা রোদে সবার জান যখন যায় যায়, তখনই তার মনে হয় আরে ও তো চাইলেই বৃষ্টি নামাতে পারে। আর বৃষ্টিই হবে প্রেম নিবেদনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ।তাছাড়া দেশের বৃহত্তর স্বার্থেতাকেই এগিয়ে আসতে হবে।
কিন্তু ও চরম হতাশ হয়ে ভাবল যে, নায়কদের মতো হওয়াটা আসলেই খুব কঠিন। নাহ্ তার অতটা বুকের পাটা নেই যে, চাইলেই তমাদের বাড়িতে গিয়ে ওকে ধরে এনে রাস্তায় গান-নাচের আসর বসাবে। আর বৃষ্টি নামিয়ে প্রেমের বীজ বুনবে ওর মনে। যদিও তমা ব্যাপারটা বুঝতে পারে যে, ফাহিমওর প্রেমে পড়েছে। কিন্তু সাড়া দেয় না, ফাহিম বুকে থুথু দিয়ে বন্ধু তারেককে সঙ্গে নিয়ে তমারবাসার সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
তারেক ওকে ঠেলেঠুলে ভেতরে ঢুকিয়ে নিজে কেটে পড়ল। ফাহিম ঢুকতেই তমার বাবার মুখোমুখি।
কে তুমি? কি চাই?
থতমত খেয়ে ফাহিম বলে, বৃষ্টি চাই আঙ্কেল।
বৃষ্টি চাই মানে? এখানে বৃষ্টিটিষ্টি বলে কেউ নেই। আর আমি কি বৃষ্টির ঠিকাদারি ব্যবসা করি নাকি? ফাজলামি করারজায়গা পাও না তাই না, ভাগো বলছি।
হুঙ্কার শুনে ফাহিম ভয়ে উল্টা দৌড় দিল, অনেক চেষ্টা করল কাঁদতে। কারণ ও জানে, এটা বৃষ্টির দ্বিতীয় সূত্র।
নাহ্ হলো না। কি করবে ও? সে অতটা ভালো আর দয়াবান ছেলে নয় যে, বাড়ির কেউ চাইলেই ওকে মেরে ধরে বের করে দিতে চাইলেই ও কাঁদতে কাঁদতে ওর মাকে নিয়ে বের হবে। আর ঝমঝম করে উড়ে এসে বৃষ্টি নামবে।
কাকতালীয় না হলেও কোকিলতালীয় বা বকতালিয়ের মতো ফাহিমের সূত্র মতে তমার কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ঝমঝম করে বৃষ্টি নামল। এরই মধ্যে ফোনে তমাকে অনেকটাই কাবু করে ফেলেছেও। তমাকে বৃষ্টিভেজা কদমের স্বপ্ন দেখিয়েছে প্রখর রোদে পুড়তে পুড়তে। তমাও তাই বৃষ্টিরঅপেক্ষায় ছিল। আজ বৃষ্টি দেখে ফাহিমকে সামনে পেয়ে কদম ফুলের আবদার করে বসল। ফাহিম অনেক খুঁজেও পেল না। ও বোঝাতে চেষ্টা করল যে, আষাঢ় এলেই যে কদম ফুটবে তা নয়। সময় দিতে হবে তো। তমা কোনো কথা না বলে গাল ফুলিয়ে চলে যায়।
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখে সবার মাথা খারাপ।
এদিকে ফাহিম সারা শহর তন্ন তন্ন করেও একটা কদম ফুল পেল না।দূর, নিজের ওপরই রাগ লাগছে তার, কেন যে এই রোমান্টিক ডায়লগ মারতে গিয়েছিল!
অনেক কষ্টে একটা কদম গাছের সন্ধান পেয়ে বন্ধু রিফাতকে নিয়ে ছুটল। বৃষ্টিভেজা এক জোড়াকদম নিয়ে গাছ থেকে নামতে গিয়ে বৃষ্টিভেজা গাছ থেকে পিছলে পড়েহাত-পা ভেঙে গেল ফাহিমের। তারপর ও মনের সবটুকু ভালোবাসাকে এক করে তমার বাসার উদ্দেশে রওনা হলো।
বৃষ্টির পানিতে থই থই করছে চারপাশ। তমাকে সারপ্রাইজ দেবে বলে ছাদে আসতে বলেছে ফাহিম। এদিকে আসা-যাওয়া কম। তাই কোথায় কী আছে তার জানা ছিল না। ছাদের উপরে থাকা প্রেয়সীর দিকে তাকিয়ে হাঁটতে গিয়ে ভাঙা পা নিয়ে ম্যানহোলে পড়ে গেল ফাহিম।
আড়ালে থাকা বন্ধুটি দৌড়ে এসে ফাহিমকে টেনে তুলে অবাক হয়ে দেখে, হাতে এখনও শক্ত করে ধরা সেই কদম ফুল।
ছাদের উপর থেকে তমা খিলখিল করে হেসে বলে, প্রেমের আর বৃষ্টির সবক’টা সূত্র শিখে আসছ, কিন্তু জলাবদ্ধতার সূত্র তো শিখে আসনি! যাও আজ থেকে ওটা শিখতে শুরু করে দাও, ততদিন পর্যন্ত নালার ওই নোংরা পানিতে ভেজা কদম ফুলটা তোমার কাছেই রেখে দিও।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×