ওই.. ওই খানে আকাশের ওই মাথায় সুয্যো-মামু মাত্তর শীত-কম্বল মুড়ি দিয়ে লুকিয়েছে। তাই ভাবলাম, ...নাহ্! থাক। আজগে আর নাইবা গেলাম আয়ুকমার বাতাসে বুক ভরতে।
পত্রিকার মুখে মুখ চেয়ে বসেছি। এমন সময়ে এই ইট-লোহার বাগানের চারপেয়ো হরেকরকম ভ্রমরের "..প্যাঁ পু" .."টুংটাং" "...পিপ্ পিপ্'' সব ছাপায়ে মিহি একটা সুর সচকিত করে গেল।
___"না, এই হতশ্রী বাগানে এই, এই অলি!" ---সন্দেহ হলো নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর।
কিন্তু না, আবার। আহা কী সুর...! খুব চেনা। তবুও পারছি নে ধরতে! আসছেই না। ধীরে ধীরে ব্যালকনিতে গিয়ে চাইলাম নিচে। চায়ের কাপ পড়ে সামনে। ছোট্ট বাঞ্চোর তারে তারে খেলিছে সুরের অলিদল।
আসি আসি করেও কথাগুলো মনে কত্তে পারলাম না। বছর সাতেক আগে ঢাকা চিড়িয়াখানায় দেখা একটা হরিণের কথা মনে পড়ল। সেটাই প্রথম। অনেক গুলো হরিণের মধ্যে শুকনা-পাতলা একটায় চোখ আটকে গিয়েছিল। কেমন যেন একটু অন্য রকম। ছলছল বড় বড় চোখে ইতি-উতি চাইছে। দর্শকের হট্টগোল, খাবার, সাথীদের সাবলীলতা.. সব ছাপায়ে ওর মন কী যেন খুঁজছে। অহেতুক আশংকায় বড় একটা শ্বাস নিতে গিয়েই কারণটা টের পেলাম।
একটু চেষ্টা করতেই নির্দিষ্ট জিনিসটা পেয়ে গেলাম। উত্তরের বাতাসে হেলে দুলে নমস্কার করছে প্রায় গাছ ভরা হলুদ হলুদ --বুনো বাবলা!
আজ এত বছর পরে এই সজল চাহনির খুশি পাঠ্যযোগ্য হয়ে উঠেছে। যতই শহুরে চিড়িয়াখানায় বন্দি করে রাখো না কেন মন সামান্য বুনো বাবলার গন্ধেই শেকড়ের স্মরণে কাতর হয়ে ওঠে।
ভাবতে ভাবতে সুরও দিয়েছে ধরা ততক্ষণে হরিণীর সেই চাহনির মতো করে...
___"হারায়ে সেই মানুষে, দেশ-বিদেশে
আমি, দেশ-বিদেশে বেড়াই ঘুরে
কোথায় পাবো তারে
...আমার মনের মানুষ যে রে!"
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