উপরের ঘটনা আর ভিতরের ঘটনা যাই হোক না কেন, বড় সত্য হল জিয়াদ নামের সেই নিষ্পাপ শিশুটি আর বেঁচে নেই। লাশ উদ্ধার হয়েছে, রহস্য উদ্ধার হয়নি। যদি লাশ না পাওয়া যেত আমি দুঃখ পেতাম না। রোমাঞ্চকর নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য ফায়ার সার্ভিস বা কর্তৃপক্ষের পিন্ডি চটকানোর কোন প্রয়োজনও আমি বোধ করতাম না।সত্যি কথা বলতে কি পাইপে বাচ্চা পাওয়া যায়নি শুনে আমি নিশ্চিন্তে ছিলাম যে বাচ্চাতো মারা যায়নি অন্তত। কিন্তু এখন প্রয়োজন বোধ করছি। কারণ চার বছরের এই শিশুটির লাশের ছবিটার দিকে তাকিয়ে আমি বড় বেশী অপরাধবোধে ভুগছি। আমি দায়বদ্ধ এই মাসুম বাচ্চার কছে। পাঠক দায়বদ্ধতা আপনারও আছে।
জিয়াদ মারা গেছে। তাকে আর ফিরিয়ে আনার উপায় নেই। আমি শুধু জানতে চাই আমার মনে ভিড় করা কিছু প্রশ্নের উত্তর। আমি জানি কেউই আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নয়। কিন্তু সহজ পাঁচটা প্রশ্ন, মাত্র পাঁচটা প্রশ্নের উত্তর আমি চাই। এবং প্রশ্ন গুলোর উত্তর পাওয়া গেলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
জিয়াদ কখন মারা গেছে ?
এটা খুব জরুরী বিষয়। পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট খুব সহজেই বলে দেবে জিয়াদ কখন মারা গেছে। এই সময়টার উপর নির্ভর করে অনেক কিছু।
কিভাবে মারা গেছে ?
কিভাবে মারা গেছে সেটাও পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টে আসার কথা। অন্তত তাকে খুন করা হয়েছে কিনা সেটা তো বোঝা যাবেই। আমি অবশ্য এতদূর কল্পনা করতে চাইনা। মাথা ঠিক থাকেনা মাঝে মাঝে, তাই ভুল বকি।
শরীরে কোন ইনজুরি আছে কিনা ?
কমপক্ষে ৩০০ ফুট উচু থেকে পড়ে গেছে একটা বাচ্চা। তার গায়ে কোন ইনজুরি থাকবে না এটা হতেই পারে না। তার শরীর থাকবে মারাত্বক ভাবে রক্তাক্ত। কাপড় চোপড় সহ চামড়া ছিলে উঠে যাবার কথা। সত্যি কথা বলতে কি তখনই মারা যাবার কথা। ফরেনসিক পরীক্ষায় সেটা খুব ভালভাবে বোঝা যাবে কি ধরণের আঘাত তার গায়ে আছে।
পাইপের গায়ে কোন আলামত আছে কিনা ?
তিনশ ফুট উপর থেকে একটা বাচ্চা পড়ে গেছে, পাইপের গায়ে তার কাপড়ের সুতা, ছড়ে যাওয়া চামড়া, রক্ত লেগে থাকতে বাধ্য। আলামত সংগ্রহ পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কাজ। আশা করছি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট কোন আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগেই খুব সতর্কতার সাথে তা সংগ্রহ করবে।
ক্যামেরায় ধরা পড়ল না কেন ?
ফায়ার সার্ভিসের ক্যামেরায় ব্যাঙ টকটিকি ধরা পড়ল অথচ চার বছর বয়সী বাচ্চার লাশ ধরা পড়ল না কেন? এটা কি কারও গাফেলতি? নাকি আসলেই তখন লাশ ছিল না?
আমি পুলিশ বা গোয়েন্দা বিভাগের কেউ না। কি পরিস্থিতিতে কোন পথে তদন্ত করতে হবে তার বিস্তারিত ফিরিস্তি দিতে চাইনা। তবে আমার ধারণা এই চারটা প্রশ্নের উত্তরের উপর ভিত্তি করে তদন্ত করলে অনেক কিছুই বের করা সম্ভব। আর আমাদের ফরেনসিক ও পুলিশ বিভাগের উপর আমার আস্থা আছে। কাজগুলো তারা খুব সতর্কতার সাথে করবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। আপনারা শেয়ার করে প্রশ্নগুলো সবাইকে জানান যাতে অসতর্কতাবশত(!!!) বিষয়গুলো ছাড়া না পড়ে যায়।
মনে রাখবেন চার বছর বয়সী এই বাচ্চাটির কাছে আমরা প্রত্যেকেই দায়বদ্ধ।
জিয়াদ..আমাকে ক্ষমা করে দিস ভাই..