মিনি ফুটবল তাই মাঠের এরিয়াটা ছোটই। রাসেল এক পা নিয়ে শ'খানেক লাফ দিয়ে একবার মাঠের ঐ পাড়ে যাচ্ছে আবার এ পাড়ে আসছে। বয়সটা আনুমানিক ৮/৯ হবে। কিছুক্ষণ পর দেখলাম অন্যরা তাকে গোলকিপারের দায়িত্ব্য দিয়ে দিয়েছে। ভাবলাম ছেলেগুলার সিম্প্যাথি আছে। ভালোই লাগছে দেখে যে, নিজের ব্যর্থতা থাকার পরও ফুটবলের প্রতি রাসেলের অদম্য ভালোবাসা।
হঠাত্ মনে হল এই ছেলেটার তো এ অবস্থা ছিলনা। কিভাবে কি হল? একটা পা কোথায় গেল? বিরাট একটা কৌতূহল জাগলো।
তাত্ক্ষণিকভাবে জিজ্ঞাসা করার কাওকে না পেলেও পরে ছেলেটার বাড়ির পাশের আমার বন্ধু আশিকের কাছে জিজ্ঞেস করলাম...
- দোস্ত, তোদের বাড়ির পাশে একটা ছেলে আছেনা যে একটা পা তার? গতবার যখন বাড়িতে আসি এই ছেলেটার তো এ অবস্থা ছিলনা। কি করে হল?
- একসিডেন্ট!
- ওহ! তারপর?
- টমটমের নিচে পরেছিল। তারপর ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণও পেয়েছিল যা তখন তার চিকিত্সার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু তার বাপটা একটা পিশাচ শ্রেণির সুদখোর। ভালো চিকিত্সা না করে টাকাটা সুদে লাগিয়ে দিসে যার কারনে চিকিত্সা না পেয়ে অবশেষে ছেলেটার পা'টা কেঁটে ফেলতে হয়েছে।
টের পেলাম একটা রক্তের স্রোত বয়ে গেল আমার মেরুদন্ডের পাশ দিয়ে। অজান্তেই মনে মনে একটা প্রশ্ন করলাম_ "পৃথিবীতে এমন বাবাও আছে?"
হুমায়ূন আহমেদ স্যার এর একটা কথা খুব মনে পড়ছে,
"পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ থাকলেও, একটাও খারাপ বাবা নাই"
অনিচ্ছা স্বত্বেও কথাটা সম্পূর্ন মানতে পারলাম না।
...আমি দুঃখিত।