আজকের গল্প মেয়ে ও আমার গান প্যারোডি করা।
পুরাতন বাসার নিচে ছিল কয়েকটি দোকান ছিল সেখানে একটি দোকানে নিয়মিত গান বাজানো হতো। তো আমার মেয়ে বারান্দায় খেলার সময় হয়তো সেই গান শুনে থাকবে।
একদিন নতুন বাসায় আসার পর সে বলল, বাবা পুরান বাসার নিচের দোকানে যে একটা গান বাজতো সেটা কি তোমার মনে আছে ।আমি বললাম, অনেকগুলো গানইতো বাজতো। কোনটার কথা বলছ ? তখন সে একটু ভেবে বলল, বাবা আমায় ডাকতেছে..... আমি জিজ্ঞেস করলাম এই গানটার কথা তোমার মনে আছে ?
সে তখন স মুচকি হেসে মাথা নেড়ে বলল হাঁ মনে আছে। তখন আমি তাকে গানটি গেয়ে মনে করিয়ে দিলাম-
পানি গড় গড়াইয়া পরতাছে
বাবা আমায় ডাকতাছে
পানি গড় গড়াইয়া পরতাছে
বাবা আমায় ডাকতাছে
আয়রে মানিক আমার
বুকে আয় বাবা…
তখন সে গুনগুন করে গাইল তারপর আমি দুষ্টুমি করে গাইলাম-
পানি গড় গড়াইয়া পরতাছে
জাফরিন আমায় ডাকতাছে
আয়রে জাফরিন আমার বুকে আয়.......।
তখন সেও প্যারোটি করে বলল-
পানি গড় গড়াইয়া পরতাছে
মাইদুল আমায় ডাকতাছে
আয়রে মাইদুল আমার বুকে আয়......।
তার গান শুনে আমি জিভে কামড় দিলাম তখন সে বলল, বাবা কি হইছে ? আমি বললাম, বাবার নাম এভাবে বলতে হয় না। সে বলল, তুমিও তো আমার নাম বলছো গানের মধ্যে। কথা শুনে তখন আমি হাসতেছি আমার দেখাদেখি কন্যাও হাসলো।
আরেকদিন তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই গানটার এই লাইনটাই শুধু সে কয়েকবার গাইলো। বললাম বাকিটা পারো না। সে বলল না। এতটুকুই শুনছি। বাকিটা শুনি নাই তাই পারিনা। তখন আমি তাকে আরো একটা লাইন শেখালাম।
তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই
আর কিছু জীবনে পাই বা না পাই
তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই....।
সে শিখে গেল গানটা। তখন আমি আবার প্যারোডি করলাম
জাফরিনকে চাই শুধু জাফরিন কে চাই
আর কিছু জীবনে পাই বা না পাই .....
সেও তখন বলল-
বাবাকে চাই শুধু বাবাকে চাই
আর কিছু জীবনে পাই বা না পাই .......।
আমরা বেশি উপভোগ করলাম এভাবে কয়েকটা গান। এর মধ্যে কন্যার মা শুনে বলল, কি শিখাচ্ছে মেয়েকে এগুলো! আমি বললাম আরে এগুলো তো জাস্ট বিনোদন।
তারপর সে আরেকটা গজল শিখল আমার কাছ থেকে।
দুনিয়া সুন্দর
মানুষ সুন্দর
আসমান সুন্দর
জমিন সুন্দর
সুন্দরে সুন্দরে পাল্লা
জানিনা কত সুন্দর তুমি আল্লা..........
বেশ কদিন সে এটা গাইতে গাইতে মোটামুটি পুরোটাই শিখে ফেলল।
এভাবে চলতে থাকুক আনন্দে, আহলাদে, ভালোবাসায় দিনগুলো । ভালো থাকুক পৃথিবীর সমস্ত বাবারা আর তাদের সন্তানরা।
ছবি-মেয়ে যখন আলগা নখ বানায়।