somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোরা বাঙালি হইয়া যা (শেষ পর্ব)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পূর্বের অংশ তোরা বাঙালি হইয়া যা

১৯৭২ সালের ২৪ এপ্রিল মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষে “বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর আবেদনপত্র“ শীর্ষক এক দাবিনামা পেশ করেন। এই আবেদন পত্রটি মুলত ইতিপূর্বে ১৫ ফেব্রুআরিতে পেশকৃত দাবি-দাওয়ার আরো বিস্তারিত ভার্সন যেখানে উক্ত চার দফা দাবীর যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হয়। জিবলু রহমানের (২০১৮) ভাষ্যমতে,
“বঙ্গবন্ধু এ দফাগুলো মানতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি মানবেন্দ্র লারমাকে বলেন, ‘যা বাঙালি হইয়া যা’। (রহমান, ২০১৮, পৃ. ১৯)।
তবে লেখক বঙ্গবন্ধুর এই উক্তির সমর্থনে নির্দিষ্ট কোন সুত্র উল্লেখ করেননি। এছাড়া বাঙালি পুনর্বাসনের ব্যাপারেও কিছু উল্লেখ করেননি।

গোলাম মোর্তোজা ‘ শান্তিবাহিনী গেরিলা জীবন’ (২০০০) বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে, ১৫ ফেব্রুয়ারির ১৯৭২ সালে মং রাজা মং প্রু সাইনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন, সেখানে এম এন লারমা, কে কে রায়, বিনীতা রায়, সুবিমল দেওয়ান ও জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা ছিলেন।
তিনি আরো দাবী করেছেন যে, “বঙ্গবন্ধু তাদের সাথে দেখা করেননি”। (মোর্তোজা, ২০০০, পৃ-১৯)।
২৪ এপ্রিল ১৯৭২ তারিখের মানবেন্দ্র লারমার দাবী প্রসঙ্গে, সন্তু লারমার সাথে সাক্ষাৎকারের সুত্রোল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন,
“কিন্তু এই দাবিগুলোকে বঙ্গবন্ধুও কোন পাত্তাই দিলেন না। তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গীতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘যা তোরা বাঙালি হইয়া যা’।
এই কথা বলতে বলতে বঙ্গবন্ধু উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তুড়ি মারতে মারতে বঙ্গবন্ধু, এক লাখ, দু লাখ, ....... দশ লাখ পর্যন্ত গুনে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে বলেন,
‘প্রয়োজনে দশ লাখ বাঙালি ঢুকিয়ে দেব। তোরা সংখ্যায় পাঁচ লাখ। প্রয়োজনে এর দিগুণ বাঙালি ঢুকিয়ে দেব পার্বত্য চট্টগ্রামে। তখন কী করবি?”। (মোর্তোজা, ২০০০, পৃ. ২০)।

শরদিন্দু শেখর চাকমা (২০১১) রচিত, ‘বঙ্গবন্ধু ও পার্বত্য চট্টগ্রাম’ বইয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় সংঘটিত পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত অনেক ঘটনা উল্লেখ থাকলেও বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবান কিংবা পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসনের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা (১৯৯১) রচিত ‘ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে পার্বত্য স্থানীয় সরকার পরিষদ’ বইটিকে তৎকালীন ঘটনাবলীর একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তিনি ২৯ জানুয়ারি ১৯৭২, ১৫ ফেব্রুআরি ১৯৭২ এবং ২৪ এপ্রিল ১৯৭২ তারিখের প্রতিনিধিদলের এবং তাদের পেশকৃত দাবি-দাওয়ার উল্লেখ করেছেন। শরদিন্দু শেখর চাকমার মত তিনিও বঙ্গবন্ধুর বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবান কিংবা পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসনের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেননি।

সর্বজন শ্রদ্ধেয়া আমেনা মহসিন (২০০২), রচিত ‘দি পলিটিক্স অব ন্যাশনালিজমঃ দি কেস অব দি চিটাগং হিল ট্রাক্টস বাংলাদেশ’ বইয়ে বলা হয়েছে যে, ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুআরিতে এম এন লারমার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্রগ্রামের এক প্রতিনিধি দল শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাৎ করে। নিম্নোক্ত চার দফা দাবিনামা পেশ করেনঃ
১। নিজস্ব আইন পরিষদসহ পার্বত্য অঞ্চলের জন্য স্বায়ত্তশাসন।
২। বাংলাদেশের সংবিধানে ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্রগ্রাম ম্যানুয়াল বহাল।
৩। উপজাতীয় রাজাদের দফতর সংরক্ষণ করা।
৪। বাঙালি অনুপ্রবেশ এবং ১৯০০ সালের ম্যানুয়াল সংশোধনের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক বিধি ব্যবস্থা।

