দীর্ঘ ১ বছরের বেশি সময় ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধিমালা পাশ না হওয়ার তামাক কোম্পানিগুলোর প্রতারণামূলক অনেক কার্যক্রমই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কোম্পানিগুলো আইনভঙ্গ করে ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে জনগনের মাঝে নানা প্রচারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধিমালা পাশে বিলম্বের বিষয়ে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছে তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে কোম্পানিগুলোর অপচেষ্টা বন্ধ ও আইন বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে দ্রুত বিধিমালা প্রণয়নের আহবান জানানো হয়। আজ সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও অরুণোদয়ের তরুন দল যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এ দাবি জানান।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সম্পাদক হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে এ অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন অরুণোদয়ের তরুণ দলের নির্বাহী পরিচালক শহীদুল ইসলাম বাবু, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান, সহকারি নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান স্বপন, মাস্তুলের জনসংযোগ কর্মকর্তা মনির হোসেন নিশাত।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে বিধিমালার মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সাংগঠনিক কাঠামো তৈরী, কর্মপরিধি নির্ধারণ ও কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টুন বা কৌটার উভয় পাশে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের বিধান বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এ সকল বিধান বাস্তবায়নে বিধিমালার বিকল্প নাই।
হেলাল আহমেদ বলেন, মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণ করে প্রচারণা চালাচ্ছে চতুর তামাক কোম্পানি ”ঢাকা টোব্যাকো’, ‘বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ’ (বিএটিবি)সহ অন্যান্য তামাক কোম্পানী । আইন লঙ্ঘণ করে এ ধরণের প্রচারণা আইনের প্রতিই অশ্রদ্ধা নয়, রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতিও অশ্রদ্ধা। রাষ্ট্রের আইন ভঙ্গকারী এ সকল তামাক কোম্পানীর কঠোর শাস্তি দাবী করেন তিনি।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় রেখে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করেছে। কিন্তু আইনের বিধিমালা প্রণয়ন না হওয়ায় এই আইন বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারের উচিত জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধিমালা প্রণয়ন করা।
অরুণোদয়ের তরুণ দলের নির্বাহী পরিচালক শহীদুল ইসলাম বাবু বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধিমালা প্রণয়ন বিলম্বিত করার লক্ষে তামাক কোম্পানিগুলো নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। বিধিমালায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যা বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় হতে পারে। সকল ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ, সামাজিক দায়বদ্ধতার নামে তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন বন্ধ, প্যাকেটের গায়ে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী এ আইনের গুরুত্বপূর্ণ দিক। যা তামাক কোম্পানির প্রচারণা, প্রলুব্দ করার বা ধূমপানে উৎসাহিত করার কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য তামাক কোম্পানিগুলো বিধিমালা যাতে বিলম্বিত হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১১