কাল রাতে বাসায় কয়েকজন মেহমান এলেন। তাদের সাথে দেখা করতে আমাদের বড় ছেলে সাঈদকে ডাকলাম। কিছুক্ষন পর সে এলো। পরনে সাদা রঙের সেন্ডো গেঞ্জি। গেঞ্জির উপরে লুঙ্গি। লুঙ্গিটা আবার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক উপরে। চোখ বুজে একবার ভাবুন দৃশ্যটা।
কানাডায় বেড়ে উঠা ছেলে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরে এভাবে সামনে এলো দেখে মেহমানবৃন্দ খানিক অবাকই হলেন। তাঁদের ধারণা ছিলোনা কানাডিয়ান ছেলেরা এভাবে লুঙ্গি পরতে পারে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সাঈদ প্রথম জন্মদিনের আগেই আমাদের সাথে কানাডা পাড়ি জমায়। কয়েকদিন আগে সে চব্বিশে পা রাখলো। বাঙালি কালচারের সাথে আমি তাকে লুঙ্গি পরানোও শিখিয়েছি। - -
মেহমান চলে যাবার পর তার কাছে জানতে চাইলাম সে প্রপার (যথাযথ) কাপড়চোপড় পরে মেহমানের সামনে এলো না কেন?
সে পাল্টা প্রশ্ন করলো, 'আমি যা পরেছি তা ইম্প্রোপার (বেঢপ) হলো কিভাবে?'
বললাম, 'গেঞ্জির উপর লুঙ্গি পরে কেউ কি এভাবে মেহমান বা বাইরের লোকের সামনে যায়?'
সে বললো, 'আব্বু, তুমি মনে হয় বাংলাদেশের কথা ভুলে গেছো, আমি গত বছর বাংলাদেশ ভিজিটের সময় শত শত মানুষকে এমন কাপড় পরে রাস্তা-ঘাটে ঘুরে বেড়াতে দেখেছি। তাছাড়া, যারা রিকশা চালায় তারা তো এগুলোই পরে।'
ছেলের কথা মিথ্যে নয়। তাই, চুপ থেকেছি। তাকে কি আর বলতে পারি, ওই মানুষ আর তুমি কি এক? সে প্রশ্ন করলে হয়তো সে পাল্টা জানতে চাইতো, ওরা কিভাবে আমাদের চেয়ে আলাদা? - -
বিশ্বাস করুন বন্ধুরা, কানাডা-আমেরিকার মতো দেশগুলোতে বেড়ে উঠা ছেলেমেয়েদের মনমানসিকতা আমাদের চেয়ে আলাদা। তারা জানেনা, আমরা, তৃতীয় বিশ্বের মানুষেরা, মানুষে-মানুষে কতো ভেদাভেদ করি।
** লেখকের আরো লেখা পড়তে গুগল করুন: এম এল গনি
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২৫ ভোর ৬:২২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


