somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাকিব আমাকে মড্রিচের ব্যাপারটা বুঝতে সাহায্য করেছেন

০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টের অনেকের সাথেই আমার যোগসূত্রতার কমন মাধ্যম হচ্ছে- ক্রিকেট। তো স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন সময়ে, আমার নিউজফীড অনেকটা ক্রিকেটময় হয়ে যায়। ৭০-৮০ শতাংশ, এমনকি কখনো শতভাগ ক্রিকেট কেন্দ্রিক লেখা চোখে ভাসে। কিন্তু গতকাল মনে হয় ক্রিকেট সংক্রান্ত ৫ শতাংশ লেখাও চোখে পড়েনি।
তামিম এত ভালো খেললেন, সাকিব ব্যাটে-বলে ও অধিনায়কত্বে ‘সব্যসাচী’ হলেন, মুস্তাফিজ উইকেট-টেকার রুপে আবির্ভূত হলেন, নাজমুল অপু, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, রনি বা রুবেলদের মতো ক্রিকেটাররা পার্শ্বতারকা হলেন- অথচ সে নিয়ে কারো কোনো উচ্ছ্বাস তো নেই-ই, আগ্রহও নেই বুঝি! হাতে গোণা দু-চারজন ছাড়া কেউই কোনো ক্রিকেটীয় আলাপে যাননি।

আজকের কথা বলি। হ্যাঁ, আজ একটু কথা হচ্ছে। শতাংশে তুলনা করলে হার-টা খানিক বেড়েছে, বোধহয় ৩০-৪০ শতাংশ হবে। ৫০ শতাংশ হবে কি? কি জানি! হতেও পারে, নাও পারে।

ক্রিকেটের দুটি গ্রুপে আছি। একটা ফ্রেন্ড সার্কেলের গ্রুপ, সেটা তাই আলোচনার বাইরে রাখি। কিন্তু অপর গ্রুপে ম্যাচ চলাকালীন সময়ে রীতিমতো আলোচনার ঝড় উঠে। পোস্টের পর পোস্ট, লেখার পর লেখা, আলোচনার পর আলোচনা, কত কি! বাংলাদেশ জিতলে তো কথা নেই, পোস্ট ও আলোচনার হার বহুগুণে বেড়ে যায় তখন।
কিন্তু সেই ক্রিকেটরঙ্গ গ্রুপ রীতিমতো ঘোষণা দিয়েই সব ধরণের ক্রিকেট-কথা বন্ধ রেখেছে। ক্রিকেটের উঠোনে যেনো বাচ্চাদের রক্ত লেগেছে! ক্রিকেট নিয়ে কথা বা আলোচনায় বিতৃষ্ণা বোধ না-হলেও, আগ্রহ নেই কারও!

মাশরাফি আমার অতি পছন্দের মানুষ। সেটা তাঁর লড়াকু মনোভাব বা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নব উচ্চতায় উত্তরণের কারণে নয়- বরং তাঁর জীবন-দর্শন গুণে!
তিনি একবার বলেছিলেন- “জীবনটা যদি একশোতলা একটা ভবন হয়, তাহলে ক্রিকেট হচ্ছে সেই একশোতলা ভবনের মাত্র দুটি তলা। অবশ্যই কিছু কিছু প্লেয়ারের কাছে ক্রিকেটই ধ্যানজ্ঞান, ক্রিকেটই সবকিছু। তবুও এর বাইরেও তাদের একটা জীবন আছে, জগৎ আছে। বাবা-মা আছেন, স্ত্রী-সন্তান আছে। সে হিসেবে বলতে গেলে তো ক্রিকেট কিছুই না। তাই জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, প্রতি মুহূর্তে আমাদের বেঁচে থাকা!”
আমাদের সেই বেঁচে থাকাটাই যখন সংকটে, তখন স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেট অতি তুচ্ছ ও নগণ্য হয়ে যায়।

সাকিব আল হাসানের ব্যাপারটা দেখুন। কি দারুণ দেখালেন তিনি! ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং বাদই দিলাম না-হয়, তাঁর স্মার্ট ক্রিকেট-ব্রেইনের সার্থক ব্যবহার করে স্মার্ট অধিনায়কত্বের স্বরুপ দেখালেও, সে নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বসিত হতে পারছেন না অনেকেই। সেই ২০১৪ সালে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি বলুন, কিংবা এই ক’দিন আগের কলম্বো-কান্ড, সর্বত্রই সাকিবকে ডিফেন্ড করে আসা ক্রিকেট দর্শকদের অনেকেরই, সাকিবের আমেরিকা-বিজয় নিয়ে কথা বলতে আগ্রহ নেই, ইচ্ছে নেই।
‘বলেছিলাম না, সাকিব বাই বর্ন লিডার।’ মনে করিয়ে দিয়ে যে খানিক ক্রিকেটজ্ঞান জাহির করবেন, সে উৎসাহও নেই অনেকের।
সাকিব এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন-
“আমাদের এখানে রাজনীতির খবরই তো সব। সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত রাজনীতি নিয়ে আলোচনা দেখি। ফলে রাজনৈতিক খবর দেখি।”
-এতে কোনো দল বা মতের প্রতি পক্ষপাত তৈরী হয়?
“না, না। সেটা হলে ভেতরের মজাটা বুঝতে চেষ্টা করতে পারব না। আমি একটা একটা ঘটনার সবগুলা মত বোঝার চেষ্টা করি। কী ঘটছে, ভাবি। খুব কঠিন ব্যাপার।”
কতটা কঠিন, এখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন সাকিব!

বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় লুকা মড্রিচের ব্যাপারে প্যাভিলিয়নে একটা ফিচার পড়েছিলাম। যেখানে বলা হচ্ছিল- বিশ্বকাপ জিতলেও মড্রিচ ক্রোয়েটদের মন জয় করতে পারবেন না। দূর্নীতি, বিচার ব্যবস্থা ও রাজনীতিবিদদের অসততা নিয়ে বিরক্ত ক্রোয়েটদের জনগণ। সেখানে মড্রিচও নিজেকে বাঁচিয়ে অসততার আশ্রয় নিয়েছেন বলেই বিশ্বাস ক্রোয়েটদের। সেজন্য জনগণও মড্রিচকে সেভাবে গ্রহন করতে পারেন না।
আমি আশ্চর্য্য হয়ে ভেবেছি, কি মরণপণ চেষ্টায় নিজেকে উজার করে দিচ্ছেন লুকা মড্রিচ! তারপরও জনগণ কীভাবে তাঁকে নয়নের মণি না করে, তাঁর অতীত নিয়ে পড়ে থাকে! মড্রিচের কি এমন অপরাধ, যা তাঁকে ক্রোয়েটদের হৃদয়ে স্থান নিতে দিচ্ছে না?
সাকিব আল হাসান, আমাকে মড্রিচের ব্যাপারটা কিছুটা হলেও বুঝতে সাহায্য করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:০৯
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×