আলহামদুলিল্লাহ! অনেক অপেক্ষার পালা শেষ করে নিজের চাহিদা আর যোগ্যতার সাথে সমতা রেখে অর্ধাঙ্গিনী খুজে নিয়ে বিবাহ করেছি, আজ তার ৭ম দিন।
মনের মত বলেছি এই জন্য যে, যখন বিয়ে করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখনই, একটি ছোট পরিবার, সুযোগ থাকলে একমাত্র জামাই হওয়া তবে ভাইয়ের মত একজন শ্যালক আর সামাজিক ভাবে সম্মানিত কাউকে খুজছিলাম।
৩০ শে সেপ্টেম্বর কিছু যেন একটা মনে করে ফেইসবুকে একটা লেখা লিখেছিলাম। সেখান থেকেই শুরু। লেখাটি চোখে পরে যায় বাংলাদেশে যৌতুক বিরোধী আন্দোলনের অনলাইন প্লাটফর্ম এর উদ্দোক্তা আমানুল্লাহ সরকার রাসেল ভাইয়ের। যদিও তার আগেও এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন আমারই খুব কাছে বড় ভাই, যিনি এখন সম্পর্কে মামা শ্বশুর। সকল প্রক্রিয়া শেষ করে আল্লাহকে ভরসা করে সামনে এগিয়ে গেলাম। এর মধ্যে আব্বু, আম্মু আর মামীকে পাঠিয়েছিলাম আমার স্ত্রীকে দেখার জন্য।
সবার এক কথায় "আলহামদুলিল্লাহ" বলেছিল সেদিন। আমার মনে আছে। নিজেদের মাঝে বোঝাপড়ার অধ্যায়টা শেষ করে বিয়ের পিড়িতে বসে গেলাম।
জি হাঁ। আমিই একমাত্র জামাই। আর ভাইয়ের মত ছোট একটি শ্যালকও রয়েছে আমার। শ্বশুর মশাই গতরাতে ফোন দিয়ে বলেন, "আব্বা, তুমি কেমন আছে?" বুঝতে পারছেন একমাত্র জামাই হলে যা হয় আর কি। শিক্ষিকা শ্বাশুড়ির তো কোন তুল নাই হয় না।
ছোট পরিবারের চাহিদার চুড়ান্ত ভাবে পূর্ন হল।
এবার আসি বিবাহ প্রক্তিয়া বিয়ে। যেহেতু আমি দেশের বাহিরে আর মাত্র কিছুদিন আগে দেশ থেকে এসেছি তাই আবার দেশে যাওয়ারও সুযোগ নেই। বিবাহ স্কাইপে হবে। দেশের মানুষেরা তাঁদের চুড়ান্ত প্রচেষ্টায় সুন্দর আয়োজন করেছেন। আর তার্কিতে আমিও চেষ্টা করেছি সবাইকে নিয়ে একটি বিবাহের পরিবারহ তৈরি করতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসর এবং অন্য টিচার, স্থানীয় নানান সংগঠনের দায়িত্বশীল আর তাদের পরিবার, আমার অফিসের অঞ্চল এডিটর এবং কলিগ, আঙ্কারা,ইস্তানবুল থেকে আসা আমার ফ্রেন্ড সার্কেল আর আমার এখানে থাকা বাংলাদেশী কমিউনিটি, যারা আমার জন্য আগের দিন রাত অব্দি দাঁড়িয়ে থেকে রান্না করেছেন, সব আয়োজন করেছেন তারা সহ প্রায় ৬০-৬৫ জন মেহমান হয়েছিলেন। আয়োজনে বাংলাদেশী বিবাহের খাবাদের স্বাদ দিতে চেষ্টা করেছি।
অফিস থেকে বলা হল এটা নিউজ করবে। আমার অনুমতি চাইল। আমি আর না করি নাই। তার্কির জাতীয় টেলিভিশন ,পত্রিকা সহ বেশ অনেক গুলো চ্যানেল এটা কভারেজ দিয়েছে।
Link- Click This Link
এবার আসি মজার একটা বিষয়, মানুষ বিবাহ করে আর তার প্রস্তুতি হিসেবে গাড়ী, শেরওয়ানী আরো কত কি। আমাদের বিবাহে আমার জন্য তেমন কিছু কিন্তু হয় নাই। কিন্তু আমি যথেষ্ট খুশি। আগের দিন আমার নীল পাঞ্জাবীটা খুজছিলাম। কিন্তু কোথাও খুজে পাই নাই। শেষ অব্দি রাশেদ ভাইয়ের পাঞ্জাবী আর একজনের চাদরকে পাগড়ি বানিয়ে বিয়ে সেরে ফেললাম। সবাক যখন বাসা থেকে বিবাহের স্থানে আসছিলাম একা একা এসেছি। পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে। আর বাংলাদেশী বাকিরা আগে থেকেই সেখানে আগের রাত থেকে রান্না করছিল। আমার কোন আক্ষেপ নেই তবুও। খুব ভাল আছি। আনন্দে আছি। আলহামদুলিল্লাহ।।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