somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

কালচার করা মাংসের অনুমোদন চাই

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিংগাপুরের মানুষ এখন কালচার করা মুরগির নাগেট খেতে পারবে সাধারণ মুরগির নাগেটের মতো দামেই। গত বছরই সিংগাপুরের সরকার অনুমোদন দিয়েছে। প্রাণি হত্যা করার কারণে যারা মাংস খাওয়া বাদ দিয়েছিলেন তারাও খেতে পারবেন- কারচার করা মাছ, মুরগী, গরু, খাসির মাংস। নিরামিষাশীরাও নিরামিষ ছেড়ে চলে আসতে পারবে কালচার মাংসে। এগুলো যেহেতু পশু হত্যা করে তৈরি করা নয় এবং নিরাপদ ও দূষণমুক্ত মাংস তাই প্রাণি হত্যার বিরোধীরাও নিতে পারবে মাংসের স্বাদ। শিঘ্রই বিশ্বব্যাপী মাংসের বাজার দখলে নিতে পারে এই মাংস। মানে মাংস আরো চলে গেল কর্পোরেটদের হাতে। পশু জবাইয়ের পরিবর্তে বিজ্ঞানীরা মাংস তৈরিতে প্রাণীর স্টেম সেল ব্যবহার করবেন।

প্রাণির শরীরে শত শত বিভিন্ন ধরণের কোষ বা সেল রয়েছে। এই কোষগুলি আমাদের দেহকে চালিত রাখার জন্য কাজ করে। স্টেম সেল ভাগ হওয়ার সময় তারা নিজেরাই আরও স্টেম সেল তৈরি করতে পারে বা অনেক ধরণের কোষ তৈরি করতে পারে। প্রাণি যখন আহত বা অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন তাদের কোষগুলোও আহত হয় বা মারা হয়। এটি যখন ঘটে তখন স্টেম সেল সক্রিয় হয়। স্টেম সেলগুলো আহত টিস্যুগুলো ঠিক করার এবং নিয়মিতভাবে মারা যাওয়া অন্যান্য কোষগুলোর প্রতিস্থাপনের কাজ করে। এভাবে স্টেম সেলগুলো প্রাণিদের সুস্থ রাখে। প্রাণির দেহের প্রতিটি অঙ্গের নিজস্ব নির্দিষ্ট ধরণের স্টেম সেল রয়েছে। যেমন দেহে নুতন রক্ত তৈরি হয় পুরনো রক্ত থেকে। বিজ্ঞানীরা প্রাণীর স্টেম সেল ব্যবহার করে সেই প্রাণির মাংস উৎপন্ন করছেন পরীক্ষাগারে। যেমন গরুর স্টেম সেল থেকে গরুর মাংস, মুরগির স্টেম সেল থেকে মুরগির মাংস, বোয়াল মাছের স্টেম সের থেকে বোয়াল মাছ। ল্যাবে তৈরি এই মাংসের চেহারা হবে প্রকৃত মাংসের মতোই এবং স্বাদ ও পুষ্টিগুণও একই থাকবে।

আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠান মাংসের কয়েকটি নমুনা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছে। কালচার করা মাংস খেয়ে লোকেরা বলেছে, এটি আসল মাংসের মতোই স্বাদযুক্ত। তাদের পক্ষে কালচার করা ও আসল মাংসের মধ্যে স্বাদ ও দেখায় পার্থক্য করা কঠিন ছিল। দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করা হচ্ছিল কালচার মাংসের। ২০১২ সালে ল্যাব থেকে তৈরি কালচার করা মাংস দিয়ে একটি বার্গার তৈরি করে সাংবাদিকদের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল। তাতে মাংসে খুব অল্প পরিমাণে চর্বিযুক্ত হওয়ার ফলে সত্যিকারের সাংসের গুণাবলীর অভাব দেখা গিয়েছিল এবং মাংস খুবই শুষ্ক বলে প্রতীয়মান হয়েছিল। সেই বার্গার তৈরি করতে লেগেছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা। সেই চেষ্টারই এখন বাস্তব রূপ দেখা যাচ্ছে। এখন সত্যিকারের মাংসের মতোর মাংস তৈরি হচ্ছে ল্যাবে।

সাধারণ পশুর মাংসের তুলনায় ল্যাবে তৈরি কালচার করা মাংস অধিকতর পরিবেশ বান্ধব হবে। এটি প্রাণিসম্পদের প্রয়োজনীয়তা অপসারণ করবে। ফলে মানুষের খাদ্যসংকট দূর করবে। প্রাণিদের হত্যা করার প্রয়োজন কমে আসবে। বনগুলো আবারো ভরে উঠতে পারে প্রাণচাঞ্চল্যে। এই মাংস হবে অধিকতর উন্নত, খাবার যোগ্য। এই মাংস উৎপাদনে শক্তির ব্যবহার ৪৫% হ্রাস করবে, জমির ব্যবহার ৯৯% হ্রাস করবে, গ্রিনহাউজ গ্যাস উৎপাদন ৯৬% হ্রাস করবে। এটি প্রাণি-বান্ধবও হবে। এতে কোন প্রাণির কোন ক্ষতি করা বা অনৈতিক কোন আচরণ করা হবে না। পানির ব্যবহার হ্রাস পাবে। মাংস থেকে ক্ষতিকর দিকগুলো বাদ দেয়াও সহজ হবে। আর কি কি চাই এখনই ভাবুন নইলে আপনার ভাবনাকেও ছাড়িয়ে যাবে। বিজ্ঞানীরা এই মাংসকে আরো নিখুত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন একই সাথে স্বল্প মূল্যে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছেন। অনুমান করা হচ্ছে যে, কয়েকটি দেশে ল্যাব থেকে উৎপাদিত মাংস সম্পূর্ণ বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া যাবে ২০২২ সালের প্রথম দিকেই। হয়তো বাংলাদেশেও চলে আসবে তখন। কিছুদিন হারাম-টারাম বলে কিছু মানুষকে মাংস খাওয়া থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করবে তারপর একদিন তারাসহ সবাই-ই খাওয়া শুরু করবে। কালচার করা মাংস খাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি শুরু করে বসে আছি। এখন অনুমোদন চাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৫
১৬টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×