ঘুম ভাঙলো মিতুর। সারারাত ও শ্রাবণের সাথে কথা বলেছে। শ্রাবণের সাথে ওর পরিচয় একটা চ্যাটিং সাইটের মাধ্যমে। প্রথমে ওর ছবি দেখে ভড়কে গেলেও বন্ধুত্ব করার পর ওকে ভালোই লেগেছে মিতুর। কোচিং আর নিঃসংগতার মাঝে ওর সাথে কথা বলাটাই একসময় মিতুর জন্য সারাদিনের একমাত্র আনন্দের কাজ হয়ে উঠল। তুমি করে বললেও দুজনের বন্ধুত্বটা আসলেই ভালো ছিল। শ্রাবণ ওর থেকে বয়সে একটু বড় বলে ওকে তুই করে বলাটা আসলে ভালো লাগেনি মিতুর। তবে ওরা খুব তাড়াতাড়িই ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিল। মিতু ওর সব কথাই শ্রাবণকে বলেছে। শ্রাবণের দৃঢ় বিশ্বাস সায়েম ছেলেটা আসলে মিতুকে ঠকিয়েছে। কিন্তু মিতু কেনো জানি বিশ্বাসই করতে পারেনি কখনও যে সায়েম ওকে ঠকাতে পারে। ও সায়েমকে ছোটোবেলা থেকে চিনে। ওর খেলার সাথী, বড় হবার সাথী সায়েম। নাহ, সায়েম ওকে ঠকাতে পারে না। এই বিশ্বাস ওর আছে। সায়েমের পর শ্রাবণই ওর কোনো ছেলে বন্ধু । মিতুর বরাবরই কোনো ছেলে বন্ধু ছিল না। স্কুল, কলেজ দুইটাই ওর গার্লস। তাই ছেলেদের সাথে তেমন মেশা হয়নি। আর ছেলেদের মনস্তত্ব তো ওর আরো অজানা। তাই শ্রাবণ সায়েমকে না জেনেই যতটা ভালো সায়েমকে বুঝেছে মিতু তার এক আনাও বুঝেনি রাতের পর রাত কথা বলেও।
একটা ফোনকল যে মুহুর্তের মাঝেই তনুর জীবনটা পাল্টে দিবে তা তনু কখনোই ভাবেনি। ও কল্পনাও করেনি যে আফতাব ওকে এভাবে ধোঁকা দিবে। কিন্তু ও তো আফতাবকে আগে ভালোবাসেনি। আফতাবই দিনের পর দিন তনুর পিছনে ঘুরেছে। তনুকে বলেছে কতটা ভালোবাসে ও ওকে। সবই কি মিথ্যে ছিল? নাকি তনুর উপর প্রতিশোধ নিল আফতাব? কেনো এমন করলো? তনু তো ওকে সত্যিই ভালোবাসেছিল। এইসব প্রশ্নের উত্তর কে দিবে ওকে? ঐ মেয়েটা তো বলেই সব শেষ করে দিল যে আফতাব ওকে বিয়ে করেছে। কিন্তু তনুর মনের এইসব প্রশ্ন কি আফতাব দিবে তনুকে? কেন ও ঐ মেয়েটাকে বিয়ে করল? কাপুরুষ!!! নিজের মুখে বলার সাহসও নেই ওর!! ছি!! ধিক্কার !!
খবরটা সত্যিই ছিল।আফতাব ওর সামনে এসেছিলও। তনুকে অকপটে বলে দিয়েছিল যে ঐ মেয়েটাকে ও বিয়ে করেছে। কিন্তু তা শুধুই রাগের মাথায়। তনু ওকে বিয়ে করবে না বলায় ওর মাথায় জেদ চেপে গিয়েছিল। ও ঐ মেয়েটাকে বিয়ে করে ফেলেছে তনুর উপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে। তনুর পা ধরে ক্ষমা চেয়েছিল আফতাব। ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তনু। আর একবারও ফিরে তাকায়নি তনুর দিকে। ঐ রকম একটা প্রতারকের দিকে তাকানোর কোনো মানে হয় না। যে মানুষ ঘরে বউ রেখে তনুর পায়ে ধরে ওকে ফিরে পেতে চায় সে মানুষ মানুষ না।
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১২"
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১১"
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ১০"