২০০৫ সালের ঘটনা। রুয়েটের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আমি। ওয়ার্ল্ড এসেম্বেলি অব মুসলিম ইউথ বাংলাদেশ এর উদ্যেগে রুয়েটের ছাত্রদের নিয়ে বক্সবাজারে দুদিন ব্যপী একটা বিনোদন ও শিক্ষনীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সে অনুষ্ঠানে যার কথা আজো আমার স্বরণে আছে তিনি হলেন আহসান হাবিব ইমরোজ। এর আগে তার লেখা "মোরা বড় হতে চাই" নামে একটি অসাধারণ বই পড়েছিলাম।সেই বই পড়ার পর থেকেই তার প্রতি একটা বিশেষ শ্রদ্ধা আমার হৃদয়ে তৈরি হয়। এর পর কক্সবাজারে যখন তার সরাসরি বক্তব্য শুনি তখন সেই শ্রদ্ধা হাজার গুন বেড়ে যায়। তিনি ক্যরিয়ার গাইড নিয়ে সেদিন বক্তব্য রেখেছিলেন।কি অসাধারণ তার বাচন ভঙ্গি! উদাহরণ!সেদিন আমরা তার বক্তব্য শুনে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। কক্স-বাজার থেকে এসে আমরা অনেকে তার বইটি আবারও পড়ি এবং জীবনের জন্য এক নতুন লক্ষ্য স্থির করি।তার দেখানো পথে যেয়ে অনেক ছাত্র আজ সফলাতার দ্বারপ্রান্তে উপনিত হয়েছেন।
হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর এই প্রাণ প্রিয় মানুষটিকে আজ মিথ্যা অজুহাতে সরকার গ্রেফতার করে জেলে অন্তরীণ করে রেখেছে। আমি হতবাক সরকারের এহীন কর্মকান্ডে।
প্রোফাইল:
আহসান হাবীব ইমরোজ ভাই ছাত্রজীবন থেকেই শিক্ষা আন্দোলন নিয়ে seriously ভাবতেন।ছাত্র জীবন শেষ করার পর পরই নিজ এলাকা টাঙ্গাইলে একটি মডেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।এ প্রতিষ্ঠানটির জন্য বেছে নেন (প্রত্নতাত্মিক দিক থেকে মনোরম) বিখ্যাত করটিয়া জমিদার বাড়ীকে।ওয়াকফ্ এস্টটের বৈধ নিয়ম এবং অনুমোদন সাপেক্ষে নির্দ্ধারিত অর্থ পরিশোধ পূর্বক তিনি এটি ২৫ বছরের জন্য লীজ নেন।সেই পরিত্যাক্ত সুরম্য বাড়ীকে তিনি কষ্ট করে,প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করে Renovate করেন।এটি ছিল তার সাহসী, স্বপ্নাবিষ্ট এবং সুদূরপ্রসারী চিন্তার একটি Professionalপদক্ষেপ।আল্লাহর রহমতে কয়েক বছরের ব্যবধানেই তার স্কুল এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরী করে।দলমত নির্বিশেষে তিনি ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পান।তার স্বপ্নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান "লাইট হাউস" এর ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা বর্তমানে কয়েক হাজার এবং এ-ই আদলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৯ টি লাইট হাউস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
টাঙ্গাইলে ইমরোজ ভাইয়ের একটি সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হয়।প্রতিদিন কোন না কোন অনুষ্ঠানে তার দাওয়াত,এটা-সেটা বাড়তে থাকে।বিষয়টি ইমরোজ ভাইকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে।দল-মতের উর্দ্ধে উঠে সামাজিক সংস্কারের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়ার জন্য ইমরোজ ভাইয়ের যে কেৌশল তা বুঝতে পারেন তার আদর্শিক শত্রুরা।অপর পক্ষে স্থানীয় মুরুব্বীদের একটি অংশ এ গ্রহণযোগ্যতায় উত্সাহিত হয়ে খুব দ্রুত তাকে দলের জেলা (আমীর) র দায়িত্ব দিতে চান।এমত পরিস্থিতিতে তার পিএইচডি'র কোর্সওয়ার্ক এবং থিসিসের কাজ এর প্রেসার থাকায় তিনি (কেন্দ্রীয়) মুরুব্বীদের পরামর্শে ঢাকায় চলে আসেন।আল্লাহর রহমতে সম্প্রতি তার পিএইচডি ডিগ্রী কনফার্ম হয়।( সূত্র:মজিবর রহমান মঞ্জু ভাইয়ের ওয়াল থেকে)
বর্তমান স্বড়যন্ত্র:
প্রিয় ভাই আহসান হাবীব ইমরোজ আজ অনেকদিন নিষ্ঠুর কারাগারে অন্তরীণ। একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার অপরাধে এ নির্যাতন-নিপীড়নে বিবেকবান মানুষ হতবাক। তার প্রিয় লাইট-হাউজ স্কুলে আগুন দিয়ে ধ্বংসাত্মক আঘাত হানা হয়েছে। তার পরিবার আজ দিশাহীন।তার অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী,সহকর্মীরা বাকরুদ্ধ।
