somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু স্মৃতি এবং একটি মেলা পুরাতন জোক (সামান্য ১৮+)... :P

১২ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছাত্রজীবনে বন্ধু-বান্ধবী জনাদশেক মিলিয়ে আমাদের একটা গ্রুপ ছিলো। জনাদশেক কথাটা একটু বোধহয় অদ্ভুত শোনাচ্ছে, আসলে এমন বললাম কারণ সংখ্যাটা নানা কারণে ঠিক ফিক্সড থাকতে পারেনি। প্রথমে আমরা দশজনই ছিলাম (৫টি ছেলে এবং ৫টি মেয়ে), পরবর্তীতে বিভিন্নরকম মান-অভিমান এবং মনোকষ্টের কারণে ২ জনকে একটু দূরে সরে যেতে হয়েছিলো (অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে আমি নিজেই তাদের একজন... আবার তাই বলে শুধু যে বিরহ হয়েছে তা নয়, মিলনও হয়েছে যথেষ্ট, ১০ জনের ৪ জনই নিজেদের মধ্যে জোড়া বেঁধেছে... বড় ভালো লাগে দেখতে)। তবু, প্রচুর বাঁদরামি করেছি একসময়। কত যে পাগলামি ছাগলামি করতাম... এখন ভাবলে অবাক লাগে। একদিন পদ্মার চরে গিয়ে সবাই মিলে দলবেঁধে গোল্লাছুট পর্যন্ত খেলেছি (গ্র্যাজুয়েশন লেভেলের পোলাপান গোল্লাছুট খেলে!!)! :|

এক একজনের বাসা ছিলো এক এক শহরে, আবার কারো ছিলো গ্রামে। সব দলবেঁধে শিডিউল করে তাদের বাসায় অন্ততঃ একবার করে হলেও ধর্ণা দেয়া, আড্ডা-হুল্লোড়-ঝাঁপাঝাঁপি, যাবতীয় পোংটামি, এক একবার এক একরকম গেম আয়োজন করা (গেমগুলো যাদের মাথায় খুবই বেশি ঘিলু এরকম কেউ প্ল্যানিং করত এবং প্রত্যেক বারই সেগুলো একেবারে ইউনিক হতো)। আবার মাঝেমাঝে ‘প্রশ্নোত্তর পর্ব’ টাইপের হত, সবাই গোল হয়ে বসতো, প্রত্যেককে ৪-৫ মিনিটের একটা করে টাইম স্লট বেঁধে দেয়া হতো, এই টাইমের মধ্যে অন্যরা তাকে একগাদা প্রশ্ন করে অতিষ্ঠ করবে আর তাকে অতিষ্ঠ হতে হবে (বেশিরভাগ প্রশ্নই অবশ্য ‘কবে বিয়ে করবি, কাকে করবি, কেমন বর/বউ পছন্দ, হানিমুন কই করতে চাস, কয়টা বাচ্চা নিবি’ এই টাইপের হতো)। :P আবার যাদের অ্যাফেয়ার ছিলো তাদের ক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো ‘ওকে তুই কেন ভালোবাসলি, ওকে না পেলে তুই কি করবি’ এরকম হতো (বাচ্চা + হানিমুনের প্রশ্নগুলো থেকে অবশ্য তারাও বাদ যেতো না)। :P

