ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদীরা যখন বিভিন্ন দেশে গিয়ে স্থানীয় মানুষের ভূমি দখল করত, তাদের হত্যা করত এবং শাসন চালাত, তখন সেই স্থানীয় মানুষদের বলা হতো "Indigenous" বা আদিবাসী। অপরদিকে, শাসকদের বলা হতো "Colonizers" বা সাম্রাজ্যবাদী। আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নানা আন্দোলন ও রাজনৈতিক তৎপরতা সেখান থেকেই শুরু হয়।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। বাঙালিরা এই ভূখণ্ডে হাজার বছর ধরে বাস করছে। বাঙালি কোনো সাম্রাজ্যবাদী জাতি নয়; বরং এই মাটিতেই তাদের পরিচয়, সংস্কৃতি এবং জাতিসত্ত্বা গড়ে উঠেছে। আমরা, বাঙালিরা, নিজেদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করি না। তাহলে চাকমা, মারমা বা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর "আদিবাসী" স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তা কোথায়?
তারা সাংবিধানিক ভাবে আদিবাসী স্বীকৃতি চায়। এবার যদি চাকমা , মারমা, গারো এবং অন্য সব জাতি গোষ্ঠীর সাথে সাথে বাঙালিকেও আদিবাসী স্বীকৃতি দেয় তাহলেও সেটা তারা মানবে না। তারা বাঙালি কে এই ভূখণ্ডের দখলদার হিসেবে দেখাতে চায় এবং নিজেদের এই ভূমির আদি মালিক হিসেবে দেখতে চায়। এটাই মূলত আদিবাসী আদিবাসী খেলার রাজনীতি।
অন্যদিকে কিছুলোক "আমি বাঙালি না, আমি বাংলাদেশি", কিংবা "আমি মুসলিম, বাঙালি না"—এ ধরনের বিভ্রান্তিকর কথা বলে। তারা মূলত একটা পরিচয়ের সাথে আরেকটা পরিচয় গুলিয়ে ফেলে।
১. ধর্মীয় পরিচয়: মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান ইত্যাদি।
২. নৃতাত্ত্বিক পরিচয়: বাঙালি, চাকমা, মারমা, পাঞ্জাবি ইত্যাদি।
৩. নাগরিক পরিচয়: বাংলাদেশি, ভারতীয়, পাকিস্তানি ইত্যাদি।
আপনি একই সঙ্গে একজন বাঙালি, একজন বাংলাদেশি এবং একজন মুসলিম হতে পারেন। এক পরিচয় অন্যটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। একজন মানুষের বহু পরিচয় থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




