somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিদিনের আজাইরা প্যাঁচাল-৪

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেষ পর্যন্ত বানান ঠিক করলাম। আমার ছোট্ট একটা বানান ভুল যেমন ব্লগে আসা ভাইবোনদের চোখে পড়েনাই, তেমনি প্রতিদিন আমাদের আশেপাশের মানুষের হাজারো ভুল আমরা দেখেও দেখি না অথবা এড়িয়ে যাই। লাভটা কি হচ্ছে? মানুষের অগ্রগতির চেয়ে অবনতির গতিবেগ বেশি! একটা বয়সে মানুষের মাঝে হুট করে দেশপ্রেম, জাতিপ্রেম জিনিসটা ঢুকে যায়। বয়সটা কৈশোরে শুরু হতে পারে আবার যৌবনেও। অনেক মানুষের মাঝে জিনিসটা টিকে না, যৌবনের সাথে সাথে ঐটাও হাওয়া হয়ে যায়। জানিনা আসলে জিনিসটা ভালো না খারাপ। মিথ্যা বলব না, আমার ধারণা আমার দেশপ্রেম, জাতিপ্রেম শেষের পথে। কারণ একটা না, হাজারটা। তবে সবথেকে বড় কারণ একটা দেশ মানে কি একটা জায়গা যেখানে মানুষ থাকে নাকি মানুষ যারা দেশে বাস করে? আমার মতে মানুষ। আর যখন সেই মানুষগুলো মানুষ থাকে না, তখন সেই দেশটাকে কিভাবে ভালোবাসা যায় আমি জানিনা, আমি এতোটা উদার মনের মানুষ না যে যারা আমার পিঠে ছুরি মারবে তাদেরকে আমি ভালোবাসা দিতে পারব।
অনেকে বলবেন যে আমি গুটিকয়েক মানুষের জন্য পুরো দেশকে ভালোবাসা ছেড়ে দিব কেন? না ভাই/আপা, গুটিকয়েক মানুষ না। আপনার বুকে হাত দিয়ে বলেন, গত এক সপ্তাহে আপনি কি এমন কোনো কাজ করেন নাই যাতে অন্য কারো ক্ষতি হয়, কেউ দুঃখ পায়, কারো নিন্দা করেন নাই, চোখে দেখেও অন্যায় সহ্য করেন নাই? অবশ্যই করেছেন ,হয়তো জেনে অথবা হয়তো অজান্তে ! ফেসবুকের পাতা খুললে আমি শিউড়ে উঠি! এমন কোনো দিন নাই যেদিন একটা অমানবিক ভিডিও বা খবর বা কমেন্ট চোখে পড়ে নাই আমার! একদিন আমি ভয়ে প্রায় আধমরা হয়ে গিয়েছিলাম হুট করে চোখের সামনে একটা ভিডিও চলে আসাতে! মানুষ কিভাবে মানুষকে নির্মম ভাবে পিটাতে পারে, তার রক্ত দিয়ে গোসল করতে পারে? তাও আবার হাজার হাজার মানুষের সামনে! কোথায় নিরাপদ একজন মানুষ? বাড়িতে? রাস্তায়? দোকানে? বাজারে? স্কুল কলেজ ভার্সিটিতে?? আমিও একটা পাবলিক ভার্সিটিতে পড়েছি! আর হ্যা, আমিও নিজের চোখে অনেক কিছু দেখেছি! আমি নিজে ধুয়া তুলসী পাতা তা কিন্তু না! আমিও অমানুষ। কারণ যখন আমি ভুল করেছি তা আমার ভুল মনে হয় নি। দোষ কি আমার? না, দোষ সেই সমাজের যে সমাজ দিন দিন মানুষের মাঝে অমানবিক সব চিন্তাধারা বুনে দিচ্ছে ! যে সমাজে ভালো মানুষের কোনো দাম নেই, দাম নেই মানবিক গুণাবলীর!
নিজেদের সন্তানদের আমরা শুধু দামী স্কুলে পড়িয়েই শেষ! কিন্তু তাদের মানবিক গুণাবলী শিখাবে কে? কে তাদের শিখাবে যে মানুষ পশু না, মানুষের কাজ অপর মানুষকে হত্যা না, মানুষের কাজ অন্যের খুঁতগুলো নিয়ে হাসা না। প্লে গ্রুপে পড়া একটা বাচ্চাও শিখে যায় যে নিজেকে মহান বানাতে হলে দুর্বল বাচ্চাটাকে নিয়ে উপহাস করতে হবে, তাকে নিচু দেখাতে হবে। আর বাংগালী জাতি তো খোশগল্পের জন্য বিখ্যাত, কি হয় এসব খোশগল্পের আসরে? মানুষের জীবনযাত্রার ব্যবচ্ছেদ! অন্যের দোষগুলো অাংগুল তুলে আমরা দেখাতে পারি কিন্তু নিজের গুলো না!
মেয়ে হিসেবে একটা জিনিস শিখেছি জীবনে, সেটা হলো আমি আসলে মানুষ হিসেবে জন্ম হইনি। মানুষ হতে হলে আমাকে প্রমান করতে হবে আমি মানুষ। নাহলে আমিও একটা ফার্নিচারের মত ঘরের এক কোণায় পড়ে থাকব। আর গত কয়েক মাসে ফেসবুকে খুব একটিভ থাকার ফল হিসেবে এটাও শিখেছি যে, আসলে প্রকৃতির উচিত মানবজাতির মধ্যে থেকে স্ত্রী প্রজাতি বিলুপ্ত করে দেওয়া, কারন সাইন্স ফিকশনের মতো মেয়েরা এখন আর মানবশ্রেণীতে পড়ে না, অবমানব শ্রেণীতে পড়ে!!! মানুষের মাঝে এতটা স্ত্রী বিদ্বেষ কিভাবে থাকতে পারে? যার গর্ভে তার জন্ম, তাকেই কিভাবে মানুষ এতটা নিচে নামাতে পারে? আমি তো অনেক চিন্তা করেও বের করতে পারিনি! হয়তো আমার থেকে বেশি মাথাওয়ালা কেউ পারবে! ইদানীং আমি একটা দ্বীপ কল্পনা করি যেখানে আমি ছাড়া আর কেউ থাকবে না। মানুষ সামাজিক জীব এই ধারণাটা ভুল। মুখোশপড়া সমাজের থেকে একা থাকা অনেক ভালো!
অবশেষে মাথার ভেতরে ঘুরতে থাকা কয়েকটা লাইন!!!
"আমি কোনো দেশের নই,
আমি কোনো জাতির নই
আমি মানুষ, এটাই আমার পরিচয়,
তবে তোমাদের চোখে আমি তা নাও হতে পারি,
তোমরা ভাবতে পারো আমাকে মাল বা সম্পত্তি!
তবে হ্যাঁ, যতদিন নিঃশ্বাস নিবো আমি,
আমার সর্বশক্তি দিয়ে তোমাদের মাথা থেকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করব আমি
আমাকে মানুষের নাম না দেওয়ার সকল মিথ্যা ফন্দী!!"

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:১৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×