অনেকদিন পরে, আপনাদের মন দ্বারে। কেমন আছেন সকলে? যাইহোক কথা না বাড়ায়ে তাড়াতাড়ি, আসল আলোচনা পাড়ি।
যুক্তরাষ্ট্র আর তার ইউরোপের দোস্তরা মিলে জাতিসংঘের ম্যানডেট ‘রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’ (আরটুপি) ব্যবহার করে লিবিয়ার মতো জোট মুক্ত, আর সুন্দরী বউ (জ্বালানী) থাকা রাষ্ট্রে হামলে পড়েছিল। সেসব দেশগুলো ধ্বংস করে তবেই ছেড়েছে। তখন কেউ কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায়নি, নাক উঁচু করেনি। কলোসিয়ামের কালো সিটে বসে অসম রক্তক্ষয়ী গ্লাডিয়েটরসের মরণ খেলা দেখে মজা নিয়েছে। (যুদ্ধ কখনোই শান্তি আনে না) আর সেই একই ফান্দে ফেলিয়া রাশিয়া যেই না তাহাদের এক পড়শিকে পাকড়াও করিতেছে, ওমনি সকলে মিলিয়া কাঁই কাঁই করিয়া উঠিতেছেন! কিন্তু ফাঁদটা তো একান্ত আপনার, নিজেদের!
এখন তো মনে হচ্ছে, রাশিয়ার ওপর ওইসব স্যানশন ম্যাঙশন কিছুই দেবে না। দেখেন কী হয়।
গোলান মালভূমি, পূর্ব জেরুজালেম নিতে সাহায্য করে তা ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল ট্রাম্প। তা অবৈধ ছিল না? শত শত মা'র বুক খালি হচ্ছে এখনো। স্বাভাবিক; স্বদেশের স্বাধীনতা সবাই চায়। (হিংসাকে সমর্থন করিনে) কিন্তু গরীবের গলায় পা দেয়ায় তখন কেউ গলা তোলেনি। ইনসাফ তো মাজহাব দেখে আসে না। ইনসাফ কানা। ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে পুতিন ঠিকই ট্রাম্পিয় কায়দায় স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে নিজের সুবিধা নিতে ইসরায়েলে কাজ করেছে ঠিক একই ভাবে রাশিয়াও এগুচ্ছে।
বিভিন্ন দেশে সরকার পরিবর্তনে উঙলি করে যুক্তরাষ্ট্র। তার সমর্থক পুতুল খেলা পাতাবার পায়তারা করে। সর্বশেষ ভেনেজুয়েলায় করেছে এই আকাম। ইউক্রেনে পুতিনও তো ইউএসএ-র মতোন সেই পুতুল সরকার বসানো নিয়েই ইনিয়ে-বিনিয়ে এই কাজের জন্যই সবকিছু করছে!
পথ তাদের একই। বুশ-বারাক "অস্ত্র-সন্ত্রাসের বিশাল মজুদে''র মুলো দেখায়ে মানুষ মারার খেলা খেলেছিল, আর আজ রাশিয়া গাইছে "গণহত্যা ঠেকানোর গান"। মূল উদ্দেশ্য একই, শক্তি দেখানো, নিজের নিরাপত্তার ন্যাকামি ধো তুলে খেলাচ্ছলে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ মারা। তারপর ওবামা ছাঁদে হয়তো বলবে ____সরি।
আগের ব্যর্থতা থেকে, আফগান, সিরিয়া, ইরাক, ইয়ামেন, লিবিয়ায় হামলার ভুল থেকে এরা শেখেনি। শেখেনি কোনো মোড়লই। রাশিয়াও না। আর কুকুরের লেজ সোজা হবে বলে মনে হয় না।
আগের স্নায়ুযুদ্ধ শেষে বড় মাথাদের কেউই আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের দাবনার জোর দেখায়ে গেছে। ইউক্রেনে এ হামলা সেই বাহুবল প্রকাশের একটা রূপ। নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে, শুধুই নিজেদের সুবিধা বিচার করে যাওয়া ছোটলোক হ্যায় এইসব। নিজের স্বার্থের বাইরে যদি কমজোরের মাথায় ছায়া না হতে পারে তাহলে সে কিসের বড়?
ছবি: @mro_dessine
বিশ্লেষণ: আল জাজিরা থেকে খানিকটা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:১৩