এই দাবিনামার প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে The CHT Commission (1991 ) এর সুত্রোল্লেখ করে লেখিকা জানান যে,
“উপরের দাবিগুলো শেখ মুজিবের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে শুধুমাত্র একটি ‘জাতি’ থাকতে পারে। তাই, তিনি পাহাড়িদেরকে পৃথক পরিচিতি ভুলে যেতে এবং বাঙালি হয়ে উঠতে বলেছিলেন। তিনি বরং পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি পাঠিয়ে পাহাড়িদেরকে সংখ্যালঘু বানানোর হুমকি দেন।“ (The above demands were unacceptable to Sheikh Mujib. He insisted that there could be only one ‘nation’ in Bangladesh. He therefore asked the Hill people to forget about their separate identity and to become Begnalis. He further threatened to turn them into minorities by sending Benglaies in the CHT.) (Mohsin, 2002, p. 58)।

প্রায় একই বক্তব্যের অনুরণন ঘটেছে মিজোরাম সরকারের ত্রান ও পুনর্বাসন পরিচালক এস পি তালুকদার (১৯৯৪) রচিত, ‘CHAKMAS: An Embattled Tribe’ গ্রন্থে। লেখকের ভাষ্যমতে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুআরিতে এম এন লারমার প্রতিনিধি দলে আরো ১৮ জন ছিলেন। উল্লেখ্য যে, তিনিও তাঁর দাবীর সমর্থনে কোন সুত্র উল্লেখ করেননি।

ইফতেখারুজ্জামান (১৯৯৮) এর ‘Ethnicity and Constitutional Reform in South Asia’ গ্রন্থে ১৯৭২ সালের ফেব্রুআরিতে এম এন লারমার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদলের শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাৎ এবং চার দফা দাবী পেশ করার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হয়েছে। আরো জানানো হয়েছে যে, নতুন প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্ব কর্তৃক দাবীগুলো মেনে নেয়া হয়নি। চার দফার তালিকা থাকলেও বঙ্গবন্ধুর প্রত্যুত্তর বা প্রতিক্রিয়ার বিস্তারিত উল্লেখ ছিল না।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আফতাব আহমাদের (১৯৯৩) গবেষণায় উঠে এসেছে যে, এমএন লারমা সংবিধান প্রণয়নের কাজে নিয়োজিত সকলকে কনভিন্স করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যে স্বায়ত্ত্বশাসন এবং পৃথক আইন পরিষদ অপরিহার্য। এমনকি, পাহাড়িদের জন্যে আলাদা পরিচিতি, তাদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যে স্বায়ত্ত্বশাসন এবং আলাদা আইন পরিষদের দাবী নিয়ে ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণীত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এমএন লারমা একাধিকবার খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং শেখ মুজিবের সাথে দেখা করে দাবী আদায়ের প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। এমনি এক সাক্ষাৎকালে, তাদের দু’জনের মধ্যে সৃষ্ট বাদানুবাদের এক পর্যায়ে শেখ মুজিব হুমকি দিয়েছিলেন যে, দশ লাখ বাঙালি পাঠিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভাসিয়ে ফেলবেন। (In one of these discussions, he had an altercation with Mujib who threatened to swamp the CHT with the influx of one million Bangalees). (আহমাদ, ১৯৯৩, পৃষ্ঠা-৪২)। তবে, বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবান সম্পর্কে লেখক কিছু উল্লেখ করেন নি।

প্রদীপ্ত খিসা (১৯৯৬), ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা’ বইয়ে ১৯৭২ সালের ২৯ জানুয়ারি এবং ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রতিনিধি দলের দাবীর বিষয়াদি বিবৃত করেছেন। ১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক ‘লাল পতাকা’র কাছে দেয়া এমএন লারমা’র সাক্ষাৎকার এবং ১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে রাঙামাটিতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বিষয়াদি উল্লেখ করেছেন। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন যে, খসড়া সংবিধানের উপর আলোচনাকালে এমএন লারমা ১৯৭২ সালে বলেন,

