somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"জলপাই তোমাকে"

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১০ সকাল ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"জলপাই তোমাকে"
মোঃ মোনতাসির মামুন (শিমুল)
বলবার মত করে বলা হয়নি কখনো ।
তবে দেখবার মত করে দেখেছি বহুবার ।
তখন বর্ষা।বৃষ্টির কুয়াশায় ট্রেনের জানালা ঝাপসা হয়ে গেছে।
বহুদিন পর ক্যাম্পাসে যাব।বহু পথ একা যেতে হবে।
তাই রাইগারের ক্লিওপেট্রা এনেছি সঙ্গে।সঙ্গী হিসাবে ভালোই।
তবে হার্মাসিসের জন্য বেশ কষ্ট হচ্ছে।
ওর নীলের জলে ভেসে যাওয়া , সব প্রতিজ্ঞা বদ্ধ প্রতিশোধের জন্য।
হায় নারী! অন্তহীন চাওয়া নিয়ে কি অনবদ্য প্রত্যাখান তোমার।
হঠাৎ হুইসেল। বড়ই বেরসিকের মত কানে বিঁধলো।
বুঝলাম কোথাও থামছে ট্রেন।কোথায় সেটা বুঝতে পারছিনা।
জানালায় কুয়াশার স্রোত। অস্পষ্ট কিছু মানুষের কোলাহল।
কিছুটা বিরক্তই হলাম, তিন হাজার বছর অতীত থেকে বর্তমানে এসে।
ঠান্ডা লাগছে। ডিসেম্বর মাস হলে কথা ছিল।
কিন্তু এখন ঠান্ডা লাগছে কেন বুঝতে পারলাম না।
ভাবছি একটু চা খেলে ভাল হতো।মনে মনে এ্যাটেনডেন্টকে খুঁজতে লাগলাম।
তারপর সেই প্রথম দেখা।এরপর ওকে দেখেছি বহুবার
কখনও ক্যাফেতে,কখনও প্যারিসে অথবা থার্ড সায়েন্সের সামনে।
কখনও বৃষ্টিতে, কখনও রৌদ্দুরে অথবা শরৎ এর নীল আকাশের নীচে।
যতবার দেখেছি ওকে, মনে পড়ে, সাদা শাড়ী লাল পাড়ে,ছোট্ট লাল টিপ।
মেঘ কালো চুলে তখনও বৃষ্টির ফোঁটা।এই বৃষ্টির সন্ধ্যায়,
ধূসর গোধূলী যেন ওর চোখে কোন বনের মায়া দিয়ে গেছে।
মুঠো ফোনের শব্দে নিজেকে ফিরে পেলাম
বাইরে বৃষ্টি কমেছে। জানালা খুলে দিলাম।
ঠান্ডা বাতাসে পানির স্পর্শ।
সব কিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেল।
ক্লাসিক শব্দের ভান্ডারেও নির্বাক শব্দ আর নীরব রইল না।
বাতাসের ঝাপটায় সব কিছু ছিঁড়ে, ফুঁড়ে যেন
আমাকে বলতে লাগল দেবতার আশীর্বাদে হার্মাসিস
যা পারেনি তা তুই পারবি কি করে?
বাইরে অন্ধকার নেমেছে। আকাশে মেঘে কাটা শুকা দ্বাদশীর চাঁদ।
বাতাসে পচাঁ পাটের গন্ধ, ভেজা পাতায় মোহময়ী জোৎস্না।
বহুকাল পরে কোন এক গ্রীষ্মের অবকাশে আমি ভেবেছি
যার উপস্থিতি আমাকে তার অনস্তিত্বের চেয়েও ঢের বেশি কষ্ট দেয়।
যার একটা না বলা অভিমান আমাকে তার অজস্র কষ্টের চেয়েও ঢের বেশি দিশেহারা করে
সেই ভরা সন্ধ্যায়, এই আমি কিভাবে, কি অপলকে চেয়ে ছিলাম
ঠান্ডা বাতাসে ওর উড়ে যাওয়া চুলের উদাসীনতায় !
নাড়ার আগুন তখনও আলোহীন ধোয়া, বৃষ্টিহীন দূর অন্ধকারে।
বাঁশের ঝাড়ে, ঝোপে জোঁনাকীর আলো, বুনো জোৎস্নায় ম্লান।
তোমকেই বলা সব কথা চুপ, নির্বাক। ওরা ধ্রুপদী সময়ের অপেক্ষায়।
সে বলল, দয়া করে জানালাটা খুলে দিতে পারেন ?
ওর পাশের জানালা খুলতেই, ঠান্ডা বাতাসের ঝাপটাই
ওর শাড়ীর আঁচোল এসে আমাকে স্পর্শ করল।
তারপর বহুবার সময়ের দহনে, ভেবেছি ব্যবধান অনন্ত, তবু কষ্টের বিষ নিঃশ্বাসে
গভীর রাতের নিঃসঙ্গতায়, বুক ভরে ঠান্ডা বাতাস নিয়ে ভেবেছি
সেই ঘ্রাণ, স্পর্শ আজও আছে, একই আকাশের নিচে ,একই মাটির স্পর্শ দুজনার
এটাও বা নিঃশেষ প্রায় সম্পর্কের ক্ষেত্রে কম কিসের?
ওর সামনে বেরিয়ে আসা একগুচ্ছ চুল আমার খুব ভাল লাগতো
অনেক না বলা কথার ভিড়ে, ঐ একটা কথাই ওকে বলতে পেরেছি আমি।
ওর সাথে শেষ দেখা, নভেম্বরের প্রথমে,শীত এসেছে প্রায়।
সবই পরির্বতন হয়েছে ওর। দামি গাড়ি, মাথায় রোদ চশমা,অলঙ্কারের ভারে নুয়ে পড়া দেহ।
স্কাই লাইটের মৃদু আলো তখনও নেভেনি,বললাম
কতদিন পর দেখা! ও বলল হ্যাঁ, অনেক দিন পর।
তোমার সাথে ও কে ? বলল ,ও আমার ছেলে।
তোমারতো অনেক পরির্বতন হয়েছে ? উত্তরে বললাম তোমার কিছুই কি বলবার নেই?
তারপর দীর্ঘ নীরবতা, না কিছুই বলার নেই আমার, বলে ও চলে গেল।
তখনও ফুট পথে স্থবীর আমি; একা ।
হঠাৎ গোধূলীর শেষ আলোয় যেন দেখলাম ওর এক গুচ্ছ চুল তখনও বাতাসে উড়ছে!
ভাবলাম সত্যিই হয়তো বলবার মত করে বলা হয়নি কখনও।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১০ সকাল ১০:২৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×