বিখ্যাতদের মজার কাহিনী-১
# ১
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তখন খ্যাতির শীর্ষে। অন্যদিকে একই নামে আরেকজন পণ্ডিত ছিলেন ওপার বাংলায়, তার নাম শরৎচন্দ্র পণ্ডিত, তিনি আবার দাদাঠাকুর নামে ছড়া লিখে খ্যাতির শিখরে। এদিকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ও চরিত্রহীন উপন্যাসটির কল্যাণে চারদিকে দারুণ জনপ্রিয়। দাদাঠাকুর একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন, যার নাম বিদূষক। একদিন এক অনুষ্ঠানে দুই শরৎচন্দ্রই ছিলেন আমন্ত্রিত। ইতিমধ্যে দুজনই দুজনের নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত কিন্তু সামনাসামনি কেউ কাউকে এর আগে দেখেননি। পরিচয়পর্বে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রসিকতা করার লোভটা আর সংবরণ করতে পারলেন না। তিনি বললেন, ‘ও, তাহলে আপনিই বুঝি বিদূষক শরৎচন্দ্র!’
দাদাঠাকুরও কম রসিকতা জানতেন না। তিনি পাল্টা বললেন, ‘আজ্ঞে হ্যাঁ। আপনি নিশ্চয় চরিত্রহীন শরৎচন্দ্র?’
# ২
খ্যাতনামা লেখক রবার্ট লুই স্টিভেনসনের একটি বিখ্যাত বই দ্য স্ট্রেঞ্জ কেস অব ড· জেকিল অ্যান্ড মি· হাইড। ১৮৮৬ সালে তিনি বইটি লেখেন। এ বই লেখার সময় তাঁকে এমন নেশায় পেয়ে বসেছিল যে তিনি ঘোষণা দেন, লেখালেখির সময় তাঁকে বিরক্ত করা চলবে না। এমনকি বাড়িতে আগুন লাগলেও তাঁর কাছে ঘেঁষা যাবে না।
# ৩
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট লিংকনের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টির একজন আইনজীবী ফেডারেল কোর্টের বিচারক হওয়ার জন্য জ্বালিয়ে মারছিলেন। কিন্তু তাঁর দক্ষতার ওপর একটুও আস্থা ছিল না লিংকনের। কিন্তু তিনি আবার সরাসরি না-ও বলতে পারছিলেন না। তাই তিনি তাঁকে বোঝালেন যে আপাতত বিচারকের কোনো পদ খালি নেই বলে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। মন খারাপ করে ওই আইনজীবী একদিন দেখেন, রাজধানীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে একজন ফেডারেল বিচারকের লাশ ভেসে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত হোয়াইট হাউসে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট লিংকনকে বললেন, ‘এবার নিশ্চয় আর আমাকে বিচারক নিয়োগে কোনো সমস্যা নেই?’
প্রেসিডেন্ট লিংকন জানালেন, ‘আমি সত্যি খুব দুঃখিত, আপনি পৌঁছাতে একটু দেরি করে ফেলেছেন। যে আইনজীবী তাঁকে পানিতে পড়তে দেখেছেন, আমরা ইতিমধ্যে তাঁকে বিচারক নিযুক্ত করে ফেলেছি।’
# ৪
১৮৪৬ সালে কংগ্রেসে নির্বাচনের প্রাক্কালে আব্রাহাম লিংকন পিটার কার্টরাইট কর্তৃক পরিচালিত একটি প্রার্থনা সভায় যোগদান করেন। প্রার্থনার একপর্যায়ে কার্টরাইট উপস্থিত প্রার্থনাকারীদের মধ্যে যারা স্বর্গে যেতে চান তাঁদের উঠে দাঁড়াতে বললেন। লিংকন ছাড়া সবাই উঠে দাঁড়ালেন। অতঃপর যাঁরা নরকে যেতে চান না তাঁদের তিনি উঠে দাঁড়াতে বললে এবারও লিংকন ঠায় বসে রইলেন। এটা লক্ষ করে কার্টরাইট বলতে লাগলেন, ‘আমি আশ্চর্যান্বিত। মি. লিংকন যখন স্বর্গেও যেতে চান না আবার নরক থেকেও পরিত্রাণ পেতে চান না, তাহলে তিনি আমাদের বলবেন কি, তিনি কোথায় যেতে চান?’
লিংকন আস্তে উঠে দাঁড়িয়ে জবাব দিলেন, ‘আমি কংগ্রেসে যেতে চাইছি।’
# ৫
ভারতের সাংস্কৃতিক জগতে অন্যতম বহুমুখী প্রতিভা কিশোর কুমার অভিনয় ও গানে সমান পারদর্শী ছিলেন। বাস্তব জীবনে তিনি ছিলেন দারুণ এক রসিক মানুষ। একবার কোনো এক পরিচালক তাঁকে অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিকের অর্ধেক টাকা দেন। বাকি টাকা নিয়ে ঘোরাচ্ছিলেন। কিন্তু রসরাজ কিশোরের পারিশ্রমিক আটকে রাখে কার সাধ্য? একদিন মাথার চুল অর্ধেক কামিয়ে শুটিং স্পটে হাজির হলেন তিনি। দেখে তো নির্মাতার আক্কেল গুড়ুম! কিশোরকে তিনি শুধালেন, ‘কী ব্যাপার, তোমার এ অবস্থা কেন?’
কিশোর কুমার অবলীলায় বললেন, ‘আজ্ঞে, পারিশ্রমিকের বাকি অর্ধেকটা পেলে বাকি চুলটুকু কামাব ভাবছি।
.............. সংগৃহীত
বিখ্যাতদের মজার কাহিনী-৩
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৬:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




