রাস্তায় লোকেলোকারণ্য ! তিল ধারণের জায়গা নেই ফার্মগেটে । একে তো হকারের রাস্তা দখল, অন্যদিকে লাল-নীল কোচিং সেন্টারের রমরমা বসন্ত। সেই সাথে উইংলেস ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন গোয়িং প্রিন্স/প্রিন্সেসদের লম্ফ জম্ফ চলাফেরা যেন “কুছ কুছ হোতা হ্যাঁয়” এর লাভ স্টুডেন্টের ব্যাচ মনে হল !
ফার্মগেটের বড় ওভার ব্রিজের উপরে খাড়া কড়া রোদে এক #অন্ধ কটন বাড/ চুলের ক্লিপ বিক্রি করছেন । এক প্যাকেট কটন বাড- এর প্রয়োজনীয়তা খুবই অনুভব করলাম। ছোটবেলা থেকেই একটা Hype কাজ করে, কটন বাড- দেখলেই কেন যেন মনে মনে -কানে কেউ সুড়সুড়ি দিয়ে যায় ! কটন বাড-বিক্রেতা লোকটা যে অন্ধ, সেটা আগে বুঝি নি? যখন টাকা হাতে তুলে দিলাম, বলল ভাই আপনি নিজে টাকা গোনে দেন? আমি লোকটার চোখে তাকিয়ে বললাম আপনি দেখতে পান না।
বলল না! পরক্ষনে বললাম, আরেকটা কটন বাড এর প্যাকেট নিলাম চাচা ! বলে, আরও দুই টাকা বাড়িয়ে দিলাম। সচরাচর, আমি ভিক্ষা দেওয়ার পরিপন্থী , নেহায়েত গরিব লোকটার হাভভাব আর ভদ্রতা ভাল না হলে দেই না । কিন্তু রিকশাওয়ালা/ এই রকম অন্ধলোকদের হয়ত চোখে আলো নেই তারপরেও যে অন্যের কাছে হাত পাতে না, সত্যিই অবাক করার মত এদের কে দিতে কার্পণ্য নেই। কিছুদিন আগে দেখলাম, তেজকুনি পাড়ার হলিক্রস স্কুল সংলগ্ন এক লোকের দুই পা-ই নাই, তার পরেও অটোমেটেড রিকশা চালায়। আসলেই এদের দেখলে মাঝে মাঝে অনুপ্রাণিত হই, আল্লাহ দু’টা মূল্যবান চোখ, কর্মক্ষম হাত , শোনার জন্য কান আর বুদ্ধি দিয়েছেন।
আসলে প্রতিবন্ধকতা আমরা তৈরি করি, প্রতিবন্ধকতা আমাদের তৈরি । আমরা নিজদের আলো নিজেরাই ছাই দিয়ে লেপে রাখি । এরা যে ছাই চাঁপা আগুন বুঝে
উঠতে দেই না ! সমাজ ও দেয় না ! আমি বা আমরাও বুঝে উঠতে পারি না। অনেকের কাছে আমার কথাগুলো আতলামি মনে হবে ! হয়ত তাই হোক !