somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন! দ্বীনকে কঠিন নয়, সহজভাবে পালন ও পেশ করি-

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(Make things easy, and do not make it difficult for the people)
সৃষ্টিগতভাবেই মানুষের মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। আর সে কারনেই তারা খুব সহজেই ভুল পথে পরিচালিত হয়। অনেকে ছোটখাট ভুল কোরে জুলুম করে। আবার অনেকে বড় বড় অপরাধ করে। এভাবে তারা নিজের উপরেই শুধু নয়, অন্যের উপরেও জুলুমের স্টিম রোলায় চালায়। ফলে নিজেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অপরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে মুনষকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে প্রেরন করেছেন। সেইসাথে মানব জাতি যেন শান্তিপূর্ণ ভাবে জীবন যাপন করতে পারে ও কল্যানপ্রাপ্ত হয় সেই লক্ষ্যে সহজ-সরল জীবনবিধান প্রেরণ করেছেন। শুধু তাই নয়, যুগে যুগে নবী বা রাসূল প্রেরণ কোরে সেই ঐশী বিধান সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার দিশা দেখিয়েছন। পবিত্র কোরআন হলো রসুল (সাঃ) এর উপর নাযিলকৃত সর্বশেষ ঐশী জীবনবিধান। জীবনকে সুন্দর ও সঠিকভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে এই বিধান যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলেই পরম শান্তি ও মুক্তি মিলতে পারে।

মানুষ অনেক সময় স্রষ্টা প্রেরিত বিধানকে ভুলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে। কেউ কেউ এতটাই উদাসীন হয়ে যান যে, স্রষ্টার বিধানকে ছেড়ে মনগড়া ভ্রান্ত পথে চলতে গিয়ে ক্ষতির মধ্যে পতিত হন। কেউ আবার নানা মুণির নানা মতের দোহাই তুলে সার্বজনিন বিধানকে কুক্ষিগত করে রাখতে চান। আবার অনেকে তো স্রষ্টা প্রেরিত সরল বিধানের উপর অন্যের কাছ থেকে ধার করা অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। শাশ্বত ঐশী বিধানকে অবজ্ঞা করা যেমন অন্যায়, তেমনি জটিল কোরে তোলার এখতিয়ারও কি কোন মানুষকে দেয়া হয়েছে? না, কখনই না। বরং স্বয়ং আল্লাহতায়ালা ও তাঁর রাসূল (সাঃ) তো সকল অতিরঞ্জন ও জটিলতা থেকে মুক্ত করেই দ্বীন ইসলাম পালনের শিক্ষা ও নির্দেশনা দিয়েছন। বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ মাত্রই এই দিকনির্দেশনাই মেনে চলা উচিত এবং যারা জানেন না তাদের কাছে সেভাবেই তুলে ধরা উচিত।

আল-কোরআন-
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:২৬) অর্থ- আল্লাহ তোমাদের জন্যে সব কিছু পরিষ্কার বর্ণনা করে দিতে চান, তোমাদের পূর্ববর্তীদের পথ প্রদর্শন করতে চান এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করতে চান, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, অত্যন্ত বিচক্ষণ।
(০৪:২৭) অর্থ- আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হতে চান, কিন্তু যারা প্রবল অনুরাগের অনুসারী তারা চায় যে, তোমরাও বিচ্যুত হয়ে পড় মহা বচ্যুতির পথে।
(০৪:২৮) অর্থ- আল্লাহ তোমাদের জন্য (পথকে) সহজ/ হালকা করতে চান। সৃজন করা হয়েছে মানুষকে দুর্বলরূপে।
সূরা আল-যুমার (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৩৯:১৮) অর্থ- যারা মনোযোগের সাথে কথা শুনে, অতঃপর তা থেকে যা উত্তম তার অনুসরণ করে, এরাই তারা- যাদেরকে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করে থাকেন এবং তারাই তো বোধশক্তিসম্পন্ন।
সূরা কাহফ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১৮:৮৮) অর্থ- এবং যে বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে কল্যাণ এবং আমার কাজে তাকে সহজ নির্দেশ দেব।
সূরা আল মায়েদাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৫:০৬) অর্থ- হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর এবং পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, অতঃপর স্বীয় মুখ-মন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।
সূরা হাজ্জ্ব (মদীনায় অবতীর্ণ)
(২২:৭৮) অর্থ- তোমরা আল্লাহর জন্যে শ্রম স্বীকার কর যেভাবে শ্রম স্বীকার করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন জটিলতা আরোপ করেন নাই। তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে কায়েম থাক। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও, যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে। সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ কর। তিনিই তোমাদের মালিক। অতএব তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।
সূরা আল বাক্বারাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০২:১৮৫) অর্থ- রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানব জাতির জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথনির্দেশ আর (ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী) মানদণ্ড/ বিচারের মাপকাঠি। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য কষ্টকর পরিস্থিতি কামনা করেন না, যেন তোমরা নির্ধারিত কাল পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহতা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও।
সূরা আত্ব-ত্বালাক্ব (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৬৫:৪) অর্থ- তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যারা মাসিকের ব্যপারে নিরাশ হচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস এবং যাদের এখনও মাসিক শুরুই হয়নি, তাদেরও (অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে)। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
(৬৫:০৭) অর্থ- বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যা দিয়েছেন, তদপেক্ষা বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে করেন না। আল্লাহ কষ্টকর পরিস্থিতির পর সহজসাধ্যতা এনে দেবেন।

হাদিছ-
Narrated Anas bin Malik:
The Prophet (sw) said, "Make things easy for the
people, and do not make it difficult for them,

and make them calm (with glad tidings ) and
do not repulse (them )

Reference: Sahih al-Bukhari 6125
In-book reference: Book 78, Hadith 152
USC-MSA web (English) reference: Vol. 8, Book 73, Hadith 146
.............................
Narrated `Aisha:
The Prophet (sw) never fasted in any month more than
in the month of Sha'ban. He used to say, "Do those
deeds which you can do easily, as Allah will
not get tired (of giving rewards) till you get bored and
tired (of performing religious deeds).
"The most beloved prayer to the Prophet (sw) was the one that was done regularly (throughout the life) even if it were little
. And whenever the Prophet (sw) offered a prayer he used to offer it regularly.

Reference: Sahih al-Bukhari 1970
In-book reference: Book 30, Hadith 77
USC-MSA web (English) reference: Vol. 3, Book 31, Hadith 191
........................
Narrated Anas:
We were with `Umar and he said,
"We have been forbidden to undertake a difficult
task beyond our capability
(i.e. to exceed the
religious limits e.g., to clean the inside of the eyes
while doing ablution).

Reference: Sahih al-Bukhari 7293
In-book reference: Book 96, Hadith 24
USC-MSA web (English) reference: Vol. 9, Book 92, Hadith 396
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×