"হ্যালো, আপনি কি রাহাত সাহেব বলছেন?" "জ্বি, বলছি। আপনি কে?" "আমি কে তা আপনি বুঝে যাবেন। কিন্তু আপনি যা করতে যাচ্ছেন তা অনেক বড় ভুল। আমি আপনার ভালো চাই, তাই আপনাকে সাবধান করতেই ফোন করলাম।" "কে আপনি? আর আমি কি করছি তা আপনি কিভাবে জানেন?" "আমি তনুর প্রথম স্বামী। তনুর সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল। আমার মনে হয় আপনি ব্যাপারটা জানেন না।" "ও, আপনি কি আফতাব? আপনার ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই আফতাব সাহেব। আমি তনুর সম্পর্কে সব জানি। আর যদি কিছু নাও জানি তাহলে আমার মনে হয় না যে আপনার কাছ থেকে আমার কিছুই জানা দরকার। আর আপনিই তো বললেন, আপনার সাথে ওর বিয়ে হয়েছিল। মানে এখন আর ও আপনার সাথে নেই। তাই আমার মনে হয় আপনার উচিত ওর ব্যাপারে নাক না গলানো।" " আপনি জেনেশুনে ভুল করতে যাচ্ছেন। তনু ভালো মেয়ে না।" " সেটা কি আমি আপনার কাছ থেকে জানতে চেয়েছি? আর ও যদি ভালো মেয়ে নাই হয় তাতে আপনার কি সমস্যা। আমার হবু স্ত্রী কি সেটা আমি বুঝব। আপনি না।" ফোন কেটে দিল রাহাত। এত অমানুষ কিভাবে হয় মানুষজন। নিজে তো মেয়েটাকে সুখে রাখতে পারেনি। তারপর আবার মেয়েটার জীবনে কোনো সুখ ও আসতে দিতে চায় না লোকটা।
রাহাত খুব ভালো করে বুঝতে পারে যে কেনো তনু নতুন কোনো রিলেশানে জড়াতে ভয় পেত। এই লোকটা নিশ্চয়ই ওর জীবনটাকে পুরো নরক বানিয়ে দিয়েছিল। তনুর সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো মনে পড়ে যায় ও। একটুতেই কত অবাক আর খুশি হয়ে যায় মেয়েটা। ওকে রিকশায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল যখন তখন ওকে বেলুন কিনে দিয়েছিল। পুরা বাচ্চাদের মতো খুশি হয়ে গিয়েছিল মেয়েটা। শান্তার কাছে তনুর অতীত নিয়ে সবই শুনছিল রাহাত। তাই ও জানে আফতাব এখনও তনুকে শান্তিতে থাকতে দেয় না। কতবার তনুর ক্যাম্পাসে গিয়েও নাকি কত মানুষের কাছে তনুর নামে খারাপ কথা বলেছে। তনু নেহায়তই শক্ত মেয়ে। নাহলে হয়তো পড়াশুনাটাও হত না ওর। আর আফতাব তো তাই চাইতো।তনু প্রথমদিনই রাহাতকে বলে দিয়েছে যে সে আরো পড়ালেখা করতে চায়। তনুর চোখে তখন একটা চমক দেখেছে রাহাত। পড়ালেখাই ওর প্রথম ভালোবাসা বুঝে গেছে সে। ভাবতেই পারা যায় না যে বাংলাদেশের একটা শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পড়েও এই কথাটা আফতাব বুঝতে পারেনি। চেয়েছে তনুকে পড়া থেকে দূরে সরাতে। হয়ত ও সফলও হতো যদি তনু ওর ভালোবাসার ফাঁদে সব ভুলে পা দিত। নিজেদের জাতির উপরই ঘৃণা আসে রাহাতের। এখনও মানুষ নারীকে সামনে এগুতে দিতে চায়না। তনুকেফোন দিল রাহাত। ওর সাথে কথা বললে হয়তো মনটা ভালো হয়ে যাবে। আজকে বাইরে ঘুরতে গেলে হয়তো আরও ভালো লাগবে। দেখা যাক ও রাজি হয় কি না। রাজি হলে সামনা সামনি ওকে আফতাবের কথা বলবে। আর বিয়ের প্রস্তাবও দিয়ে ফেলবে। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল রাহাত। ভালো লাগলো অনেক সিদ্ধান্তটা নিতে পেরে।