সে অনেক অনেক আগের কথাঃ
আমি এই ব্লগে লেখার ইচ্ছা পোষণ করতাম। তখন অনেক গুনমান সম্পন্ন লোকবর্গ এই ব্লগে লেখা প্রকাশ করার জন্য চেষ্টা তদবির করিত। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। বিভিন্ন সমস্যার কারনে লিখিতে পারিতাম না (গুনমানহীন লেখা আবার এই ব্লগে খাইত না)। অগত্যা লেখা বাদ দিয়া নিজের কাজে মনোনিবেশ করিতাম। আইজকা আবার পুরান ভুতে পাইছে। তাই একটা লেখা না লেইখ্যা পারলাম না। মনের ভিতর কুটকুটানি রাখতে পারলাম না। মতামাতগুলি সম্পূর্ণই আমার নিজের। কেউ আবার ভুল বুইঝেন না যেন। আরেক খান কথা: এই লেখাটা আগে আমার ফেসবুক টাইম লাইনেও দিছিলাম
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বর্তমানে বাস্তবতায় এক কালের অজেয় অষ্ট্রেলিয়া হওয়ার পথে। ক্রিকেট প্রেমীরা আমার মতই সবাই এই ব্যাপারটা হয়তো বুঝে গেছেন। আমার মত ক্রিকেট প্রেমীর জন্য ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যন্ডের লর্ডসের বেলকনিতে মাশরাফির হাস্যোজ্বল ট্রফি হাতে ছবিটি কল্পনা করা হয়তো অন্যায় কিছু হবে না, হয়তো বাড়াবাড়ি কিছুও হবে না।
কারনঃ
১) বর্তমান বাংলাদেশ দল: কি নেই এই দলে? মানে আমি প্রতিটি পজিশনে পারফর্মারদের কথা বলছি। বাংলাদেশ একটি সুশৃঙ্খল টিম হয়ে উঠার কথা বলছি।
২) দলনেতা: ..........মাশরাফি বিন মর্তুজা..............(নো কমেন্টস)
৩) “স্যার লিটন কুমার দাস” !!!!!!!!?????!!!!!! (একটু তো ব্যাখ্যা দিতেই হয়)
বর্তমানে “স্যার লিটন কুমার দাস” বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অপরিহার্য একজন খেলোয়াড়ের নাম। প্রথম একাদশে ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসাবে তিনি Automatic Choice. তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। কেন হবেন না? তার কীর্তিময় ২২টি ওডিআই ইনিংসগুলো আপনার মনেও সাড়া জাগাতে পারে। ইনিংসগুলো নিজেই দেখে নিন:
৮-৩৬-৩৪-০০-১৭-৫-০০-৭-১৭-২১-১৪-৬-০০-৬-৪১-৬-১২১-০০-৪-৮৩-৪১-৮
ওপেনিং-এ তাঁর কোন বিকল্প নেই। কিভাবে থাকবে? যেখানে তামিম ইকবাল সম্পর্কে মন্তব্য করা আমাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ছাড়া আর কিছুই না। তামিম ইকবাল শুধু বর্তমান বাংলাদেশ দলের নয় সমস্ত বিশ্ব ক্রিকেটের বিশ্বসেরা দু’একজন ওপেনারদের মধ্যে একজন। সাদমান ইসলাম সম্পর্কে কোন মন্তব্য করলাম না, তার সবে শুরু। বাকি রইল দুই জন: ১। ইমরুল কায়েস ও ২। সৌম্য সরকার।
ক্রিকেট পাগল, ভক্ত সবাই জানেন, একজন ক্লাসিক্যাল/টেকনিক্যাল ওপেনিং ব্যাটসম্যান এবং অন্যান্য পজিশনের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কিছু পার্থক্য তো আছেই। আমারতো মনে হয় ঐ যে দুই জন ইমরুল ও সৌম্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তামিমের পর তাঁরাই ওপেনিং-এ দলকে একটা দৃঢ়তা প্রদান এবং ব্যাটিং সৌন্দর্যের বাস্তব দৃষ্টান্ত। “ইমরুল কায়েস” যিনি তামিমের অবর্তমানে শেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজে ১৪৪-৯০-১১৫ এর আগে এশিয়া কাপে বাঁচা মরার লড়াইয়ে খুলনা থেকে উড়ে গিয়ে আরব আমিরাতের ৪৬ ডিগ্রী তাপমাত্রায় ৭২ রানের একটি অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে খাদের কিনারা থেকে উঠিয়ে আনলেন ফাইনালে। এ আর এমনকি ব্যাপার! “স্যার লিটন কুমার দাস” এর ক্যারিয়ারের সামনে এগুলি নস্যি। ইমরুলকে তাই ওপেনিং পজিশন ছেড়ে ওয়ান ডাউনে খেলতে হয় নতুবা রিজার্ভ বেঞ্চ। অপর দিকে সৌম্য সরকার বাংলাদেশ ক্রিকেটে ধূমকেতুর মত আবির্ভাব যার। অপরূপ সৌন্দর্যের ব্যাটিং শৈলী। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজে একটি বিধ্বংসী সেঞ্চুরি সহ মোট ২টি সেঞ্চুরি ও ৬টি হাফ সেঞ্চুরির অধিকারী। শেষ দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচের সাইক্লোন সেঞ্চুরিগুলি না হয় নাই বললাম। কিন্তু বিধি ভাম, “স্যার লিটন কুমার দাস” এর ক্যারিয়ারের কাছে এগুলো ধূলি কনা মাত্র। “স্যার লিটন কুমার দাস” এর পজিশান ঠিক রাখতে সৌম্যকেও অবশ্যই খেলতে হবে ৬/৭ পজিশনে অথবা রিজার্ভ বেঞ্চ।
মোহাম্মদ মিথুন: জাতীয় দলে মিডল অর্ডারে ভরসা হয়ে উঠছেন। হয়তোবা একদিন মুশফিকুর রহিমের পরবর্তীতে তিনিই হয়ে উঠবেন তাঁর উত্তরসূরী! সে নিজে একজন উইকেট কিপারও বটে। জাতীয় দলে সর্বশেষ কিছু ভাল পারফরমেন্স করার পরও প্রথম একাদশে তাকে ছাড়াই দল গঠন করতে হয়, শুধু মাত্র “স্যার লিটন কুমার দাস” এর সম্মানে।
সর্বশেষে “স্যার লিটন কুমার দাস” এর অর্জন....
ক) একটি সিরিজে তিনি “অলরাউন্ডার” সাকিব আল হাসানের বিকল্প হিসাবে খেললেন।
খ) কিছুদিন দেখলাম “ওপেনার” তামিম ইকবাল এর বিকল্প হিসাবে।
গ) জিম্বাবুয়ে সিরিজে দলের মূল “পেসার” মোস্তাফিজ এর বিকল্প।
ঘ) আরও কিছুদিন আগে মুশফিকুর রহমান এর বিকল্প হিসাবে তাঁকে গন্য করা হতো।
যিনি দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের অপরিহার্য বিকল্প খেলোয়াড় এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফিক্সড্ ওপেনার তিনিই তো আমাদের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র। বাংলাদেশ ক্রিকেটের একমাত্র কান্ডারী। সমগ্র বাংলাদেশ আজ চেয়ে আছে তাঁর অনাগত সমৃদ্ধ অর্জনের দিকে।
তাই নয় কি?
লেখা: আজাদ (আমি নিজেই)
সহায়তায়: বাহাদুর (বন্ধু মিজান)
কিছু সূত্র: https://www.espncricinfo.com/
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