“এ সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের কথা নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিগণ বৃটিশ ও পাকিস্তানী আমল হতে নির্যাতিত ও বঞ্চিত হয়ে আসছে। আমি দুঃখের সাথে বলছি যে, আমাদের জাতিসত্তার কথা ভুলে যাওয়া হচ্ছে, অথচ আমরা বাংলাদেশের মানুষের সাথে একাত্ম হয়ে বসবাস করতে চাই। ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নে জাতিসত্তার স্বীকৃতি রয়েছে। আমি সংবিধানে উপজাতীয় জনগণের অধিকার স্বীকার করে নেয়ার আহবান জানাচ্ছি”। (খীসা, ১৯৯৬, পৃ-৪৯)। তিনিও বঙ্গবন্ধুর বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবান কিংবা পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসনের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেন নি।

সালাম আজাদ (২০১৩) তাঁর ‘শান্তিবাহিনী ও শান্তিচুক্তি’ বইয়ে উল্লেখ করেছেন,

“দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দেখা করেন এবং পাহাড়িদের অসন্তোষ উত্থাপন করে তা সমাধানের দাবী জানান। বঙ্গবন্ধু মানবেন্দ্র লারমাকে বাঙালি হয়ে যাবার কথা বলেন।” (আজাদ, ২০১৩, পৃ-১২)।

প্রায় অনুরূপ মতামত ফুটে উঠেছে, এস মাহমুদ আলী (১৯৯৩) এবং সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের (২০১৮) কন্ঠেও। উভয়েই মোটামুটি কাছাকাছি ধরণের মতামত ব্যক্ত করে জানান যে, এম এন লারমার নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্লুয়ারি এক প্রতিনিধিদল স্বায়ত্তশাসন, ১৯০০ সালের ম্যানুয়াল পুনর্বহালসহ ৪ দফা দাবী পেশ করে। বঙ্গবন্ধু এই দাবিগুলোকে বিচ্ছিন্নতাবাদী দাবী বলে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং প্রতিনিধিদলকে বাঙালি হওয়ার উপদেশ প্রদান করেন। তবে এই তিনজনের কেউই পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসন সংক্রান্ত বঙ্গবন্ধুর হুমকির ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেন নি।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট সংক্ষিপ্তভাবে তুলে এনে কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ (২০১৪) তাঁর ‘পার্বত্য চট্টগ্রামঃ সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝরনাধারা’ বইয়ে ১৯৭২ সালের ২৯ জানুয়ারি, ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ২৪ এপ্রিলের প্রতিনিধিদলের দাবি পেশ করার ঘটনাবলী উল্লেখ করেছেন। মানবেন্দ্র লারমা’র দাবীর প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন,

“মুজিব এর একটিও মানেননি; শোনা যায় তিনি মানবেন্দ্র লারমাকে বলেন যে, ‘যা বাঙালি হইয়া যা’।“ (আজাদ, ২০১৪, পৃ-১৮)। তবে পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসনের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেননি।

সুবীর ভৌমিক (১৯৮৬) রচিত ‘ Insurgent Crossfire: North-East India’ বইয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের অনেক অজানা তথ্য উঠে এসেছে । তার দাবি মতে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সতের সদস্যের এক প্রতিনিধিদল মং রাজা মং প্রু সাইন এবং এম এন লারমা’র নেতৃত্বে শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাৎ করে চার দফা দাবী সম্বলিত এক স্মারকলিপি পেশ করেন। ঐ স্মারকলিপির একজন স্বাক্ষরদাতা হিসেবে উপেন্দ্রলাল চাকমার নামোল্লেখ করে, তাঁর সাথে এক সাক্ষাৎকারের সূত্রে লেখক জানিয়েছেন যে, উপজাতিদের দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর স্বীকার করে নেন যে, পার্বত্যাঞ্চল পিছিয়ে রয়েছে, তাই বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার পর্যায়ে আনতে উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে। তবে তিনি স্বায়ত্বশাসনের এবং পৃথক জাতিসত্ত্বার দাবী মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছিলেন,

“ তোমাদের এটা অস্বীকার করার কোন কারণ নেই যে,বাংলাদেশের সকল মানুষ বাঙালি। সুতরাং স্বশাসনের কথা ভুলে বাড়ি ফিরে যাও, আর বাঙালি হয়ে যাও।“ (All people of Bangaldesh are Bengalis, you have no reason to deny this reality. So forget about self-governance, go home and become Bengalis. ) (ভৌমিক, ১৯৯৬, পৃষ্ঠা- ২৫৬)।

