somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবধান! থাকুন এক্স-রে ক্যামেরা থেকে!!!

৩১ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আপনার অজান্তেই আপনার ছবি নগ্ন করে কেউ ছবি তুলে নিব তাই ছবি তুলা থেকে সাবধান থাকুন সবসময়



প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতা মানুষকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে গেছে যে প্রতিনিয়ত এর বাজে দিকগুলো পাল্টে দিচ্ছে দৃশ্যপট। ক্যামেরা আবিষ্কারের পর ডকুমেন্টেশনে যে বিপ্লব এসেছে সেটাতে নতুন সংযোজন এক্সরে ক্যামেরা। রন্টজেন আবিষ্কৃত এক্স-রে রশ্মি ধারণার আধুনিক বিবর্তনের মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয়েছে এটি। বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানবন্দর ও শপিং মলগুলোতে নিরাপত্তাজনিত স্ক্যানিংয়ের কাজে হরহামেশাই ব্যবহৃত হচ্ছে এই এক্স-রে ক্যামেরা। অপরাধী কিংবা অবৈধ কোনো জিনিস বহন করছে কি-না, স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে সেটি নিরূপণ করাই ছিল এর মূল কাজ।এক্স-রের মাধ্যমে যেমন মানব দেহের অভ্যন্তরস্থ হাড়-গোড়ের চিত্র ছবিতে তুলে আনা যায় এর ব্যবহারও ঠিক তেমনি। এতোদিন পর্যন্ত এতে আতঙ্কের কিছুই ছিল না। কিন্তু এক্স-রে ক্যামেরার বিবর্তন ও সাম্প্রতিকতম ব্যবহার সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। আতঙ্কিত না হয়ে উপায় আছে? আপনি হয়তো হাসি মুখ করে ছবি তোলার জন্য পোজ দিলেন। অথবা আপন মনে রাস্তা ধরে হাঁটছেন। সেই মুহূর্তে কেউ আপনার ছবি তুলল। আজকাল হিডেন ক্যামেরায় কতো আপত্তিকর ছবিইতো তোলা হয়। কিন্তু সেগুলোর চেয়ে এখনকার ছবিগুলো আসলেই ভয়াবহ। কারণ আপনি জানতেই পারছেন না আপনার সুন্দর পোশাক পরিহিত ছবিটি প্রসেস করার পর পুরোপুরি নগ্ন হয়ে গেছে। ছবি তোলার সময় আপনার গায়ে কাপড় ছিল ঠিকই কিন্তু ছবিটি ওঠেছে সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থার। কি ভয়ঙ্কর অবস্থা! মহিলাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি হয়ে ওঠে আরো ভয়ঙ্কর ও বিব্রতকর। আর এটাই এক্স-রে ক্যামেরার কারিশমা।


জাপানের 'ইয়ামাদা ডেনিশ' নামক এক কোম্পানি সর্বপ্রথম এই বিশেষ ধরনের ক্যামেরা আবিষ্কার করেছে। যার সামনে কোনো মানুষ দাঁড়ালে সেই মানুষের গায়ের কাপড় ভেদ করে তার নগ্ন শরীরের ছবি তুলে দেবে। 'এক্স-রে ক্যামেরা' নাম দিয়ে বাজারজাত করা সেই ক্যামেরা রীতিমতো আলোড়ন তুলেছে। এই ক্যামেরার প্রধান বৈশিষ্ট্যই হলো, ক্যামেরার চোখ মানুষের পরিধেয় কাপড় ভেদ করে শরীর দেখতে পারে। আরো ভয়ংকর কথা-একটি নিরীহ চেহারার লেন্স এবং ছোট্ট একটি ডিভাইস সংযোজন করেই যেকোনো সাধারণ ক্যামেরাকেও এক্স-রে ক্যামেরা বানিয়ে ফেলা যায় খুব সহজেই। এটি মূলত বানানো হয়েছিল নাইট ভিশন ক্যামেরার জন্য। অর্থাৎ যে ক্যামেরা দিয়ে ঘুটঘুটে রাতের অন্ধকারেও ফ্লাশ লাইট বা খালি চোখে দেখা যায়, এমন কোনো আলো ছাড়াই পরিষ্কারভাবে ছবি তোলা যায়। সেই গবেষণা করতে গিয়ে কিছু উর্বর মস্তিষ্কের (!) বিজ্ঞানী বের করে ফেলেছেন এক্স-রে ক্যামেরা নামের এই ভয়ঙ্কর জিনিস।

