খেতে না চাওয়া বাচ্চাদের একটি কমন বদভ্যাস। সেদিন আমার মেয়ে জাফরিন বারবার বলছে তাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিছুদিন আগেই এসে জ্বর আক্রান্ত হয়েছিল এবং এ কারণে বাসা থেকে বের হতে পারিনি। সে অভিযোগ করছে পুরান বাসায় থাকতে তাকে বেশি ঘুরতে নিয়ে যেতাম আর নতুন বাসায় এসে আমরা তাকে তেমন কোথাও নিয়ে যাচ্ছি না।
তার মা বললো, ঠিক আছে তুমি খেয়ে দুপুরে ঘুমিয়ে নাও । বিকালে আমরা ঘুরতে বের হব। কিন্তু খাওয়াতে বসে ঘটলো-বিপত্তি। দুইদিন লোকমা খেয়ে মেয়ে আর খেতে চাচ্ছে না।
তার মা তাকে গল্প বলে , মোবাইল দেখিয়ে খাওয়াতে চাচ্ছে তবুও খাওয়াতে না পেরে বিরক্ত হয়ে তার পিঠে চড় মেরেছে। মেয়ের কান্না শুনে আমি এসে আমার স্ত্রীকে বকলাম এবং খাবারের প্লেট নিয়ে রাগ করে রেখে দিয়ে ।বললাম খাওয়াতে হবে না, মারতেও হবে না এবং তাকে ঠেলে সরিয়ে দিলাম। সে অন্য রুমে গিয়ে রাগ করে বসে থাকলো।
মেয়েকে শান্ত করে বুঝিয়ে শুনিয়ে আমি সবগুলো ভাত খাওয়ালাম। প্রায় ঘন্টাখানেক সময় লেগে গেল। আমি নিজে খেয়ে মেয়েকে রেডি করিয়ে ঘুরতে বের হব এমন সময় মেয়ে তার মায়ের কাছে গিয়ে বলল, মা তুমি যাবা না।
মেয়েকে মারার গ্লানিবোধে তার মা নীরবে কাঁদছে। আমার মেয়ে, মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল, মা আমি তো সবগুলো ভাত খেয়েছি বাবার হাতে, তবুও তুমি যাবানা।
মেয়ের এই কথা শুনে এবং চোখের পানি মুছে দেওয়ায় মায়ের চোখে আরো অশ্রু ভিড় করতে লাগলো। অবশেষে আমরা বাপ মেয়ে বেরিয়ে গেলাম। সেদিন সন্ধ্যা অবধি পার্কে ঘুরলাম এবং শপিং করে বাসায় ফিরলাম।
কিন্তু মেয়ে বারবারই বলছিল মা কেন আজ আসলো না। আমি বললাম তোমার মার মন ভালো নেই। মেয়ে বলল কিন্তু আমার তো ঘুরতে এসে মন ভালো হইছে।
সেটা দিয়ে বুঝাতে চাইলো আম্মু ঘুরতে আসলেও আম্মুর মন ভালো হতো।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:২৩