স্বার্থান্বেষী মহল তার স্কুলটি কিভাবে উত্খাত করা যায়,কিভাবে তাকে বেকায়দায় ফেলা যায় তার চেষ্টা অব্যাহত রাখে।স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজেকে করটিয়া জমিদার বাড়ীর উত্তরাধিকার দাবী করে সেখান থেকে স্কুল প্রত্যাহার করার জন্য নানা ধরনের ফন্দি আটতে থাকে। এটি একটি (জমিদার বাড়ী) প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন-এখানে যাদুঘর করা হবে ইত্যাদি কথা বলে সে এলাকায় একধরনের গুজব ছড়ায়। স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী-অভিভাবক রা এ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরী ও আন্দোলন গড়ে তোলেন। অভিভাবকদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে গত ৮ জানুয়ারী ইমরোজ ভাই টাঙ্গাইল যান এবং সেদিন রাতেই ইমরোজ ভাইকে পুলিশ তার বাড়ী থেকে আপোষ-মীমাংসার কথা বলে থানায় নিয়ে যায় এবং ঝামেলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লোকদের সংগঠিত করছেন এমর্মে একটি মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখান।এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক ইতিবাচক সামাজিক আন্দালন গড়ে ওঠে।বিষয়টি যেহেতু সাধারণ জনগণের সাথে সম্পৃক্ত এবং জনমত সর্বোতভাবে ইমরোজ ভাইয়ের পক্ষে তাই সংগঠন বিষয়টিকে রাজনৈতিক ভাবে না নিয়ে সামাজিক ভাবে সাধারণদের মাধ্যমে এগিয়ে নেয়ার জন্য নীতিগত ভাবে একমত হয়।এলাকায় ইমরোজ ভাইয়ের মুক্তির জন্য ধর্ম-বর্ণ-দল-মত নির্বিশেষে দারুণ আন্দোলন গড়ে ওঠে।প্রতিদিনই ছাত্র-ছাত্রী-অভিভাবক রা মিছিল-মিটিং করছে। এসব মিছিলে আ'লীগ এর লোকেরা-তার আত্বীয়রাও নেতৃত্ত্ব দিচ্ছেন। ( কে না চায় তার সন্তানটি একটি ভাল প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করুক)
কিন্তু অত্যান্ত দূ:খের বিষয় হলো তার গ্রেফতারের পর ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে ঢাকার রমনা থানায় গাড়ী পোড়ানো,সিলেটে পুলিশের ওপর হামলা ইত্যাদি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয় এবং গভীর রাতে তার স্বপ্নের "লাইট-হাউস" স্কুলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।তিল তিল করে গড়ে তোলা তার স্কুলের প্রায় সব আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।পরদিন স্কুলে গিয়ে শিক্ষক-ছাত্র-ছাত্রীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।সাধারণ মানুষ এ বীভত্সতায় থমকে গেলেও এখন পর্যন্ত একটা অংশ ঝুকি নিয়ে তার জন্য তার স্কুল রক্ষার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।প্রায় প্রতিদিনই ৫০০-৬০০ ছাত্র-ছাত্রী সেই পোড়া বাড়ীতে Floor-এ বসে পাটি-কাপড় ইত্যাদি বিছিয়ে ক্লাস করছে।
এটা জমিদার বাড়ীর উত্তরাধিকার দের ঝামেলা,রাজনৈতিক ইস্যু ইত্যাদি বলে প্রশাসন বা মিডিয়া এটাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।যেহেতু সাধারণ লোকজন Involve সংগঠন বেশী জড়ালে সমস্যা হবে,পত্রিকায় বা মিডিয়ায় আসলে আরো জটিলতা তৈরী হবে ইত্যাদি ভাবনায় বিষয়টি সঠিক ভাবে Focus করা হয়নি।
( সূত্র:মজিবর রহমান মঞ্জু ভাইয়ের ওয়াল থেকে)
"মোরা বড় হতে চাই"এক স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাতিয়ার:
বই থেকে কয়েকটি লাইন তুলে ধরলাম:
"তোমরা যদি সত্যিই সুন্দর ক্যারিয়ার গঠন করতে চাড় তাহলে কিন্তু তোমাদের স্বপ্ন দেখা শিখতে হবে"
"মানুষ হচ্ছে সকল মাখলুকের ভেতর সবচেয়ে বড় এবং শ্রেষ্ঠ ; কিন্তু কেন ? জ্ঞান ,চরিত্র আর যোগ্যতায় । আর মানুষের ভেতর সবচেয়ে বড় মানুষ তারার - যাদের জ্ঞান , চরিত্র আর যোগ্যতা সবচেয়ে বেশি ।"
কোন পরিকল্পনা , তা যতই সুন্দর হোক না কেন , ততক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয় না যতক্ষণ না তার সাথে যোগ হবে সুদৃঢ় আকাঙ্খা ।"
বইটির ডাউনলোড লিংক
http://www.mediafire.com/?t4h1e0mi3oped1j
ফেইসবুক এড্রেস
http://www.facebook.com/freeimrose
আমরা অবিলম্বে এই মহান শিক্ষক,দিকনির্দেশক ও আলোক বর্তিকার মুক্তি চাই।
আহসান হাবিব ইমরোজ;"মোরা বড় হতে চাই" ও একটি লাইটহাউজ";গ্রেফতার করে যে আলো নেভানো যাবে না
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।