নাইট ভিশন ক্যামেরা কিভাবে কাজ করে জানেন। আজকাল বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিতে রিমোট কন্ট্রোলের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। আর এই রিমোট কন্ট্রোলের সিগন্যাল ট্রান্সমিট করার সেন্সর হিসেবে কাজ করে ইনফ্রারেড লাইট। এই বিশেষ আলো মানুষ খালি চোখে দেখতে পায় না। যেকোনো রিমোট কন্ট্রোল (রেডিও ট্রান্সমিটার ছাড়া) হাতে নিলেই দেখতে পাবেন এর মাথায় ক্ষুদ্র বাল্বের মতো দেখতে একটি বস্তু বসানো আছে। (আপনার বাসার টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলটি হাতে নিয়ে এখনই দেখতে পারেন)। এটিই হলো সেই ইনফ্রারেড-L.E.D। এটি জ্বললেও এর আলো মানুষ খালি চোখে দেখতে পায় না। এজন্যই রিমোটের বাটন টিপলেও আমরা কোনো আলো জ্বলতে দেখি না, যদিও সেটা জ্বলে ঠিকই। কিন্তু এ থেকে বের হওয়া আলো সেই নির্দিষ্ট ইলেকট্রনিক যন্ত্রটা (যেমন টিভি বা ভিসিডি প্লেয়ার) কিন্তু ঠিকই বোঝে, আর সেই সিগন্যালে সাড়াও দেয়। মজার ব্যাপার হলো, এই বিশেষ আলোটি আমরা দেখতে না পেলেও ক্যামেরার চোখ কিন্তু ঠিকই দেখতে পায়। ঘুটঘুটে অন্ধকারে একগাদা ইনফ্রারেড এলইডি জ্বালালেও আমরা কোনো পার্থক্য টের পাব না। কিন্তু ক্যামেরার চোখে সবকিছু হয়ে উঠবে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। আর তখন এই ছবি তোলা হলে, ছবিতে আমরাও সবকিছু পরিষ্কার দেখতে পাব।

একটি বিশেষ ফ্রিকোয়েন্সির (তরঙ্গ) ইনফ্রারেড আলো মানুষের শরীরের কাপড় ভেদ করে চলে যেতে পারে। যেহেতু, যখন কোনো বস্তুর ওপর পতিত আলো সেই বস্তুর বাধা পেয়ে বা তার ওপর প্রতিফলিত হয়ে ফিরে এসে চোখের রেটিনায় এসে পড়লে তখন আমরা সেই বস্তুটিকে দেখতে পাই। ঠিক একইভাবে বস্তু থেকে প্রতিফলিত আলো লেন্সের মধ্যদিয়ে ফিল্মের (মেমোরি) গায়ে এসে পড়লে তার ছবিও ওঠে। যদি বস্তু থেকে আলো প্রতিফলিত না হয়, তাহলে আমরা সেটাকে দেখতে পাব না। ক্যামেরাতেও তার ছবি উঠবে না। অর্থাৎ সোজা কথায় সেটা অদৃশ্য হয়ে যাবে। ঠিক এই সূত্রটাই কাজে লাগানো হচ্ছে এখানে। সেই বিশেষ ফ্রিকোয়েন্সির ইনফ্রারেড আলো পরনের কাপড় ভেদ করে চলে যায়। অর্থাৎ কাপড় থেকে কোনো আলো প্রতিফলিত হয় না। কিন্তু প্রতিফলিত হয় ওই কাপড় যে পড়ে আছে, অর্থাৎ ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো ব্যক্তির শরীরের চামড়া থেকে। ফলে ক্যামেরার চোখে কাপড় অদৃশ্য হয়ে যায়, আর দৃশ্যমান হয় কাপড় পরা ব্যক্তির নগ্ন শরীর। এই অতি সহজ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই বানানো হয়েছে 'এক্স-রে ক্যামেরা'।

তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এই ভয়ঙ্কর জিনিসটি এখন পর্যন্ত কারো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি। অনেকেই অবশ্য এ খবর শুনলে বিশ্বাস করতে চান না। কিন্তু আতঙ্কের বিষয় হলো আধুনিক মোবাইল ফোনগুলোতেও এক্স-রে ক্যামেরার ব্যবহার বাড়ছে। আর যেহেতু শুধু চিপ ও লেন্স সংযোজন করেই কোন সাধারণ ক্যামেরাকে এক্স-রে ক্যামেরায় পরিণত করা যায়, সেহেতু এটি মহামারীতে রূপ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কারো জীবনেই গোপনীয়তা বলে কিছু থাকবে না। অতএব ক্যামেরার সামনে পোজ দেয়া কিংবা দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরার ক্ষেত্রে বিষয়টি মাথায় রাখাই হবে বুদ্ধিমানের।

সবাই ছবি উঠানো থেকে সাবধান থাকুন সবসময়....
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:০২
৩৬টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×