somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নদী

২৮ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এরা সুখের লাগি একান্নবর্তী সংসার ভেঙে ভেঙে ছোট করে। ছোট পরিবার গড়ে; গড়তে চায়। আর বুড়ো বয়সে বুক চাপড়ে, কপাল চাপড়ে মাথা খুটে বলে, "কী কুনক্ষুণে বউ নিয়ে এয়েছি! আমার সুখের সংসার ভেঙে ছাই করে দিলে!"
বাবা ভাবে, "ছেলে আমার এমন তো ছিল না! এত এত পড়ে শেষে এই শিখলে! এই করলে!"

ছেলে/মেয়ে দেখেছে____, মা চাচা/ফুফু/দাদির দোষ (সত‍্য হলেও) বলে বেড়াচ্ছে বাপের কাছে। আর বাপে সেই কথা শুনে সংসার ভাগ করেছে। চাচার সাথে, ফুফুর সাথে, দাদা-দাদির সাথে (যৌক্তিক হলেও) বিবাদ মেটাবার চেষ্টা না করে বরং দূরত্ব বাড়িয়েছে। সন্তানে শিখছে __ "অন‍্যের অন‍্যায় হলে মিলে মিশে না থেকে বরং দূরত্ব তৈরি করতে হয়।"
আসলেই কী ছেলের দোষ?
আসলেই কী ছেলে-বউ খারাপ?

কিন্তু আমরা অনুধাবন করি নে, বুঝার চেষ্টাও করি নে যে, কোনো ক্লাসের বইয়েই "টু দ‍্য পয়েন্ট" ধরে লেখা থাকে না___ ঝগড়া কী করে মেটাতে হয়। সুখে থাকার পেছনে ধৈর্য, সহনশীলতার__মতো গুণগুলোর কথা বলা থাকলেও তা আমরা শুধু পরীক্ষায় পাশের জন‍্যে পড়ি। শিখি নে, শেখবার কথা বলি নে। শেখাবার কথাও ভাবি নে। চারপাশের কেউ এই গুণগুলো যখন মেনে চলে না, তখন ছোট মনে আপনিই জন্মে এগুলো শুধু উত্তরপত্রে লেখার বিষয়।
অথচ সবাই আমরা ভালোটা চাই, নিজে "ভালো" দেবার কথা চিন্তাতেও আনি নে। আমরা তাই শিক্ষার্থী নই, বিদ‍্যার্থী। শিক্ষক নই, বিদ‍্যাদাতা।



যাইহোক, ছোটদের একটা বিষয় খেয়াল করবেন; যা নিষেধ করছেন __ঠিক তাই করছে। আসলে ছোটরা অনুকরণ প্রিয়। বাপ-মা-বড়রা যা করে তার নকল করার চেষ্টা করে। আর এই অনুকরণটাই গেঁথে যায় কচি মনের কোনো এক গহীন দেয়ালে। কাঁচায় কাঁচায় গড়ার সময় কামার-কুমোরে যে গড়নটা দেয় সেইটেই যে পাকা হয়ে থাকে__কে না তা জানে! তারপর যখন সে অনুরূপ বা কাছাকাছি কোনো বিপদে পড়ে, যখন সে অন্ধের মতো হাড়তে ফিরতে থাকে সমাধানের পথ, তখন অবচেতনভাবেই মনের গভীরের সেই ছোটবেলার ঘটনার ছায়া সামনে আসে। আলো দেখায়। তাকেই সে তখন পথ ভেবে নেয়। ভাবে সমাধান
নিজের বেলাতেও একটু খেয়াল করে দেখবেন; মিলে যাবে।

আপনি/আমি ভাইয়ের সাথে, বোনের সাথে ঝগড়া করছি; আর ছেলে/মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলছি, 'আরে নাহ্! আমার ছেলেরা/মেয়েরা এমন করবে না। কখনোই না!"
কিন্তু এ কী সম্ভব? ভাবেন তো। গড়ার সময়ে বাজে গড়া কাঁচিতে কী ধান কাটা যায়? ও কী "দোষ-ত্রুটি নিয়েও মিলে-মিশে থাকা"টা শিখছে?

তাদের সামনেই আপনি/আমি ভাইয়ের/বোনের খারাপ দিকটাই করছি আলোচনা। খারাপ দিক সবারই থাকে, যেমন আমার আছে। স্বীকার না করলেও আপনারও থাকবে। একই ভাবে আমাদের সন্তানদেরও দোষ-ত্রুটি থাকবে। সেটা নিয়েই বাঁধাবে ভাইয়ে-ভাইয়ে/বোনে-বোনে ঝগড়া।

আমরা মিলে মিশে থাকলে তবেই তো ছোটরা মিলে মিশে থাকার "নকল"টা করতে পারবে।



সন্তানকে শেখাই___ দাদা-দাদির থেকে নানা-নানি বড়; অথচ আমার কোনো মেয়ে নেই। নানা-নানি আমি কোনোকালেই হতে পারব না।
তাদেরকে শেখাই___ চাচা-চাচির থেকে মামা-খালার গুরুত্বই বেশি (উল্টোটাও হচ্ছে)। আর আশায় বুক বাঁধি ছেলেরা আমার মিলে মিশে থাকবে!
হিসেব কী মিলবে শেষ বেলাতে?
আসলে আমরা আশার ছলনে ভুলি চুপিসারে নিজেরই বুক ভাঙার আয়োজন করে রাখি একটু একটু করে তা আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি নে।

কিন্তু আমরা শেখাই নে, আঘাতে শরীরের দু'টো হাতই সমান ব‍্যথা পায়। অনুভূতি সব সমান। দু'টো হাতই আমাদের সমান যত্নের দরকার, তেমনি দু'পরিবার সমান গুরুত্বের।
শেখাই নে, যার সাথে বিবাদ শুধু তার সাথেই ভালো সম্পর্ক গড়তে পারি। শুধু শত্রুর সাথেই শান্তি-চুক্তি করতে পারি, করা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০২১ রাত ২:০১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×