somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উমর ইবনুল খত্তাব (রাঃ) [পর্ব-২]

০৭ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হযরত উমর (রাঃ) জাহিলিয়াতের যুগে কুরাইশ দের অন্যতম নেতা ছিলেন। ততকালীন সময়ে পৌত্তলিকতা ধর্ম প্রচলিত ছিলো। মূলত হযরত উমর (রাঃ) প্রথা,রীতি-নীতি এর ব্যপারে কঠোর ছিলেন। যখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ধর্ম প্রচার শুরু করেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই পৌত্তলিকতার অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়।নেতা হিসেবে পৌত্তলিকতা রক্ষার জন্য মূলত হযরত উমর (রাঃ) প্রথমদিকে ইসলামের বিরোধিতা করেন।

মক্কা তখনকার সময়ে আরবের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো।মক্কাকে ঘিরে তখন বিভিন্ন ব্যবসা বানিজ্য পরিচালিত হতো।এছাড়া সমগ্র আরবের লোকেরা ধর্ম পালনের জন্য কা'বা প্রঙ্গনে প্রদক্ষিণ করতে আসতো।আরবদের মধ্যে কুরাইশরা তখন ক্ষমতাবান ছিলো।কুরাইশ নেতারা চিন্তা করলো ইসলাম যদি প্রতিষ্ঠা পায় তাহলে তাদের বাপ-দাদের প্রচলিত ধর্ম বিলুপ্ত হবে এবং দ্বিতীয়ত আরবের বুকে তাদের ক্ষমতা,প্রভাব,অর্থ, প্রতিপত্তি বিলিন হবে।ক্ষমতায় থেকেও মুহাম্মদ (সাঃ) সহ গুটিকয়েক লোকের কাছে হেরে যাওয়ার বিষয়টা তাদের মান-সম্মানের উপর চপটাঘাতের মত ছিলো।তারা সর্ব শক্তি প্রয়োগ করে ইসলাম কে প্রতিহত করার চেস্টা করেন।

ইসলামের শুরুর দিকে সবাই গোপনে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতেন।যদি সমাজের মানুষ জানতো যে কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছেন তাকে অবর্ননীয় শাস্তি সহ্য করতে হতো।

একবার এক কৃতদাস মহিলা ইসলাম ধর্ম গ্রহনের খবর প্রকাশ হয়ে গেলো। হযরত উমর (রাঃ) চাবুক দিয়ে তাকে প্রহার করতে লাগলেন। ক্লান্ত হয়ে হাত হতে চাবুক না ছুটে যাওয়া পর্যন্ত প্রহার করলেন।হযরত অবু বকর (রাঃ) এই দৃশ্য দেখে পরবর্তী সেই দাস কে মুক্ত করেছিলেন।

মূলত এমন নৃশংস অত্যাচার করা হতো যেন মানুষ ভয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন না করে এবং যারা সাহস করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতেন তারা গোপনে ধর্ম পালন করতেন।কিন্তু জাহিলিয়াতের যুগের অন্যায়,অবিচার, বর্বরতার, হত্যা,লুন্ঠনের মাঝে ইসলামের সাম্য,মৈত্রী, ভালবাসা,মর্যাদা,সততার বানী ক্রমান্বয়ে মানুষের হৃদয় স্পর্শ করতে থাকে।চরম বাধা সত্ত্বেও মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়া তলে আসতে থাকে।

দিন দিন ইসলামের অনুসারীদের উপর অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সাহাবাদের আবিসিনিয়ায় হিজরতের নির্দেশ দেন।ইসলামের প্রথম যুগে এমন সাহাবা নেই যে ইসলাম পালনের জন্য হিজরত করেন নাই।ইসলাম ধর্ম প্রচার দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো। আল্লাহর নবী আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন হে আল্লাহর ইসলামের সাহায্যের জন্য হযরত উমর অথবা আবু জেহেলের মধ্যে আপনি যাকে পচ্ছন্দ তাকে কবুল করুন।

অত:পর একদিন হযরত উমর (রাঃ) এক কুরাইশ মহিলাকে নিজ বাসস্থান ছেড়ে হিজরত করতে দেখলেন।ঐ মহিলা সহ আরও অনেকে তার হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাকে দেখা মাত্র হযরত উমর (রাঃ) এর বিবেক নাড়া দিয়ে উঠলো।তার জন্য তার হৃদয়ে অনুশোচনা ও দুঃখ জাগ্রত হলো।

হযরত উমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলো ' ও উম 'আব্দুল্লাহ', চলে যাচ্ছো?
তিনি বললেন, হ্যা,তুমি আমাদের শাস্তি দিয়েছ ,অন্যায় ভাবে নির্যাতন করেছ, আল্লাহর কসম আমরা আল্লাহর জমিনে বের হয়েছি, নিশ্চয় আল্লাহ একটি পথ বের করে দিবেন।
হযরত উমর (রাঃ) বললেন, 'আল্লাহ তোমাদের সহায় হউন।'

যে উমরকে কঠোরতার জন্য সমস্ত আরববাসী ভয় করতো তার মুখে এমন কোমল কথা শুনে উম 'আব্দুল্লাহ' বিনতে হানতামা অবাক হন।

অপর দিকে কুরাইশ মহিলার জবাব শুনে হযরত উমর (রাঃ) বিমর্ষ হয়ে পরেন।এত অত্যাচার, নির্যাতনের পরেও একটা নতুন ধর্মের জন্য এরা একতাবদ্ধ।কি এমন গোপন বিষয় যা তাদের শক্তির উৎস? চিন্তা করতে করতে হযরত উমর (রাঃ) হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত হলো অত্যাচারিত দের জন্য ব্যথিত হলো।

(চলবে)

আগের পর্ব পড়ুন
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০২১ রাত ৯:২৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×