দু’একজন ছিলো একটু লক্ষ্মীমন্ত টাইপ, তারা একটু চুপচাপ থাকতো আর মুচকি মুচকি হাসতো, আবার দু’একজন ছিলো একটু ‘ফাল পাড়ুইন্যা’ টাইপ, তারা তিড়িং বিড়িং লাফিয়েই যেত। যা-ই হতো, মজা হতো প্রচুর। এমনও হয়েছে যে হয়তো কারও বাসায় যাওয়া হয়েছে, সবাইকে ছোটখাট একটা ঘরে বসতে দেয়া হয়েছে, জায়গা একটু কম দেখে সবাই মিলে এ ওর গায়ে, সে তার গায়ে, এ ওর পিঠে, সে আবার আরকজনের ঘাড়ে... খাটে-মেঝেতে গাদাগাদি করে আড্ডা মেরেছি আর হাসাহাসি করেছি। এক ফাঁকে হয়তো কেউ এসে একটু খাবার দিয়ে গেলো, কিংবা খানিকটা শরবত – শুরু হলো কাড়াকাড়ি মারামারি করে হালুম-হুলুম খাওয়া। একজন হয়তো বললো তার মাথায় অনেক খুশকি (কিংবা উকুন), ওম্নি সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়লো তার মাথার উপর, খুশকির (নইলে উকুনের!) উপস্থিতি পরীক্ষা করার জন্য!!! একজন ছিলো ব্যাপক জ্ঞানী টাইপের, সে সবসময় চিন্তাভাবনা করে গুরুগম্ভীর সব বক্তব্য দিতো আর সবাই তাকে পচাতো। আবার দুইজন ছিলো যারা পরস্পরকে শাশুড়ি আর জামাই বলে আহ্লাদ করতো, আর বাকিরাও তাদের পিরিত দেখে হেভভি মজা পাইতো। এইসব তুমুল আড্ডা হৈচৈ এর মধ্যেই আমি হয়তো শাকচুন্নির মতো গলায় একটা গান ধরতাম, আর অন্যরা সবাই ‘ওরে এইডা তো “দুইডা ভাত দ্যান গো আম্মা” বইলা চিক্কুর পাড়তাছে, এরে ২টা টেকা দিয়া দে’ বলে আমার হাতে একটা একটাকা বা দু’টাকার কয়েন ধরিয়ে দিতো... দিয়ে নিজেরাই হেসে গড়াগড়ি যেতো, মাঝখান থেকে আমার ইনকাম হয়ে যেত ঐ ২ টাকা!

শুরুতে যেমন বলেছিলাম, যাদের মাথায় ঘিলু অত্যধিক বেশি তারা খুবই মজার মজার কিছু গেম আয়োজন করত (একবার একটা গেম হয়েছিলো এরকম যে যাকে যা বলা হবে তাকে তা অভিনয় করে দেখাতে হবে, পল্টুকে বলা হলো যেকোনও একজনের দিকে তাকিয়ে ‘আই লাভ ইউ’ বলতে, পল্টু আমার দিকে তাকিয়ে বললো “তুই তো আমার ঠিক সামনে বসে আছিস, তোকেই বলি নাহয়”) !! :-/ তো এরকমই খুব প্রতিভাধরদের একজন ছিলো বল্টু (সবগুলোই ছদ্মনাম)। বল্টু ঝাক্কাস সমস্ত গেম তো আয়োজন করতোই, প্লাস খুব মজার মজার কিছু কল্প-গল্প লিখতো, দেখা যেত গল্পগুলোর চরিত্র আর কেউ নয়, এই আমরাই ! বলাই বাহুল্য, প্রতিটি গল্পই খুব অসাধারণ ছিলো। গুল্পগুলো সে লিখে প্রিন্ট করে আনতো, আমরা সবাই গোল হয়ে বসতাম, কেউ একজন কাগজটা আমার হাতে ধরিয়ে দিতো, আমি জোরে জোরে পড়া শুরু করতাম আর সবাই হেসে কুটিপাটি হয়ে যেতো।

তো এই বল্টু একবার আমাদের সবাইকে (মেয়েদেরকে তো বটেই, ছেলেদেরকেও) একটা জোক এসএমএস করেছিলো, যেটা পড়ে তো আমাদের মাথা ঘুরে যাওয়ার মত অবস্থা। অরিজিনাল মেসেজটা ছিলো হিন্দিতে, আমি বাংলায় তর্জমা করে দিলাম (সামুব্লগে হিন্দি ফন্ট নেই, থাকলে তাতেই লেখা যেত... ইংরেজিতে/বাংলায় হিন্দি লেখার চাইতে বাংলায় বাংলা লেখাই তো ভালো, তাই না?) B-)

"অ্যাই... করো না... একবার করো না প্লিজ...
মাত্র একবার... কেউ তো এখন নেই এখানে...
ভীষণ মন চাইছে আমার... কি ক্ষতি হয় একবার করলে?...
প্লিজ ‘না’ বোলো না... কেউ জানতেও পাবে না...
বিনিময়ে আমি তো একটু সুখ পাবো...
আমার ভালোবাসার দোহাই...
প্লিজ... মাত্র একবার করো...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
ছোট্ট একটা এসএমএস !!!" =p~ =p~ =p~
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩১
৬৯টি মন্তব্য ৬৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×