পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ব্যাপারে বাংলাদেশের করা তদন্ত পর্যালোচনা করতে বিশ্বব্যাংক তদন্ত প্যানেল প্রধানের নাম ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সাবেক প্রধান আইনজীবী লুইস মরিনো ওকাম্পো এ দায়িত্ব পালন করবেন। বিশ্বব্যাংক গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স আজ শনিবার এ খবর প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বাতিল করে দেওয়া ১২০ কোটি ডলারের অর্থায়ন পুনরায় চালুর আগে বিশ্বব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছিল; তদন্ত পর্যালোচনা প্যানেল গঠন তার একটি। তিন সদস্যের এই প্যানেলের প্রধান হিসেবে লুইস পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়ে বাংলাদেশের তরফ থেকে যে তদন্ত করা হয়েছে সে ব্যাপারে পর্যালোচনা করে বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রতিবেদন দেবে। বাংলাদেশ সরকারকেও তাঁরা একটি প্রতিবেদন দেবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে নেদারল্যান্ডের হেগে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে লুইস মরিনো ওকাম্পো প্রধান আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে যুক্ত ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের দাবি জানিয়ে বিশ্বব্যাংক গত জুনে এই প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এক বিবৃতিতে বলেছেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক অঙ্গীকারবদ্ধ। এই প্যানেল স্বচ্ছতা, জন জবাবদিহিতা ও সুশাসনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সরাতে বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গত জুলাইতে কানাডার টরেন্টোর একটি আদালতে দেশটির প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের দুই কর্মকর্তার বিচার শুরু হয়। কানাডা এ অভিযোগের বিষয়ে গত বছর তদন্ত শুরু করেছিল।
২৫ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতির মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা কর্মকর্তাদের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছুটিতে রাখা, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা, তদন্তের সব তথ্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৈদেশিক প্যানেলকে দেওয়া, ক্রয়-সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একমত হয়। বিশ্বব্যাংক জানায়, কেবলমাত্র এসব বিষয়ের সন্তোষজনক বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের ইতিবাচক প্রতিবেদনের পরই বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যাপারে অগ্রসর হবে।
প্রথম আলো