লক্ষ্মীপুরের মেধাবী মুখ
“মুনাওয়ার উদ্দিন শিবলু স্মরণে”
অধ্যাপক নাসির উদ্দিন মাহমুদ
“মুনাওয়ার উদ্দিন শিবলু” আল্লাহ তাআলারই উপহার,
এক প্রতিশ্রুতিশীল মেধাবী মুখ,
কী অনাবিল সুখ
ফুটবার আগে অকালে ঝরে দিয়েছ বেদনা দুখ,
জ্বলবার আগে নিভে গেলো তারা, অশ্রুতে ভাসে বুক।
পৃথিবী মলিন ঝরে গেলো সেই ফুল
শোকের ছায়ায় পরিবেশ ভারী পরিবার শোকাকুল।
মুনাওয়ার, মুনাওয়ার
শোকের সাগরে ভাসিয়ে তরী জান্নাতে খোলো দ্বার,
অভিমানে তুমি হারিয়ে গেলে, রেখে গেলে হাহাকার
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠ সবার ‘মুনাওয়ার নেই আর’।
৩০শে নভেম্বর,
মন যে তোমার কেমন কেমন করেছিল দিনভর,
ভয়াল বিকেল আনিল অকাল ডাকিল মরণছল,
কিশোর জীবনে নামিল সন্ধ্যা ফলেছিল বিষফল,
বিদ্যুৎ বিষ প্রাণবায়ু তার নিমেষে নিয়েছে কাড়ি,
দেয়ালের পাশে পড়ে রয় শব, ঘর-বাড়ি সব ছাড়ি।
পড়ার সাথীরা, খেলার সাথীরা কেঁদে ডাকে ‘মুনাওয়ার’
তোমার মতো মেধাবী বন্ধু খুঁজিয়া পাবো না আর।
এসো না বন্ধু অভিমান ভেঙ্গে চলে এসো একবার,
তোমার তরে রেখেছি খুলে সকল জানালা দুয়ার।
তুমি মুসলিম আল্লাহ ছাড়া কারেও করনি ভয়,
সত্য সাধনায় ছিলে অবিচল সেই বড় পরিচয়।
আদর্শ সামাদে ৮ম শ্রেণির তুমি ছিলে ফার্স্ট বয়,
জীবনের কোনো মুহূর্তকাল করনিকো অপচয়,
জীবন তো নদী ভাঙ্গা আর গড়া, কুসুমশয্যা নয়।
তোমার স্মৃতি জায়নামাজ, টুপি, তোমারই হাতের লেখা,
কর্মের মাঝে জীবন স্বপ্ন এঁকে গেলে সব রেখা,
বন্ধুর কাছে বলেছ হয়তো হবে না আবার দেখা।
আকাশ তারকার সাথে নীরবে বলেছিলে ইশারায়,
অনাচারে ভরা ধূলির ধরায় মন না থাকিতে চায়,
‘শিবলু’ তোমার কামরা নীরব পড়ে আছে প্রিয় বই,
স্কুল ছুটি, ফিরেনি শিবলু পথ পানে চেয়ে রই।
উতলা মায়ের মন ছুটাছুটি,
খাবার টেবিলে বাসি হয়ে গেছে
সাজানো অন্ন-রুটি।
তোমার ব্যবহৃত জিনিস আসবাব
তোমাকে ছাড়া অবশ অচল,
কী করে বাবা শিবলু মোদের
মনকে বোঝাবো বল।
বুকের মানিক কেন গো আল্লাহ
অমনি কাড়িয়া নিলা,
পরকালে যেন সে হয় মোদের
নাজাতের উছিলা।
লক্ষ নয়ন সজল
কোটি মানুষের স্মৃতিতে ‘শিবলু’
প্রীতিডোরে উজ্জ্বল॥
রচনা: অধ্যাপক নাসির উদ্দিন মাহমুদ
লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদ্রাসা
রচনাকাল:০৩.১২.২০০৪ ইং