somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণতান্ত্রিক বিধিসিদ্ধতাকে কবর দেয়া

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিসরীয় জাতীর গণতন্ত্রের ভাগ্যাকাশে আবার নেমে আসলো কালো অন্ধকার। গণতান্ত্রিক অধিকারের সুযোগ নিয়ে গণতন্ত্রকেই কবর দেয়া হল। ২০১৩ সালের জুলাই মাসের শুরুতে দেশটির রাজনীতিতে যা ঘটল ইতিহাসে তা হয়ে থাকবে এক কালো অধ্যায়। যে কাহিনীর জন্ম নিল তা যেমন দু:খজনক ইসলামী রাজনীতির জন্য তেমনি সে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য। মিশরের হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম একটি স্বৈরাচার মুক্ত নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত লক্ষ লক্ষ জনতার রায়কে পদদলিত করা হল, গণতান্ত্রিক বিধিসিদ্ধতাকে কবর দেয়া হল।

স্বৈরাচারী মোবারক শাসনামলের সৃষ্ট কায়েমি স্বার্থবাদিদের স্বার্থান্বেষী চক্রের অবিরাম অপপ্রচেষ্টায় ফিরে আসছে কুখ্যাত শাসনের প্রেতাত্মা। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহ্ম্মদ মুরসী বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, বামপন্থী মোর্চাকে সাথে নিয়ে ও মিশরীয় কিছু সাধারণ মানুষের অধৈর্য্যর সুযোগ নিয়ে ধন্যাট্য ও পুঁজিপতিদের মালিকানার মিডিয়ার অপকৌশলে হাজারো মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে সেনাবাহিনীর হাতে পুনরায় ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার যে নাটক করা হল তা যা মিশরের ইতিহাসে সত্যিই এক কালো অধ্যায় হিসাবে চিহ্নিত থাকবে।

প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং সংবিধান স্থগিতের ঘোষণা দেন সেনাবাহিনীর প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। যে পাতর চাপায় পড়ল মিশরের সাধারণ জনগণ তা থেকে কবে মুক্তি পাবে সেটাই হচ্ছে এখন বড় প্রশ্ন।

সামরিক সরকার বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল করার প্রথমেই গণতন্ত্রের উদাহরণ ও উপহার দিল মিসরের চারটি টিভি চ্যনালের বন্ধ করার মাধ্যমে। সেই সাথে বন্ধী করল জনতার ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতাদেরকে। তাই আজ অনেকের মনে আশংকা দীর্ঘমেয়াদী একনায়কত্ব পাতন করে আরব বিশ্বের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অনুপ্রাণিত সবচেয়ে জনবহুল যে আরব দেশ তা কি এক বছর শেষ না হতেই গণতান্ত্রিক পরীক্ষায় ব্যর্থ হল? অনেকের মতে মুরসির হয়তো মারাত্মক ভুল হয়েছে যখন তার জনপ্রিয়তা শীর্ষে ছিল তখনই দেশের সামরিক বাহিনীকে পুরাপুরি বেসামরিক তত্বাবধানে নিয়ে আসার ব্যর্থতায়। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার মোহাম্মদ আইয়ুব লিখেছেন Morsy's gravest mistakes have resulted from a deliberate policy of accommodation and not, as is commonly believed, confrontation. পরে যখনই তিনি কিছু শক্ত পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছিলেন তখন বিরোধীরা চিৎকার শুরু করে। মুরসি সব সময় বলতেন তিনি সকল মিসরের সবার প্রসিডেন্ট। মুরসি সবাইকে নিয়ে চলতে চেয়েছিলেন এবং তার সরকারের বিভিন্ন পদে ও মন্ত্রিপরিষদে মুসলিম ব্রাদারহুড ছাড়াও বাহিরের লোকদেরকে নিয়েছিলেন। কিন্তু যখনই তার বিপক্ষে বিরোধীদের প্রতিবাদ একটু বাড়তে শুরু করল তখনই এরা মুরসির জাহাজ থেকে লাফ দিয়ে চলে যেতে লাগল! এতে তার সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ পেল। আর সে জন্য সামরিক বাহিনী দ্রুত ক্যু করার সুযোগ নিল। অন্য দিকে মিডিয়াতে মুসলিম ব্রাদারহুড দেশে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে অন্যান্য মতের ও দলের মানুষের জীবন বিপদগ্রস্ত করে ফেলবে বলে এক ধরণের বায়বীয় আতংক ছড়াতে থাকে সর্বত্র।

আসলে দীর্ঘমেয়াদী একনায়কত্ব চালু থাকায় ও দুর্নীতি ব্যবস্থাপনায় মিশরে যে একটি শাসক শ্রেণী তৈরি হয়েছিল - যারা আরব বসন্তের ঝড় হাওয়ায় কিছুদিন অপ্রস্তুত ছিলো পাল্টা আক্রমণের যার ফলে দেশের সাধারণ মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় এবং তাদের ভোটে মুসলিম ব্রাদারহুড ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল কিন্তু তাদেরকে, তাদের ইসলামী আদর্শ অনুসরন, সততা শহুরের উচ্চশ্রেনীর গুষ্টি মেনে নিতে পারে নাই শুরু থেকে। গত এক বছরে দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের সুযোগে সেই অভিজাত শ্রেনীর তাদের স্বার্থ রক্ষায় পুনঃসংগঠিত হয়ে তারাই আবার ফিরে এসেছে ক্ষমতায়। মুরসিকে কেন সারনো হল তার কিছু বিশ্লেষণ দেখতে পাবেন নিচের লিংকগুলায়।
১)) মুরসিকে কেন সরে যেতে হলো?

২) সি এন এন ওয়েব সাইটে প্রকাশিত মিসিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার মোহাম্মদ আইয়ুবের প্রবন্ধ ।

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:১৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×