তবে, তাঁর বইয়েও পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসনের কোন উল্লেখ নেই। স্মরণযোগ্য, অন্যান্য লেখকদের মতে, প্রতিনিধি দলে ৭ জন ছিলেন, তন্মধ্যে উপেন্দ্রলাল চাকমার নাম ছিল না।

জামাল উদ্দিন (২০১৬) এর ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস’ বইয়ে এম এন লারমা কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য বিশেষ মর্যাদা, নিজস্ব আইন পরিষদ এবং পার্বত্য অঞ্চলের জন্যে স্বায়ত্তশাসনের দাবীর প্রেক্ষিতে আইন প্রণেতাদের পক্ষে এমন দাবী মেনে নেয়া সম্ভব ছিল না বলে মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে। সেই সাথে উপজাতিদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর সহানুভুতির প্রসঙ্গ ও উঠে এসেছে। তবে, বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবান কিংবা পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসন সংক্রান্ত কোন কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

উপরোল্লিখিত বইসমূহ বা গবেষক/লেখকগণই এ সংক্রান্ত সমস্ত সূত্রের একমাত্র এবং চুড়ান্ত উৎস হতে পারে না। এর বাইরেও আরো অনেক বই বা গবেষক/লেখক অবশ্যই আছেন। তবে, যে কয়েকজনের প্রকাশনা পর্যালোচনা করা হয়েছে, তাতে কয়েকটি তথ্যের পার্থক্য লক্ষ্যণীয়।

যেমনঃ

প্রথমত, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ তারিখে বঙ্গবন্ধু অফিসে ছিলেন না। উক্ত তারিখের প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা নিজেই তা উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবী করেছেন যে,

“ নির্ধারিত সময়ে তিনি (বঙ্গবন্ধু) জরুরী কাজে বাইরে থাকায়, প্রতিনিধি দল তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেনি।“ (চাকমা, ১৯৯১, পৃ-৫০)।

সুতরাং, যেসব লেখক/গবেষক দাবী করেছেন যে, উক্ত তারিখে পেশকৃত দাবীর প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু এমএন লারমাকে পাহাড়িদেরকে বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন অথবা পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসনের হুমকি দিয়েছিলেন– তাদের দাবী কতটা নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে, সেটা পাঠকগণের বিবেচ্য। স্মরণীয় যে, আমেনা মহসিন (১৯৯৭), সালাম আজাদ (২০১৩), মাহমুদ আলী (১৯৯৩), সুবীর ভৌমিক (১৯৮৬) এবং এস পি তালিকদার (১৯৯৪) প্রমুখের ভাষ্যে বঙ্গবন্ধুর এমন প্রতিক্রিয়ার উল্লেখ রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, তথ্যসূত্রের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্নের উদ্রেক হতে পারে।

গোলাম মোর্তোজা (২০০০) সন্তু লারমা’র সাথে এক সাক্ষাৎকারের সূত্রোল্লেখ করে পাহাড়িদেরকে বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবানের পাশাপাশি বাঙালি পুনর্বাসনের হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন।

আমেনা মহসিন (১৯৯৭) সিএইচটি কমিশনের সূত্রে বাঙালি হয়ে যাওয়া এবং বাঙালি পুনর্বাসনের হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন। তবে বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রতিনিধিদলের সাক্ষাতের তারিখ বিবেচনা করলে, তার সূত্রের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটা স্বাভাবিক। কারণ ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ তারিখে পাহাড়ি প্রতিনিধিদলের সাথে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎ ঘটেনি। একই কারণে সিএইচটি কমিশনের দাবীর যথার্থতা নিয়েও প্রশ্ন করার সুযোগ রয়েছে।

আফতাব আহমাদ (১৯৯৩) বাঙালি পুনর্বাসনের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর এহেন দাবীর সূত্র হিসেবে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মালেকের সাথে ১১-১৩ মার্চ ১৯৮৯-এর সাক্ষাৎকার এবং ১২ এপ্রিল ১৯৮৭ সালের The Sunday Statesman পত্রিকায় প্রকাশিত এক লেখার নামোল্লেখ করেছেন। অপরদিকে সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম (২০১৮) সিদ্ধার্থ শেখর চাকমার সূত্রে বাঙালি পুনর্বাসনের কথা জানিয়েছেন।

