somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

পরীরা আছেন বলেই হোমার কে বাঙালীরা চেনেন

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এক রাজ্যে এক পরী ছিলো। সেই রাজ্যে নিশ্চয় জ্বীনেরাও ছিলো। কিন্তু পরীটা ছিলো অসম্ভব সুন্দরী। তাই পরীর উপর জ্বীনেদের বরাবর একরকম টান ছিলো।

পরিচিত একটি শ্লোগান, কেউ পাবে আর কেউ পাবে না, তা হবে না, তা হবে না...। একদিন এমন এক সংঘর্ষের সময় পরী তাদের মাঝখানে পড়ে যায়। ব্যস, সব জ্বীনেরা মিলে পরীর ডানাটাই কেটে দিলো, কি আশ্চর্য!

এরপর থেকে পরী দাসীর মতন হয়ে যায়। নির্জীব এবং নিষ্ক্রিয়, উড়তেও পারে না। সেই ইচ্ছায় গুড়ো বালি। তার উপর এতিম।

তো এই ডানাকাটা পরী কোনভাবে জ্বীনেদের রাজ্য থেকে পালিয়ে মানব সমাজে আসে। যেখানে ইট পাথরে গড়া আবেগহীন শহর আছে। এই শহরে শুধু টাকা উড়ে, শুধু শরীরটা পরী শুধু তোমার।

মজার ব্যাপার হলো, উক্ত শহরে একটি অদ্ভূত সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আছে। একসময় নাকি এই ইন্ডাস্ট্রির স্বর্ণযুগ ছিলো।

সময়ের ব্যবধানে কিছু গুণী মানুষ মাটির তলে মিশে গেছেন, আর কিছু ইতর জাতীয় প্রাণী এই ইন্ডাস্ট্রি দখলে নিয়েছে।

তো ডানাকাটা পরী জানতে পারে, এই শহরে কোথাও যদি তুমি কিছু না করতে পারো বা তোমাকে দিয়ে যদি কিছুই না হয় তাহলে শরীরটা বিক্রি করে উক্ত ইন্ডাস্ট্রির নায়িকা হতে পারবে।

ছদ্মবেশি এই ডানাকাটা পরী একসময় মানুষদের সাথে মিশে যায়। আর তাদেরই দেয়া কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন সিনেমায় অভিনয় করে, পাঁচ তারকা বিশিষ্ট হোটেলে বিশিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের সাথে আড্ডা দেন, নাইট ক্লাবেও যান।

রুহ্ আফজার সাধ ভুলে পরী তখন মদ খেতেও শুরু করে। মদ আর রুহ্ আফজা যে এক নয় তা পরীর বুঝে আসে না। টালমাটাল হয়ে বেপরোয়া জীবনই শ্রেয় মনে করতে শুরু করে।

কিন্তু পরীর জানা ছিলো না, জ্বীনের চাইতেও শক্তিশালী শয়তান হচ্ছে মানুষ।

তাই একদিন এক নাইট ক্লাবে হেনস্তা হয়েও বুঝতে পারে না, তাকে হেনস্তা করা হয়েছে না কি সে অন্যকে হেনস্তা করেছে!

প্রদীপের নিচে যেমন অল্প একটু অন্ধকার থাকে ঠিক তেমনি এই শহরে অনেক খারাপ মানুষের ভীড়ে কিছু ভালো মানুষও থাকে।

কিন্তু এই ডানাকাটা পরীর কখন যে টাকার নেশা পেয়ে বসেছে তা সে নিজেই বুঝতে পারেনি।

বিলাসবহুল জীবন আর সুযোগ পেলেই সে উড়োজাহাজে উড়াল দিতো। দিনশেষে, সে তো একজন পরী বলে কথা।

কিন্তু এত কম সময়ে এত সম্পদের মালিকানা উক্ত শহরের মানুষদের সহ্য হলো না। তার বিলাসবহুল জীবন তাদের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়ালো। না পারে তারা সইতে, না পারে তারা কিছু বলতে।

তাই কে বা কারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলে। সে রাজ্যের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া "মুখবই" এদের অত্যাচারে বিভিন্ন পোস্টে ভরপুর হয়ে ওঠে।

একসময় উক্ত রাজ্যের প্রশাসন জানতে পারে, এই নায়িকা তো মানুষ নয়, এ তো আস্ত ডানাকাটা পরী। তাই তাকে তারা উদ্ধার করার জন্য উঠেপড়ে লাগে।

এবং মানব জাতির সভ্যতার সাথে কি রণনীতি খাটাচ্ছে পরীরা সেটার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ ও রিমান্ডেও নেওয়া হয়।

বারবার পরীর জবানবন্দিতে সভ্য ফেরেশতা সমান মানবজাতি আজ সংকটে। একের পর এক তাদের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়িক সবাই পরীর প্রেমের জাদুতে আচ্ছন্ন। কি এক মোহাবিষ্ট জাদু!

সভ্য ঐ জাতি এবার শুরু করলো হায়! হায়! ইজ্জতভ্রষ্ট এই জাতি আবার যাবে কোথায়? মিন্নি-তিন্নির জন্য তো সর্বোচ্চ একজন একেবারে ওপারেই যেত, মানে এপারে টেকা দায় হয়ে যায়। এখন এ তো দেখি আস্ত পরী, তাই তালিকা করা সম্ভব নয়।

গল্প শেষে পাশ থেকে আমার বন্ধু বললো, শুধু হোমার চর্চা করলেই চলবে? একটু জ্বীন-পরী নিয়েও গবেষণা কর!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:০৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×