গানের ভুবনে মুহূর্তের জন্যে হলেও হারিয়ে যায় নি এমন মানুষ কি আছে? মনে হয় নেই। এমন কি আছে গানে? উত্তর যে আমি জানি তা নয়। তবে এতটুকু অনুভব করতে পারি মানুষ যখন গান শুনে তখন তার মনের কোণের শূন্য এক একটি পাত্র পূর্ণ হয়ে উঠে। প্রেমের গান শুনে সেই প্রেয়সীর কথা মনে পড়ে যে প্রথমবারের মত ভালোবাসতে শিখিয়েছিল। বিদ্রোহের গান শুনে মনে হয় শরীরে বুঝি আগুন লেগেছে, রক্ত যেন টগবগ করছে উত্তাল গতিতে। গান মানুষের ঘুমন্ত অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে। সেই অনুভুতি উপলব্ধি করায় এক নতুন বাস্তবতা। যা হয়ত এই যান্ত্রিক জীবনে আমারা কখনই খুঁজে পেতাম না। যখন মনে হয় এই যান্ত্রিক জীবনের সাথে আমিও যন্ত্র হয়ে উঠছি তখনি গান শুনি। গীটার এর প্রত্যেকটি কম্পন যেন এক একটা চেতনার অদ্ভুত সঙ্গম। তার সাথে যখন তবলা আসে,কি-বোর্ড আসে,বেহালা আসে তখন উথাল পাতাল ঢেউ খেলে সেখানে। যেন সেই ঢেউয়ের তালে তালে আমিও যাচ্ছি কোন এক অজানা পথে,হয়তো আরও বিশাল কোন ঢেউয়ের আশায়। হ্যাঁ, গান এমনই। যিনি গান লিখেন তিনি বরাবরই আমার কাছে কৌতূহলের পাত্র। আমরা হয়তো গানের শিল্পীকে মনে রাখি বড়জোর সঙ্গীত পরিচালকে। কিন্তু যে গীতিকার গানটি লিখেছেন তিনি অগোচরেই থেকে যান।তবে আমার মনে হয় গান শুধু সুর নয়,তাল নয় বরং গান হলো মনের কথাগুলোর সাথে সুর লয়ের এক অদ্ভুত খেলা। তাই সুর ও লয়ের সাথে গানের কথার ও মূল্য আছে বৈ কি! আজকাল নানা ধরণের সুরের ফিউশন শুনি। দারুণ লাগে আমার! তাই নজরুল কিংবা রবীন্দ্রনাথের গানের সুরের আধুনিকায়ন বা যুগোপযোগীকরণ আমার কাছে পজিটিভ মনে হয়। ‘মায়া বনবিহারিনী’ ‘একলা চলরে’ ‘দুর্গম গিরি’ গানগুলো ভিন্ন আঙ্গিকে পরিবেশন করায় গানগুলো নতুন জীবন লাভ করেছে। পরিবর্তন সর্বক্ষেত্রে যেখানে অবশ্যম্ভাবী গান সেখানে বাকি থাকবে কেন? গান নিয়ে অনেক কথা বললাম। না আমি কোন সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ নই। নিজেকে ভালো শ্রোতা হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ করি। সেই তাড়নায় মাঝে মাঝে গান লিখি। নিজে নিজে গান গাই। বেশিরভাগ সময় বেসুরো মনে হলেও মাঝে মধ্যে নিজের গলা শুনে নিজেই অবাক হই। গলা এত সুন্দর হল কিভাবে?!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২০