সুবীর ভৌমিক (১৯৮৬) উপেন্দ্রলাল চাকমার সাথে সাক্ষাৎকারের সূত্র উল্লেখ করে ১৫ ফেব্রুয়ারিতে সতের সদস্যের এক প্রতিনিধিদলের বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের কথা জানিয়েছেন। এখানে একাধিক বিভ্রান্তি রয়েছে। যেমন, প্রতিনিধি দলে সাতজন সদস্যের কথা স্বয়ং জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা বলেছেন। আর, ১৫ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা হওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। তাই, উপেন্দ্রলাল চাকমার সূত্র কতটা নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে, সেটা বিবেচনার ভার পাঠকগণের হাতে ছেড়ে দেয়া হল।

তৃতীয়ত, ঐতিহাসিক তথ্য উদঘাটনে প্রাথমিক সূত্রের মুল্য অপরিসীম। ইতোমধ্যেই প্রখ্যাত ও স্বনামধন্য কিছু লেখক/গবেষকের লেখায় তথ্য বিভ্রাটের উদাহরণ উপরের অনুচ্ছেদে বিবেচনা করা হয়েছে। সুতরাং যাদের মতামত বা দাবীর সপক্ষে কোন সূত্রোল্লেখ করা হয়নি, তাদের বক্তব্যের গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয়ের ভার পুরোপুরি পাঠকের। উল্লেখ্য যে, সালাম আজাদ (২০১৩), হুমায়ুন আজাদ (২০১৪), এবং জিবলু রহমান (২০১৮) বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবানের কথা জানালেও কোন সূত্র উল্লেখ করেননি।

শরদিন্দু শেখর চাকমা (২০১১), জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা (১৯৯১) এবং প্রদীপ্ত খিসা (১৯৯৬) বঙ্গবন্ধুর বাঙালি হয়ে যাওয়ার আহবান কিংবা পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসন সংক্রান্ত কোন মতামত বা তথ্য উল্লেখ করেননি।

না বললেই নয় যে, ঘটনার সময় এবং সূত্রের গ্রহণযোগ্যতা বিচারে গোলাম মোর্তোজা’র বক্তব্য অন্য সকলের তুলনায় বেশী গ্রহণযোগ্যতার দাবীদার (মোর্তোজা, ২০০০, পৃ-২০ )। সেটা বিবেচনায়, ব্যাপারটা কি এমন দাঁড়াচ্ছে যে, শুধুমাত্র সন্তু লারমার সাথে গোলাম মোর্তোজা’র এক সাক্ষাৎকারের সূত্রেই দাবী করা হচ্ছে যে, বঙ্গবন্ধু মানবেন্দ্র নারায়ন লারমাকে বলেছিলেন,

“তোরা বাঙালি হইয়া যা” ? যদিও সন্তু লারমা ঐ প্রতিনিধি দলে ছিলেন না। যেমনটা ছিলেন জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা। অর্থাৎ সন্তু লারমাকেও শোনা কথার উপর নির্ভর করতে হয়েছে। কিন্তু তিনি কোথায় বা কার কাছ থেকে এ কথা শুনেছেন তার উল্লেখ এ বইয়ে নেই বা তিনি বলেননি।

বেশীরভাগ লেখকই বঙ্গবন্ধুর এমন আহবানের ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা, পরিস্থিতি এবং ঘটনার কোন বিবরণ দেননি। শুধুমাত্র, দুই জনের লেখায় ঘটনার কিছুটা আভাস পাওয়া যায়- তখন পরিবেশ-পরিস্থিতি কেমন ছিল। এই দু’জন হলেন গোলাম মোর্তোজা এবং আফতাব আহমাদ।

গোলাম মোর্তোজা জানিয়েছেন যে, বঙ্গবন্ধু “তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গীতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে ধমক দিয়ে” বাঙালি হয়ে যেতে বলেছিলেন। কাহিনী এখানেই শেষ হয়ে যায় না, যখন লেখক আরো জানিয়েছেন, “এই কথা বলতে বলতে বঙ্গবন্ধু উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।” (মোর্তোজা, ২০০০, পৃ. ২০)। আর, এই উত্তেজিত অবস্থায়ই তিনি পাহাড়ে দশ লাখ বাঙালি ঢুকিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।

আফতাব আহমাদ জানিয়েছেন যে, ১৯৭২ সালে এম এন লারমা শেখ মুজিবের সাথে একাধিক দফা আলোচনায় বসেছিলেন তাঁর দাবীসমূহ নিয়ে। তন্মধ্যে এক আলোচনায় তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়েছিল, যেখানে শেখ মুজিব পাহাড়ে দশ লাখ বাঙালি ঢুকিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। (আহমাদ, ১৯৯৩, পৃ-৪২)।

