ঢামেক হাসপাতালের বার্নস ইউনিটের নীল শাখা। এখানে প্রায় ৮০ জন রোগী রেখে বৃহস্পতিবার পাঁচদিনের বনভোজনে গেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা!
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্নস ইউনিটে গিযে় দেখা গেছে ৪র্থ তলার বারান্দায় বসে কাঁদছেন এক রোগীর বোন রেবেকা বেগম। তিনি বিডিনিউজ টোযে়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "গতকালও (বুধবার) ভাই আমার সঙ্গে কথা বলেছে। আজ কথা বলছে না। ডাক্তারদের ডাকছি কিন্তু কেউ আসছে না।"
আটদিন আগে পাবনার পলাশপুরে একটি চাতালে অগ্নিদগ্ধ হন রবিউল। সেদিনই তাকে ঢামেক কলেজ হাসপাতালের বার্নস ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
নীল শাখায় চিকিৎসাধীন আরেক রোগী শিশু মেঘলা (৭)। বিদ্যুস্পৃষ্ট হযে় শরীর পুডে় যাওযা়র পর ফরিদপুরের নাগরকান্দা থেকে তাকে এ শাখায় ভর্তি করা হয় বুধবার।
তার মামা ইমাম এদিক-ওদিক গিযে় বিভিন্ন চিকিৎসক খুঁজেও কাউকে পেলেন না।
রবিউল ও মেঘলার মতো প্রায় ৮০ জন রোগী এরকম অনিশ্চিত অবস্থায় পডে়ছে ঢামেক হাসপাতালের বার্নস ইউনিটের নীল শাখায়।
নীল শাখার চিকিৎসকরা পাঁচদিনের জন্য বনভোজনে কক্সবাজার গিযে়ছেন। অন্যদিকে বার্নস ইউনিটের প্রায় ৬০জন কর্মচারী চাকরি নিয়মিত করার জন্য ১০ দিন ধরে অন্দোলন করছেন।
বনভোজনে যাওযা়র পথে নীল শাখার রেজিস্ট্রার আশ্রাফুজ্জামান বলেন, "নীল শাখার সাতজন চিকিৎসকের মধ্যে ছয়জন বনভোজনে যাচ্ছি। তা ছাডা় অন্য ইউনিটের ডাক্তারা এই ইউনিটের রোগীকে চিকিৎসা দিবেন। কোন অসুবিধা হবে না।"
বার্নস ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্তলাল বিডিনিউজ টোযে়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "৫০ শয্যার বার্নস ইউনিটে তিনশ রোগী ভর্তি রযে়ছে। তাদের সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
"তার ওপর যদি এক শাখার চিকিৎসকরা বনভোজনে যায় তাহলে তো দুর্ভোগ বাড়বেই।"
"বিবাহ ও বনভোজন জীবনের একটি অংশ। তাই তারা (চিকিৎসকরা) বনভোজনে গিযে়ছেন," বলেন প্রকল্প পরিচালক।
বার্নস ইউনিটের প্রধান অফিস সহকারি শাহিন খান বিডিনিউজ টোযে়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "শুনেছি নীল ইউনিটের চিকিৎসকরা বনভোজনে গেছেন।"
শাহিন খান জানান, আগে সবাই একটি ইউনিটে ছিল। এখন কমলা, নীল, সবুজ ও হলুদ শাখায় ভাগ করা হযে়ছে।
শাখাগুলোতে পর্যায়ক্রমে রোগী ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসকরা আলাদা আলাদা রোগী দেখেন বলে জানান অফিস সহকারী।
নীল শাখার চিকিৎসকরা বনভোজনে যাওযা়য় নামমাত্র রোগী দেখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই শাখায় ভর্তি রোগীদের স্বজনরা।
রাত পৌনে ৯টার দিকে ইমাম হোসেন বিডিনিউজ টোযে়ন্টিফোরডটকমকে জানান, ভাগ্নি মেঘলাকে এলিফ্যান্ট রোডের ঢাকা বার্ন নামে একটি ক্লিনিকে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।