somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নদীমাতৃক দেশে মরা নদী

১২ ই মার্চ, ২০১১ রাত ৩:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী মরে যাচ্ছে। প্রমত্তা সব নদী পরিনত হচ্ছে রবি ঠাকুরের ছোট নদীতে। অবশ্য রবি ঠাকুরের ছোট নদীতে বৈশাখ মাসে হাঁটুজল থাকতো; এখন বৈশাখ মাসে নদীর বুকে বোরো ধান ফলে।

দেশের অধিকাংশ নদী মৌসুমী প্রকৃতির হয়ে যাচ্ছে। জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি এখন খাল, মধুসূদনের কপোতাক্ষ মরণের দিন গুনছে আর মানিকের পদ্মায় কুবেররা এখন ইলিশ পায় না।

পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশ নদীর সৃষ্টি। শত শত বছরের পলি জমে গড়ে উঠেছে এই দেশ। তার প্রতিদান দিতেই কী আমরা প্রতিনিয়ত মেরে ফেলছি নদী।

বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনায় ভূমি মন্ত্রণালয়, পানি ব্যবস্থাপনায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌপথের দায়িত্বে নৌ মন্ত্রণালয়, সেতুর দায়িত্বে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, মাৎস্যসম্পদের দায়িত্বে মাৎস্যসম্পদ মন্ত্রণালয়, ভাঙন রোধ ও বন্য নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দর এলাকা ব্যবস্থাপনায় বিআইডব্লিউটিএ রয়েছে।

এছাড়াও রয়ছে যৌথ নদী কমিশন, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, আইডব্লিউএম, হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড এমন নানা প্রতিষ্ঠান।

রাষ্ট্রের এতসব প্রতিষ্ঠান থাকতে কেন নদী মারা যাচ্ছে? কেনইবা বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ভাঙন রোধ প্রকল্পগুলি কোটি টাকার দুর্নীতি না করে শেষ হয় না। অপরিকল্পিত ও অপ্রতুল ড্রেজিং এর ফলে চরে আটকে যাচ্ছে ফেরি।

পূর্বকালে নদী প্রায় বারোমাসই নাব্য থাকত। কিছু নদী এখন সম্পূর্ণ মৃত, কিছু নদী মৃতপ্রায়। কেবল দেশে দারুণ প্লাবন হলে এর কোনও কোনও নদীতে পানি নামে।

ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ৫৪ নদীর মধ্যে ৫৩ নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত। উজানে বাঁধ দিয়ে শুষ্ককালে পানি প্রত্যাহার করায় ভাটি অঞ্চলের নদী গুলো প্রাকৃতিকভাবে যে পরিমাণ পানি প্রাপ্তির অধিকার রাখে তা পাচ্ছে না। যার ফলে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে সেচের সংকট সৃষ্টি করছে।

বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি হঠাৎ ছেড়ে দেয়ায় পানি ও মাত্রারিক্ত পলি এসে একই সাথে ভাঙ্গন এবং পলি পতনে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলছে নদীগুলি। নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে, গভীরতা কমে প্রশস্ত হচ্ছে দুপাড়।

হাজার বছর ধরে সেচের জন্য কৃষক নদী-খাল-বিলের উপর নির্ভর করেছে। গত ৫০ বছরে ইরিধান আবাদের জন্য অতিমাত্রায় ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে আর্সেনিকের বিষে নীল হয়ে যাচ্ছে গোটা দেশ।

প্রতিবছর দেশে ধান প্রয়োজন ৩০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। কৃষি জমির পড়ে প্রথমেই চাপ পড়ে নদীর ওপরে। নদী ভরাট করে শিল্পকারখানা হচ্ছে। নগরায়নের বলি হচ্ছে নদীগুলো।

দক্ষিণাঞ্চলে উপকূল হতে ক্রমশ দেশের অভ্যন্তরে নোনাজল প্রবেশ করছে। বিনা (বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট) নোনাজল সহিষ্ণু জাতের ধান উদ্ভাবন করতে বাধ্য হচ্ছে।

নদী কেবল পানিই বহন করে সেচ কিংবা বন্যার জন্য তা না;অপচনশীল দ্রব্য বহনের ক্ষেত্রে নদীর মতো আর সস্তা মাধ্যম নেই। অথচ বিগত চার দশকে ২০ হাজার কিলোমিটার নদীপথ হারিয়েছে এদেশের মানুষ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নদীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নদীকে তার প্রাকৃতিক নিয়মেই প্রবাহিত হতে দেয়া। জলাভূমিকে জলাভূমির মতো রক্ষা করা উচিৎ।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী মরে যাচ্ছে। প্রমত্তা সব নদী পরিনত হচ্ছে রবি ঠাকুরের ছোট নদীতে। অবশ্য রবি ঠাকুরের ছোট নদীতে বৈশাখ মাসে হাঁটুজল থাকতো; এখন বৈশাখ মাসে নদীর বুকে বোরো ধান ফলে।