পরবর্তীতে, বঙ্গবন্ধুর গৃহীত একাধিক পদক্ষেপে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি কখনো উপজাতিদের জাতিসত্ত্বা পরিবর্তনের চেষ্টা করেননি। উল্টো, তিনি উপজাতিদের জাতিসত্ত্বা, স্বার্থ এবং অধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। এছাড়াও, তাঁর জীবদ্দশায় কোন বাঙালিকে পাহাড়ে পুনর্বাসনের জন্যে প্রেরণ করা হয়নি। বরং উপজাতিদের ভূমির অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতিসহ ভাগ্যোন্নয়নের জন্যে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এমনকি,

‍‍‍”বঙ্গবন্ধু লারমাকে বলেছিলেন তাঁর কিছু লোক চাকমাদের সম্পর্কে তাকে ভুল তথ্য দিয়েছিল, সেটা তিনি পরে বুঝতে পেরেছেন, এখন তিনি চাকমাদের জন্যে কিছু করতে চান।”। (চাকমা, ২০১১, পৃ-১১)।

উপরোক্ত আলোচনায় দেখা যায় যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‌’তোরা সব বাঙালী হয়ে যা’ এমন কোনো কথা বলেছেন তার নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই। এমনকি তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী অনুপ্রবেশের হুমকি দিয়েছিলেন এমন কোনো কথারও তথ্য প্রমাণ বা নির্ভরযোগ্য ভিত্তি পাওয়া যায় না। কাজেই বঙ্গবন্ধু নামে উপরোক্ত দোষারোপ সত্য, মিথ্য নাকি মিথ তা- পাঠকগণ ও ভবিষ্যত গবেষকদের বিবেচনার উপর ছেড়ে দেয়া হলো।

তথ্যসুত্রঃ
১। জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, (১৯৯৩). ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে পার্বত্য স্থানীয় সরকার পরিষদ. রাঙামাটি: স্থানীয় সরকার পরিষদ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
২। শরদিন্দু শেখর চাকমা, (২০০৬). মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্রগ্রাম. ঢাকা: অঙ্কুর প্রকাশনী।
৩। শরদিন্দু শেখর চাকমা, (২০১১). বঙ্গবন্ধু ও পার্বত্য চট্রগ্রাম. ঢাকা: বিভাস।
৪। উৎপল খীসা, (১৯৯৬). ফিরে দেখা শান্তি বাহিনীর গৃহযুদ্ধ স্বপ্নের অপমৃত্যু. ঢাকা: শ্রাবণ প্রকাশনী।
৫। সালাম আজাদ, (২০১৩), শান্তিবাহিনী ও শান্তিচুক্তি. ঢাকা: আফসার ব্রাদার্স।
৬। হুমায়ূন আজাদ, (২০১৪). পার্বত্য চট্টগ্রামঃ সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝরনাধারা (৪র্থ ed.). ঢাকা: আগামী প্রকাশনী।
৭। মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, বীর প্রতীক, (২০১৮). পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তি প্রক্রিয়া ও পরিবেশ- পরিস্থিতির মূল্যায়ন (৪র্থ ed.). ঢাকা: মাওলা ব্রাদার্স।
৮। জামাল উদ্দিন, (২০১৬). পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস. ঢাকা: বলাকা প্রকাশন।
৯। গোলাম মোর্তোজা, (২০০০). শান্তি বাহিনী গেরিলা জীবন. ঢাকা: সময় প্রকাশন।
১০। জিবলু রহমান, (২০১৮). পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা ও সমাধান (১৯৭২-১৯৯৮). সিলেট: শ্রীহট্ট প্রকাশ।
১১। Aftab Ahmed, (1993, November). Ethnicity and Insurgency in the Chittagong Hill Tracts Region: A Study of the Crisis of Political Integration in Bangladesh. Journal of Commonwealth & Comparative Politics, 31(3), 32-66.
১২। Amena Mohsin, (2002). The Politics of Nationalism: The Case of the Chittagong Hill Tracts Bangladesh (2nd ed.). Dhaka: The University Press Limited.
১৩। Subir Bhaumik, (1996). Insurgent Crossfire North-East India. New Delhi: Lancer Publishers.
১৪। S Mahmud Ali, (1993), The Fearful State: Power, People and Internal War in South Asia, New Jersey, Zed Books.
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×