কালকে ঘুম ভাঙলো বৃষ্টির শব্দে। আমার পাশের জানালাটা বিরাট বড় মনে হচ্ছিলো। জানালার নেটে একটু একটু পানি আটকে যাচ্ছিলো, আর বাকি ফোটাগুলো ছাদের কার্নিশ বেয়ে বেয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছিলো। খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম - যার সারমর্ম হলো, আমি ইউনিভার্সিটিতে যে কোর্সে পড়তে চাচ্ছি, সেটার এ্যাকসেপ্টেন্স লেটার এসেছে, সাথে সাথে আরও অনেক কোর্সের অফার এসেছে। সব মিলিয়ে সময়টা এত্তো সুন্দর লাগছিলো যে কম্বল জড়িয়ে আর একটু খানি ঘুমিয়ে নিলাম!
জানালা অস্বাভাবিক রকমের বড় লাগার কারন হচ্ছে আমার বিছানায় এখন দুটো তোশক, এক একটা ছয় ইঞ্চির ওপরে। ভাইয়ার ঘরের জন্য নতুন তোশক কেনা হয়েছে, তাই এখন আমারটা আমার, ওরটাও আমার! এই উঁচু বিছানার ওপর শুয়ে আমার নিজেকে রাজকন্যার মতো লাগে - দ্যা প্রিন্সেস এ্যান্ড দ্যা পী এর নকল রাজকন্যাগুলোর মতো, যারা অনেকগুলো তোশকের ওপর শুয়ে আরামসে রাত কাটিয়ে দেয়। অবশ্য আমার তোশকের নিচে কোন ধরনেরই বীচি রাখা নাই, তাই আসল নাকি নকল রাজকন্যার মতো লাগা উচিৎ সেটা বুঝতে পারছি না।
বিছানায় এপাশ ওপাশ করলে পুরো জিনিসটা দোলে, মনে হয়, ওয়াটার বেড!
কালকে সরকারী ছুটি ছিলো। তাই অনে-এ-এ-ক দিন পর পাঁচজনই একসাথে বাসায় ছিলাম - বাসায় একদম উৎসব উৎসব ভাব! আমি খুব যত্ন নিয়ে দুপুরের খাবার রান্না করলাম। তারপর খাওয়ার পর সবাই ঘটা করে সিনেমা দেখতে বসলাম। উত্তম-সুচিত্রার সিনেমা নানু-দাদুদের সময়ের হলেও মা-বাবারা বেশ দেখতো। আমার প্রথম উত্তম-সুচিত্রার সিনেমার নাম ভুলে গেছি, কি হয় সেটাও ভুলে গেছি। খুব সম্ভবত: ২০০৬ এর শেষে ছিলো, আমরা পাঁচজন শুয়ে শুয়ে দেখছিলাম। সাউন্ড কোয়ালিটি খুব পঁচা ছিলো আর আমিও খুব ক্লান্ত ছিলাম, তাই শুরু হওয়ার একটু পরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
ইউটিউবে উত্তম-সুচিত্রার শুধু দুটো মুভি খুঁজে পেলাম - স্বপ্তপদী ও অগ্নিপরীক্ষা। স্বপ্তপদী অর্ধেক দেখার পর মার আর দেখতে ইচ্ছা করলো না। সেটা ছিলো হাই সোসাইটির গল্প, মার ভালো লাগে মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প। তাই শুরু হলো অগ্নিপরীক্ষা। এটার মাঝখানেও একটু ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু পাঁচ মিনিটের বেশি হবে না। অগ্নিপরীক্ষা ভালো লেগেছে - শেষ ভালো যার সব ভালো তার!
তারপর আমরা সবাই মিলে বের হলাম নদীর পাড়ে ঘুরতে। সেখানে সন্ধ্যা হয়ে গেলো, আর মাথার ওপর দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে বাদুর উড়ে গেলো। আমি খুব চেষ্টা করলাম ওদের কয়েকটা ছবি তুলতে, কিন্তু তখনকার সৌন্দর্য্যটা কিছুতেই ক্যামেরাতে ধরতে পারলাম না। সূর্য্যটা আস্তে আস্তে ডুবে গেলো, আর আমরা চুপ করে ভাবতে থাকলাম, জীবনটা কত্তো ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে! আমরা সবাই খুব দ্রুত বড় হয়ে যাচ্ছি। আমার মাঝে মাঝে আমার পরিবারের চারজনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতে ইচ্ছা করে।
আজকে ঘুম ভেঙেছে সূর্য্যের মুখ দেখে। এ বছর প্রতিটা ২৯এই কিছু একটা ঘটেছে। আজকে কিছু ঘটবে কিনা ভাবছি। হয়তো!
আলোচিত ব্লগ
বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।
১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।