দেশের অধিকাংশ নদী মৌসুমী প্রকৃতির হয়ে যাচ্ছে। জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি এখন খাল, মধুসূদনের কপোতাক্ষ মরণের দিন গুনছে আর মানিকের পদ্মায় কুবেররা এখন ইলিশ পায় না।

পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশ নদীর সৃষ্টি। শত শত বছরের পলি জমে গড়ে উঠেছে এই দেশ। তার প্রতিদান দিতেই কী আমরা প্রতিনিয়ত মেরে ফেলছি নদী।

বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনায় ভূমি মন্ত্রণালয়, পানি ব্যবস্থাপনায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌপথের দায়িত্বে নৌ মন্ত্রণালয়, সেতুর দায়িত্বে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, মাৎস্যসম্পদের দায়িত্বে মাৎস্যসম্পদ মন্ত্রণালয়, ভাঙন রোধ ও বন্য নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দর এলাকা ব্যবস্থাপনায় বিআইডব্লিউটিএ রয়েছে।

এছাড়াও রয়ছে যৌথ নদী কমিশন, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, আইডব্লিউএম, হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড এমন নানা প্রতিষ্ঠান।

রাষ্ট্রের এতসব প্রতিষ্ঠান থাকতে কেন নদী মারা যাচ্ছে? কেনইবা বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ভাঙন রোধ প্রকল্পগুলি কোটি টাকার দুর্নীতি না করে শেষ হয় না। অপরিকল্পিত ও অপ্রতুল ড্রেজিং এর ফলে চরে আটকে যাচ্ছে ফেরি।

পূর্বকালে নদী প্রায় বারোমাসই নাব্য থাকত। কিছু নদী এখন সম্পূর্ণ মৃত, কিছু নদী মৃতপ্রায়। কেবল দেশে দারুণ প্লাবন হলে এর কোনও কোনও নদীতে পানি নামে।

ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ৫৪ নদীর মধ্যে ৫৩ নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত। উজানে বাঁধ দিয়ে শুষ্ককালে পানি প্রত্যাহার করায় ভাটি অঞ্চলের নদী গুলো প্রাকৃতিকভাবে যে পরিমাণ পানি প্রাপ্তির অধিকার রাখে তা পাচ্ছে না। যার ফলে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে সেচের সংকট সৃষ্টি করছে।

বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি হঠাৎ ছেড়ে দেয়ায় পানি ও মাত্রারিক্ত পলি এসে একই সাথে ভাঙ্গন এবং পলি পতনে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলছে নদীগুলি। নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে, গভীরতা কমে প্রশস্ত হচ্ছে দুপাড়।

হাজার বছর ধরে সেচের জন্য কৃষক নদী-খাল-বিলের উপর নির্ভর করেছে। গত ৫০ বছরে ইরিধান আবাদের জন্য অতিমাত্রায় ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে আর্সেনিকের বিষে নীল হয়ে যাচ্ছে গোটা দেশ।

প্রতিবছর দেশে ধান প্রয়োজন ৩০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। কৃষি জমির পড়ে প্রথমেই চাপ পড়ে নদীর ওপরে। নদী ভরাট করে শিল্পকারখানা হচ্ছে। নগরায়নের বলি হচ্ছে নদীগুলো।

দক্ষিণাঞ্চলে উপকূল হতে ক্রমশ দেশের অভ্যন্তরে নোনাজল প্রবেশ করছে। বিনা (বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট) নোনাজল সহিষ্ণু জাতের ধান উদ্ভাবন করতে বাধ্য হচ্ছে।

নদী কেবল পানিই বহন করে সেচ কিংবা বন্যার জন্য তা না;অপচনশীল দ্রব্য বহনের ক্ষেত্রে নদীর মতো আর সস্তা মাধ্যম নেই। অথচ বিগত চার দশকে ২০ হাজার কিলোমিটার নদীপথ হারিয়েছে এদেশের মানুষ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নদীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নদীকে তার প্রাকৃতিক নিয়মেই প্রবাহিত হতে দেয়া। জলাভূমিকে জলাভূমির মতো রক্ষা করা উচিৎ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৬
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×